কলকাতা: উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি তৈরি করে অর্ডিন্যান্স এনেছিল সরকার। সেই অর্ডিন্যান্স নিয়ে রাজ্যের বক্তব্য জানতে চাইল হাইকোর্ট। রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত অর্ডিন্যান্সের বিষয়ে রাজ্যকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দিল আদালত। একইসঙ্গে আদালতের নির্দেশ, সার্চ কমিটি নিয়ে রাজ্য সরকার যদি কোনও পদক্ষেপ করে, মামলাকারী সঙ্গে সঙ্গে তা আদালতকে জানাবে। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি অজয় গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে সোমবার।
এদিন আদালতে মামলাকারীর আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত বলেন, ‘রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগে স্বজনপোষণের কোনও জায়গা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে হয়। নিয়োগ সংক্রান্ত সার্চ (সিলেকশন) কমিটির সদস্যপদে রাজ্যের প্রতিনিধি বেশি রাখা হয়েছে। তিনজন প্রতিনিধি রাখা হয়েছে বেআইনিভাবে।’ সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্টের একাধিক নির্দেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনওরকম স্বজনপোষণ যাতে না হয়, সেই কারণে রাজ্যের হস্তক্ষেপ মানা হয়নি।
এরপরই প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম মামলাকারীকে প্রশ্ন করেন, ইউজিসি রেগুলেশনে প্যানেলে কতজন থাকবে বলা আছে। কারা থাকবে তা নিয়ে তী ব্যাখ্যা আছে? রাজ্যকে প্রশ্ন করেন তিনি, কোনও শিক্ষাবিদ নেই কেন? এরপরই রাজ্য জানায়, পাঁচজনই শিক্ষাবিদ। ইউজিসির আইন অনুযায়ী সব করা হয়েছে। কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও সার্চ কমিটি তৈরি হয়নি।
আদালতের বক্তব্য, যতদূর জানি মুখ্যমন্ত্রীর মনোনিত কেউ কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকেন না। রাজ্যের তরফে পাল্টা জানানো হয়, মূল ভাবনা একটাই, তিনি যিনিই হোন না কেন, শিক্ষাবিদ হবেন। যদিও মামলাকারীর আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্তের বক্তব্য, নতুন আইনে ৫ জন সদস্যের মধ্যে ৩ জন রাজ্যের নমিনি। বাকি দু’জনের ১ জন চ্যান্সেলর ও অন্যজন ইউজিসির নমিনি। কীভাবে রাজ্যের তিনজন প্রতিনিধি রয়েছেন? অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের সার্চ কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিকে। তাঁর জায়গায় স্থান পান মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি।
এই মর্মে অধ্যাদেশ জারি করে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য হিসাবে নিয়োগের বিলে রাজ্যপালের সই না করার সম্ভাবনা দেখেই এই পরিবর্তন বলে মনে করছেন মামলাকারীরা। এরপরই হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা। প্রসঙ্গত, সার্চ কমিটিতে রয়েছেন আচার্য, মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি, ইউজিসির প্রতিনিধি, উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রতিনিধি ও উচ্চ শিক্ষা সংসদের প্রতিনিধি।