ঢালাও পাশ উচ্চ মাধ্যমিকে! কিন্তু এর পর… ভর্তি নিয়ে কতটা সঙ্কট হতে পারে, কী বলছেন শিক্ষাবিদরা

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়নী জোয়ারদার

Jul 22, 2021 | 11:56 PM

Higher Secondary: বিপুল নম্বর পেয়ে সমস্ত ছাত্র ছাত্রীই নামজাদা কলেজের লাইনে দাঁড়াবে। ফলে চাপ বাড়বে কলেজগুলির উপর।

ঢালাও পাশ উচ্চ মাধ্যমিকে! কিন্তু এর পর... ভর্তি নিয়ে কতটা সঙ্কট হতে পারে, কী বলছেন শিক্ষাবিদরা
ফাইল চিত্র।

Follow Us

কলকাতা: লক্ষ্মীবারে ফল প্রকাশ হল উচ্চ মাধ্যমিকের। পাশের হার ৯৭.৬৯ শতাংশ। পাশের শতাংশে ছেলে মেয়ে প্রায় সমান। এ বছর পরীক্ষা না হওয়ায় মেধা তালিকা প্রকাশ হয়নি। তবে পাশ করানো হয়েছে ঢালাও। পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়া নিঃসন্দেহে অত্যন্ত আনন্দের। কিন্তু এই হারে পাশে আশঙ্কার মেঘ দেখছেন শিক্ষাবিদরা। তাঁদের মতে, এর পর ছেলে মেয়েরা যখন কলেজে ভর্তি হতে যাবে সেখানেই বাধবে গোল। শুধু আসন নিয়েই নয়, সমস্যা হতে পারে পছন্দের কলেজ কিংবা বিষয় বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও।

এ বিষয়ে শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকারের মত, “ভর্তি হতে পারবে কি না পছন্দসই বিষয়ে তা নিয়ে একটা আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। আসন সংখ্যা এতো থাকবে তো? বলা হচ্ছে, সিট বাড়িয়ে দেওয়ার কথা। সেটা ভাষণে বলা যতটা সহজ, আসলে ততটা নয়। এটা তো রাতারাতি করা সম্ভব নয়। আসন বাড়ানো মানে শ্রেণিকক্ষ বাড়াতে হবে, শিক্ষক বাড়াতে হবে। গত ১০ বছরে আমরা তো দেখেছি শিক্ষকের হাহাকার। কোনও রকমে কাজ চলছে। কী ভাবে আসন বাড়ানো হবে, কী ভাবে শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে কেউ জানে না।”

বিপুল নম্বর পেয়ে সমস্ত ছাত্র ছাত্রীই নামজাদা কলেজের লাইনে দাঁড়াবে। ফলে চাপ বাড়বে কলেজগুলির উপর। ওয়েবকুটার সাধারণ সম্পাদক কেশব ভট্টাচার্য বলেন, “একটা কলেজে একটা বিভাগে একটা বিষয়ে যদি ৩০টা আসন থাকে, একই নম্বর নিয়ে ৩০০ জন আবেদন করেন, আপনি কাকে নেবেন আর কাকে নেবেন না? এটা কী ভাবে ঠিক করবেন?”

এক ঝলকে দেখা যাক, আমাদের রাজ্যের কলেজে ভর্তির পরিকাঠামো কী বলছে?

রাজ্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজ ১৫০
কলকাতায় থাকা কলেজের সংখ্যা ৭৭
দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কলেজের সংখ্যা ৪৪
হাওড়াতে কলেজ রয়েছে ২১
হুগলি জেলায় কলেজের সংখ্যা ৮
সব মিলিয়ে কলকাতা লাগোয়া এলাকায় কলেজের মোট সংখ্যা ১৫২
আনুমানিক আসন সংখ্যা ২ লক্ষ ৫০ হাজার
কলকাতায় আসন সংখ্যা আনুমানিক ১ লক্ষ
* তথ্যসূত্র- বিশ্ববিদ্যালয় ওয়েবসাইট

অর্থাৎ আসন সংখ্যা যথেষ্টই রয়েছে। তবে, কলকাতা বা জেলা-শহরের প্রথম সারির কলেজে যে সংখ্যক আসন রয়েছে, তাতে বিপুল নম্বর পাওয়া সমস্ত পড়ুয়া সেগুলিকে টার্গেট করলে সমস্যা তৈরি হতে বাধ্য। আরও একটা বড় সমস্যা পড়ুয়ার মেধার সঠিক মূল্যায়ন। গতবছর একাদশ শ্রেণিতে বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, নিউট্রিশন, জিওগ্রাফি, স্ট্যাটটিটিক্সের মতো বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি। যে পড়ুয়া ফিজিক্সে অনার্স নিয়ে পড়তে চান, একাদশ-দ্বাদশে তাঁর ফিজিক্সের মূল্যায়নই হয়নি। মাধ্যমিকের ফিজিক্যাল সায়েন্সে প্রাপ্ত নম্বর নম্বরের ভিত্তিতেই তাঁকে ফিজিক্সের নম্বর দেওয়ার কথা। এইভাবে মূল্যায়ন হলে, মেধার বিচার হবে কী ভাবে? কী করে বোঝা যাবে সেই পড়ুয়া আদৌ ফিজিক্স পড়ার উপযুক্ত কি না?

তাহলে উপায়? শিক্ষামহল বলছে, অঙ্কটা কঠিন হয়ে যাচ্ছে এই জায়গাতেই। আর পরীক্ষার্থীদের চিন্তা আরও বেশি। একে কোভিড। সঙ্গে দোসর মূল্যায়নের সঙ্কট! কী ভাবে মুশকিল আসান সম্ভব? উত্তর হাতড়াচ্ছে দ্বাদশ উত্তীর্ণরা। আরও পড়ুন: HS Result 2021: পাশের হার বাড়লেও সার্বিক মান কমেছে, ‘ও’ গ্রেডে পাশের সংখ্যা গতবারের তুলনায় তিন গুণ কম

Next Article