কলকাতা: করোনা-আতঙ্ক কাটতে না কাটতে নয়া ভাইরাসের উপদ্রপ। ইতিমধ্যে দক্ষিণবঙ্গে ভয়াবহ আকার নিয়েছে অ্যাডিনো ভাইরাস। শিশুরাই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে এই ভাইরাসে। অ্যাডিনো ভাইরাসের প্রকোপে ইতিমধ্যে কলকাতায় গত কয়েকদিনে অনেকগুলি শিশুর প্রাণ গিয়েছে। তাই এবার অ্যাডিনো ভাইরাস মোকাবিলায় আরও এক নতুন নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্য দফতর।
কী ভাবে অ্যাডিনো ভাইরাস প্রতিরোধ করা যাবে?
অ্যাডিনো ভাইরাস মোকাবিলায় বড়দের বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জারি করা এদিনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,
১)বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোবেন এবং শিশুদেরও এটা অভ্যাস করান।
২)বাইরে থেকে এসে জামা-কাপড় বদল করে এবং হাত ধুয়ে তবে শিশুদের কাছে যাবেন।
৩) ভিড় থেকে শিশুদের দূরে রাখাই ভাল। ভিড়বহুল স্থানে যেতে হলে মাস্ক ব্যবহার করবেন।
৪)কাশি বা হাঁচির সময় রুমাল অথবা নিজের কনুই দিয়ে মুখ ঢাকা দিন। যেখানে সেখানে কফ বা থুতু ফেলবেন না।
৫) যে সব শিশুদের কোনও গুরুতর জন্মগত অসুখ বা অপুষ্টিজনিত সমস্যা রয়েছে, তাদের বিশেষ সাবধানে রাখতে হবে।
অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কী করণীয়?
করোনার মতোই অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রামক। তাই কেউ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বিশেষ কয়েকটি নিয়ম মেনে চলা জরুরি। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জারি করা নির্দেশকায় বলা হয়েছে, ১) অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বা এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে শিশুদের স্কুলে পাঠাবেন না।
২) বড়দের কারও যদি সংক্রমণ হয় তিনি শিশু, অতিবৃদ্ধ এবং গর্ভবতী মহিলার থেকে দূরে থাকবেন।
৩) প্রতিদিন হালকা গরম নুন-জলে গার্গল করুন। ছোট বাচ্চাদের হালকা গরম জল বা অন্য যে কোনও গরম পানীয় বারে বারে খেতে দিন।
৪) বাসক, আদা, তুলসি, লবঙ্গ কাশি কমায় এবং কফ পাতলা হতে সাহায্য করে। তাই এই সময় কাশি হলে এগুলি খাওয়া যেতে পারে।
৫)চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক বা কাফ সিরাপ দেবেন না।
অ্যাডিনো ভাইরাস মোকাবিলায় ইতিমধ্যে জেলার প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল সহ মহকুমা হাসপাতালগুলিতেও বিশেষ বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিশুদের মধ্যে অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বিশেষ হেল্পলাইন খোলা হয়েছে। হেল্পলাইন নম্বরটি হল ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২। ২৪ ঘণ্টার জন্য এই হেল্পলাইন খোলা থাকবে এবং অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রান্ত যে কোনও প্রয়োজনে এই নম্বরে ফোন করে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া যাবে।