কলকাতা : প্রায় দুই বছর হতে চলল বন্ধ রয়েছে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। মাঝে কয়েকবার খোলা হলেও, তা বেশিদিনর জন্য সম্ভব হয়নি। কিছু সময়ের জন্য, আংশিকভাবে স্কুল খোলার কয়েকদিনের মধ্যেই তা ফের বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিল সরকার। এই পরিস্থিতিতে, দীর্ঘদিন পড়ুয়ারা ঘরে বসে থাকার কারণে অভিভাবকদের মধ্যেও দুশ্চিন্তা বাড়ছে। কারণ, অনলাইন পঠনপাঠন প্রক্রিয়া চালু থাকলেও, পড়াশোনার স্বাভাবিক ছন্দটার যেন তাল কোথাও একটা কেটে যাচ্ছে বলে মনে করছেন অভিভাবক অভিভাবিকাদের একটি বড় অংশ। বিভিন্ন জায়গায় অভিভাবকরা প্রতিবাদে রাস্তায় নামছেন। সোমবার দুপুরে স্কুল খোলার দাবিতে বিকাশ ভবনের (Bikash Bhavan) সামনে বিক্ষোভও দেখান এসএফআই কর্মীরা। এই সবের মধ্যেই স্কুল খোলার বিষয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (West Bengal Education Minister Bratya Basu)। বললেন, “রাজ্য সরকার স্কুল খোলার পক্ষে।”
সোমবার পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্পের ঘোষণা করার সময় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, রাজ্য সরকারও স্কুল খোলার পক্ষে। তবে সব দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে চায় রাজ্য সরকার। যাতে স্কুল খোলার কয়েকদিন পরেই আবার বন্ধ করে দিতে হল, এমন কোনও পরিস্থিতি তৈরি না হয়। করোনা পরিস্থিতি দেখে স্কুল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা বিষয়টির উপর নজর রাখছেন। কবে স্কুল খোলা হবে, সেই কথা মুখ্যমন্ত্রী জানাবেন। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, “সব স্কুলই ধাপে ধাপে খুলতে চাই।” তবে ঠিক কবে থেকে স্কুল খোলার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার, সেই বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু জানাননি শিক্ষামন্ত্রী।
এদিকে রাজ্য সরকারের এই চিন্তাকে স্বাগত জানিয়েছেন বাংলার শিক্ষাবিদদের একটি বড় অংশ। ব্রাত্য বসু স্কুল খোলার বিষয়ে রাজ্যের ভাবনার কথা জানানোর পর, শিক্ষাবিদ দেবাশিস সরকার তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, “স্কুল, কলেজগুলি প্রায় ২২ মাস ধরে বন্ধ। ফলে স্কুল খোলার যে দাবি উঠছে, তা খুব স্বাভাবিক দাবি। সরকারও কোভিড সংক্রমণের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে নিশ্চয়ই ইতিবাচক সিদ্ধান্তই নেবেন এবং ধাপে ধাপে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি খোলার দিকে যাবে। এটাই প্রত্যাশা রাখি।”
উল্লেখ্য, ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্য সরকার পাড়ায় শিক্ষালয় কর্মসূচি শুরু করছে। এই পাড়ায় শিক্ষালয় কথাটির নামকরণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত শিশুদের সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি, পড়া ও লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন কর্মসূচি যেমন নাচ, গান, আবৃত্তির উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। আপাতত রাজ্যের ৫০ হাজার ১৫৯ টি প্রাথমিক স্কুলে এবং ১৫ হাজারের বেশি শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে এই প্রকল্প চালু হচ্ছে। মোট ২ লাখেরও বেশি শিক্ষক থাকছেন এই ব্যবস্থায়। এর মাধ্যমে ৬০ লাখেরও বেশি পড়ুয়া উপকৃত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
আরও পড়ুন : Netaji Tableau: রেড রোডের কুচকাওয়াজের প্রস্তুতি, সেজে উঠছে ৫২ ফুট লম্বা নেতাজির ট্যাবলো