কলকাতা: জলমগ্ন রাজ্যের একাধিক জেলার বিস্তীর্ণ অংশ। বন্যায় বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ। কোথাও কোমর সমান জল। কোথাও ভেসে গিয়েছে রাস্তা। বন্যা বিপর্যস্ত পূর্ব মেদিনীপুরে পাঁশকুড়ায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এটা ম্যান মেড বন্যা। ডিভিসি-কে দুষেছিলেন। এবার এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ডিভিসি অপরিকল্পিতভাবে একতরফা জল ছেড়েছে বলে অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীকে চার পাতার চিঠি পাঠিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। চিঠির প্রথমেই মমতা উল্লেখ করেছেন, ডিভিসি নিয়ে ২০২১ সালে ২ বার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। ২০২১ সালের ৪ অগস্ট এবং ওই বছরেরই ৫ অক্টোবর। তারপর রাজ্যের বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির উল্লেখ করে তিনি লেখেন, “মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধ থেকে ডিভিসি অপরিকল্পিত এবং একতরফাভাবে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে। তার ফলে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলি বন্যার কবলে পড়েছে। বন্যার জেরে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, বাঁকুড়া, হুগলি এবং হাওড়ার সাধারণ মানুষ বিপর্যস্ত। অতীতে কখনও ডিভিসি এত জল ছাড়েনি। এই বন্যার ফলে ৫০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। মানুষের জীবন ও সম্পত্তি বাঁচাতে রাজ্য সরকার তার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।”
তিনি নিজে বন্যা বিপর্যস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বলে চিঠিতে জানিয়েছেন মমতা। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করে অপরিকল্পিতভাবে ডিভিসি জল ছেড়েছে জানিয়ে চিঠিতে এই পরিস্থিতিকে ম্যান মেড বন্যা বলেন মমতা।
প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানেরও উল্লেখ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লেখেন, “কেন্দ্রের কাছে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান ইস্যু আমরা অনেকবার তুলেছি। নথিও জমা দেওয়া হয়েছে। তারপরও কেন্দ্রের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।” সাম্প্রতিক অতীতে ঘাটালে এমন বন্যা হয়নি বলে উল্লেখ করেন মমতা।
ডিভিসি এরকম একতরফা মনোভাব নিয়ে চললে, তাদের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক ছিন্ন করা ছাড়া আর কোনও পথ খোলা থাকবে না বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বছরের পর পর রাজ্যের মানুষের সঙ্গে এই অন্যায় মেনে নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানান। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রের কাছে আর্থিক সাহায্যেরও আবেদন জানান তিনি। যদিও কেন্দ্রের জল শক্তি মন্ত্রক ইতিমধ্যে জানিয়েছে, রাজ্যকে জানিয়েই জল ছেড়েছে ডিভিসি।