কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কটের দাবি তুলে চিঠি দিয়েছিল বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের একাংশ। গত সপ্তাহেই প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবকে চিঠি দেন বারের সদস্যরা। এবার সেই চিঠিতে সই জালের অভিযোগ তুললেন দুই আইনজীবী। তাঁদের দাবি, চিঠিটিতে তাঁরা সই করেননি। কিন্তু দেখা গিয়েছে তাতে তাঁদের নাম রয়েছে। কীভাবে এটা হল, তা নিয়ে সোমবার প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ভাই উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন উদয়শঙ্কর। অন্যদিকে এদিন সকাল থেকেই বিচারপতি মান্থার এজলাসের সামনে ভিড় করে এজলাস বয়কট শুরু করেন আইনজীবিদের একাংশ। মামলায় অংশ নিতে ইচ্ছুক আইনজীবিদের এজলাসে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতিরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। আদালত সূত্রে খবর, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘কোনও বিচারপতির ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখানো আদালতের ঐতিহ্য হতে পারেনা’।
সই নকলের অভিযোগকারী আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “হাইকোর্টের মতো একটা প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে এটা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। এটা তো চিটিং। শুধু আমার বা আমার দাদার নয়, আমাদের কয়েকজন জুনিয়রও চিঠি দিতে চলেছে এই নিয়ে। এই ধরনের ঘটনা হাইকোর্টে কেন কোনও প্রতিষ্ঠানেই ঘটতে পারে না। এই ধরনের ঘটনা কখনওই ঘটা কাম্য নয়।” অন্যদিকে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক, বিড়ম্বনারও। আইনজীবীর সই জালের অভিযোগ যদি আইনজীবিদের বিরুদ্ধেই ওঠে, তাহলে সাধারণ মানুষের ধারণা কী হবে? আইনজীবী উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এই অভিযোগ বিচারপতি লিখিত দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এদিন সকালে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে আইনজীবীদের একাংশ ঢুকতে গেলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। তাতে সমস্যায় পড়েন মামলাকারীরাও। প্রবেশে বাধা পাওয়া আইনজীবীরা এদিন প্রশ্ন তোলেন, কোনও রেজোলিউশন যখন হয়নি, তা হলে আটকে দেওয়ার কারণ কী? এ নিয়ে ধাক্কাধাক্কিও হয় বলে অভিযোগ। এরপরই অ্যাসিসট্যান্ট সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের মতো বর্ষীয়ান আইনজীবীরা বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষন করেন। আদৌ যাঁরা এই বাধাদান করছেন, তাঁরা হাইকোর্টের বারের সদস্য কি না তাও দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়। ভিডিয়োগ্রাফি করার আবেদনও করা হয়।