DVC: জল ছাড়া নিয়ে বার বার রাজ্যের তোপ! কোন প্রক্রিয়ায় জল ছাড়া হয়, বিজ্ঞাপন দিয়ে জানাল ডিভিসি
Flood Situation in Bengal: বর্ষা, নিম্নচাপ, ঘূর্ণাবর্তের ত্রিফলায় ডুবু ডুবু বাংলা। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা প্লাবিত। রাজ্য বলেছে এ দায় ডিভিসির।
কলকাতা: বর্ষা, নিম্নচাপ, ঘূর্ণাবর্তের ত্রিফলায় ডুবু ডুবু বাংলা। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা প্লাবিত। রীতিমতো বন্যা পরিস্থিতি। শ’য়ে শ’য়ে মানুষ ঘরছাড়া। খাওয়া নেই, মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও ভেসে গিয়েছে প্লাবনের জলে। রাজ্য বলছে, ইচ্ছামতো জল ছেড়েছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন বা ডিভিসি (DVC)। সে কারণেই ভাসছে বাংলা। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে প্রকাশ্যে বার বার সরব হয়েছেন। অবশেষে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপণ নিয়ে ডিভিসি জানাল, এ প্লাবনে তাদের কোনও দায় নেই। রীতিমতো এর সপক্ষে যুক্তিও দিয়েছে তারা।
বিজ্ঞাপণে কী দাবি করেছে ডিভিসি?
বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য ডিভিসির বাঁধ থেকে যে জল ছাড়া হয় তার তত্ত্বাবধানে একটি কমিটি রয়েছে। নাম ‘দামোদর ভ্যালি রিজার্ভার রেগুলেশন কমিটি (DVRRC)’। এই পরামর্শদাতা কমিটির নেতৃত্বে রয়েছে মেম্বার (আর অ্যান্ড এম), সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন নিউ দিল্লি। ডিভিআরআরসি গঠিত হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার, ঝাড়খন্ড সরকার ও ডিভিসির চিফ ইঞ্জিনিয়ার সমতুল পদাধিকারীদের নিয়ে। জল ছাড়ার ক্ষেত্রে ডিভিসি একমাত্র ডিভিআরআরসি-এর পরামর্শ ও নির্দেশ পালন করে। তবে জল ছাড়বার পরিমাণ কত হবে তাতে ডিভিআরআরসির ভূমিকা থাকে না। জল ছাড়ার নির্দেশ বাঁধের জল ধারণ ক্ষমতার উপর নির্ভর করে।
জল ছাড়ার আগে কাদের কাছে বার্তা যায়…
ডিভিসির ওই বিজ্ঞাপণে বলা হয়েছে, ‘জল ছাড়ার আগে বন্যা সম্পর্কিত সতর্কতকা মূলক বার্তা অনেক আগে থেকেই চিফ ইঞ্জিনিয়ার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার জেলাশাসকদের ও সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার, এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, দুর্গাপুর ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে পাঠানো হয়। এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, দুর্গাপুর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার পুনরায় এই বার্তা হুগলি, হাওড়ার জেলাশাসকদের, এসডিও, এডিএম, বিডিও ও অন্যান্যদের ফ্লাড ওয়ার্নিং মেমোরেন্ডাম অনুযায়ী পাঠিয়ে দেয়। বন্যা সম্পর্কিত এই প্রচলিত পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।’
যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার দাবি করেছেন, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলেই ডিভিসি জল ছেড়ে দেয়। সম্প্রতি তিনি অভিযোগ তোলেন, “ঝাড়খণ্ডে যেহেতু অনেক বৃষ্টি হয়েছে ওরা আমাদের না বলে রাত ৩টের সময় আসানসোলে জল ছেড়ে দিয়েছে। এদিকে আসানসোলের বৃষ্টির পরিমাণটাও প্রায় ৩৪৫ মিলিমিটার ছিল। আগে কখনও এত বৃষ্টি হয়নি। ফলে আসানসোল পুরো ডুবে যায়। একই সঙ্গে বাঁকুড়া, পুরুলিয়াও। তার পর কাল আবার ডিভিসি ১ লক্ষ কিউসেকের উপর জল ছেড়ে দিয়েছে। সমস্যা হচ্ছে, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলে আমাদের ফেস করতে হচ্ছে, বিহারে বৃষ্টি হলে আমাদের ফেস করতে হচ্ছে।”
যদিও এদিন ডিভিসি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানাল, তাদের জল ছাড়ার ক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি ছিল না। ফলে রাজ্যের তরফে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। তবে ডিভিসির এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার করে বলে আসছেন এটা ম্যান মেড বন্যা। ডিভিসি কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই এই জল ছেড়েছে। এখন ডিভিসি যে বিবৃতি দিচ্ছে তা নিজের মতো করে বলছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে ওরা কোনও আলোচনাই করে না।”
আরও পড়ুন: Water Conservation: মাপা জলের বাইরে খরচ করলেই জরিমানা! পরিমাণ মেপে দিচ্ছে NKDA