কলকাতা : স্কুল পড়ুয়াদের সুবিধার জন্য এবার নতুন উদ্যোগ রাজ্য সরকারের। চালু হয়েছে বাংলার শিক্ষা দূরভাষে প্রকল্প। এখন আর কেবল অনলাইন ক্লাস নয়, ফোন করেই মিলবে শিক্ষকদের ‘গাইডেন্স’। আপাতত ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়াদের এই সুবিধা দিচ্ছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের শিক্ষা দফতর এবং মধ্য শিক্ষা পর্ষদের যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। ফোনের ওপারে থাকবেন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলির শিক্ষক। পড়ুয়াদের এই সুবিধার জন্য কোনওরকম ইন্টারনেট লাগবে না। যে কোনও একটি মোবাইল থেকে অথবা ল্যান্ডফোন থেকে ফোন করেই শিক্ষকদের থেকে যে কোনও বিষয়ে সমস্যার সমাধান করা যাবে। এর জন্য একটি টোল ফ্রি নম্বরও চালু করেছে রাজ্য সরকার। ১৮০০১২৩২৮২৩ – এই নম্বরে ফোন করলেই মিলবে গাইডেন্স। এর জন্য দুটি পৃথক সময়ও তৈরি করে দিয়েছে রাজ্য সরকারষ ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা এই টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করতে পারবে সকাল সাড়ে ১০ টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। আবার দুপুর দেড়টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪ টে পর্যন্ত ওই একই নম্বরে ফোন করে নিজেদের পড়াশোনার কোথায় কোনও সমস্যা হলে, তা ‘ক্লিয়ার’ করতে পারবে পড়ুয়ারা।
ওমিক্রনের ধাক্কায় রাজ্যে ফের একবার লাগামছাড়া হয়েছে সংক্রমণ। আর তার কোপ গিয়ে পড়েছে স্কুলগুলিতে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সবে খুলেছিল স্কুল। পড়ুয়াদের স্কুলে যাওয়ার অভ্যেসটা আবার ফিরতে শুরু করেছিল। আর তখনই ফের ধাক্কা। করোনার বাড়বাড়ন্তে বন্ধ হয়ে যায় স্কুল। ফের পড়ুয়াদের ভরসা অনলাইন ক্লাস। কিন্তু তাতে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছিল পড়ুয়াদের। অনেকের বাড়িতে স্মার্ট ফোন নেই, অনেকের বাড়ি আবার প্রত্যন্ত গ্রামে, সেখানে নেটওয়ার্ক ঠিকমতো আসে না। এমনই একগুচ্ছ সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছিল পড়ুয়াদের। সেই সমস্যার সমাধানেই এবার রাজ্য সরকারের তরফে পড়ুয়াদের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে বাংলার শিক্ষা দূরভাষে প্রকল্প।
মহামারী পরিস্থিতির পর, ২০২০ সালে যখন লকডাউন ঘোষণা করা হয়, তখন থেকেই প্রায় বন্ধ রয়েছে স্কুল। মাঝে দুয়েক বার খুললেও তা বেশি দিনের জন্য স্থায়ী হয়নি। করোনা বাড়বাড়ন্তের জেরে আবারও বন্ধ করে দিতে হয়েছে স্কুল। বার বার এই বিঘ্ন ঘটায় একটি বড় অংশের পড়ুয়া সমস্যায় পড়েছেন। আর এই মহামারী পরিস্থিতিতে শিক্ষা ক্ষেত্রে বার বার ঘুরে ফিরে এসেছে ‘ডিজিটাল ডিভাইড’ বা ডিজিটাল বৈষম্য প্রসঙ্গটি। অর্থাৎ, একটি অংশের পড়ুয়া, যাঁরা স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে অনলাইনে ক্লাস করতে পারছেন। করোনা পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাস নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু এর পাশাপাশি আরও একটি বড় অংশের পড়ুয়া রয়ে গিয়েছে, যাদের হাতে স্মার্টফোন নেই, বা থাকলেও নেটওয়ার্ক ভাল নয়। তাদের সমস্যা দূর করতে বাংলার শিক্ষা দূরভাষে প্রকল্প এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে চলছে বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদদের একাংশ।
আরও পড়ুন : Aparna Sen: অপর্ণার বিরুদ্ধে ‘দেশদ্রোহিতা’র অভিযোগে উল্টোডাঙা থানায় বিজেপি