কলকাতা: কলকাতা পৌরনিগমের নির্বাচনের জন্য যে বাস পাওয়া যাবে কি না, কিংবা পাওয়া গেলেও কতগুলি পাওয়া যাবে… তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। আগামী ৬ ডিসেম্বর দুপুর ১ টার সময় কলকাতার তিনটি বাস মালিক সংগঠন এবং একটি স্কুল বাস মালিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসবে রাজ্য সরকার।
যে চারটি বাস মালিক সংগঠনকে বৈঠক ডাকা হয়েছে, কয়েকদিন আগেই এই চারটি সংগঠন নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, বকেয়া বিল এবং বেশ কিছু দাবি দাওয়া পূরণ না হলে আসন্ন কলকাতা পৌর নির্বাচনে বাস দেবেন না তাঁরা।
কিছুদিন আগে এই চারটি বাস মালিক সংগঠন যখন আলোচনায় বসেছিল, তখন স্থির হয়েছিল – আসন্ন পৌর ভোটে তাদের পক্ষে বাস দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এর আগে বিধানসভা ভোটের সময় তাদের থেকে ৩৭৩ টি বাস নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত মোট প্রাপ্য টাকার ৮০ শতাংশ টাকাই পেয়েছেন তাঁরা। বাকি ২০ শতাংশ টাকা এখনও বকেয়া। আর সেই না পাওয়া অর্থের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা।
এই পরিস্থিতিতে আবারও তাঁদের থেকে আসন্ন পুরসভা ভোটে ৬০০ টি বাস চাওয়া হয়েছে কমিশনের তরফ থেকে। কিন্তু বাস মালিকদের বক্তব্য, তাঁরা যদি আগের বকেয়া টাকা না পান, তাহলে তারা এই ভোটে বাস দিতে পারবেন না। এই নিয়েই তাঁরা আজ আরটিও সঙ্গে আলিপুর আরটিও অফিসের একটি বৈঠক করেন। স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন, তাঁদের বকেয়া টাকা না পেলে তাঁরা এই ভোটে বাস দেবেন না।
উল্লেখ্য, প্রত্যেকবারই ভোটের সময় দিন কয়েকের জন্য বাসের দরকার হয় নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশনই বাস ভাড়ায় নেয়। এই ভাড়া নেওয়া বাসগুলিতে চেপেই বুথে বুথে পৌঁছে যান ভোটকর্মীরা। শুধু ভোটকর্মীরাই নন, অনেক ক্ষেত্রে নিরাপত্তারক্ষীদেরও বাসে বাসে চাপিয়েই নির্দিষ্ট বুথেগুলিতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এর পাশাপাশি, ভোটের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, যাবতীয় সরঞ্জাম… সে সবও রয়েছে। সবই বাসে করেই বুথে বুথে পৌঁছে দেয় কমিশন।
কিন্তু এবারে বেঁকে বসেছেন বাস মালিকরা। রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পর্ব মিটে যাওয়ার পরেও অনেকগুলি মাস কেটে গিয়েছে। অথচ ‘হকের’ টাকা এখনও পাননি বাস মালিকরা। বিধানসভা ভোটের সময় প্রচুর সংখ্যায় বাস রুট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও প্রাপ্য টাকার ২০ শতাংশ বকেয়া রয়ে গিয়েছে।
এদিকে জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা কমলেও, সেই যন্ত্রণা থেকে এখনও মুক্তি পাননি আমজনতা। এদিকে বাসের ভাড়াও বাড়ানোয় সায় দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। এই পরিস্থিতিতে রাস্তায় বাস নামাতে গিয়েই হিমশিম খাচ্ছেন বাস মালিকরা। তার উপর আগের ভোটের টাকা বাকি। এই পরিস্থিতিতে তাঁদের সাফ কথা, আগের নির্বাচনের সময় ভাড়া নেওয়া বাসের বকেয়া টাকা হাতে না পেলে, নতুন করে আর বাস দেবেন তা তাঁরা।