কলকাতা: বিস্ফোরক দাবি নিয়োগকাণ্ডে ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Santanu Banerjee)। শুক্রবার ইডির হাতে গ্রেফতার হন হুগলির জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তাঁকে বিধাননগর মহকুমা আদালতে মেডিক্য়াল পরীক্ষার পর পেশ করা হয় ব্যাঙ্কশাল আদালতে। আদালতে তোলার আগে সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন। একইসঙ্গে বলেন, “জেলের মধ্যে যারা আছে, তারা ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি নির্দোষ।” এদিন আদালতে শান্তনু দাবি করেন, ‘তাপস মণ্ডলের বয়ানে আমার নাম আসে। এ বছর ২০ জানুয়ারি আমার বাড়িতে তল্লাশি হয়। তল্লাশিতে সহযোগিতা করা হয়েছে। এরপর আমায় ডাকা হল। প্রথমদিন ১২ ঘণ্টা ছিলাম। বিভিন্ন নথি, আইটি ফাইল জমা দিয়েছি। যতবার ডেকেছে, ততবার গিয়ে সাহায্য করেছি।’ যদিও এদিন আদালতে উঠে আসে শান্তনুর স্ত্রীর নামে থাকা সম্পত্তির খতিয়ানও। ইডির আইনজীবী তা তুলে ধরেন।
ইডির আইনজীবী বলেন, ‘ওনার স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়। আইটি ফাইল যা দেখিয়েছেন, সেখানে নেই। অথচ ওনাদের ধাবা আছে হুগলিতে। ইভান কন্ট্রাক্ট প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি আছে, শান্তনুর স্ত্রীর নামে তা আছে। আরও বেনামি সম্পত্তি রয়েছে। আরও জমি নিয়েও তদন্ত চলছে। এই ঘটনায় সামাজিক প্রভাব বিরাট। আমাদের বাচ্চারা যাদের কাছে পড়ছে, সেই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে। ১৪ দিনের হেফাজতে চাইছি।’
যদিও আদালতে এদিন শান্তনু বলেন, ‘৩০০ প্রার্থীর তালিকা পাওয়া গিয়েছে বলে ইডি দাবি করেছে। আমি নাকি টাকা নিয়েছি চাকরি দেওয়ার নামে। আমি কীভাবে চাকরি দিলাম? আমি তো তৃণমূলের যুবর প্রাক্তন নেতা ছিলাম। আর বলা হচ্ছে আমি নাকি অসহযোগিতা করেছি। অথচ যতবার ডেকেছে, ততবার গিয়ে সাহায্য করেছি।’ শান্তনুর আইনজীবী এদিন প্রশ্ন করেন, ‘আমরা জানিয়েছিলাম কোথা থেকে টাকা এসেছে। সেই লেনদেন সম্পর্কিত কথা শুনল ইডি। কিন্তু কোনও নথি নিল না। কেন নিল না ইডি? ক্ষমতার অপব্যবহার করছে ইডি। মিথ্যা গল্প সাজাচ্ছে।’
যদিও ইডির আইনজীবী এদিন আদালতে বলেন, ‘গ্রেফতারির পর ওনার স্ত্রীকে জানানো হয়েছিল, উনি আসেননি। আমারদের কিছু করার নেই গ্রেফতার করতে হয়েছে। মানিক ভট্টাচার্যের সময় যা হয়েছিল তেমনটাই শান্তনুকে গ্রেফতারের সময়ও হয়েছিল। নিজের বয়ান নিজের হাতে লিখেছেন। উনি একজন রাজনৈতিক নেতা হতেই পারেন। সাধারণ যোগ্যরা চাকরি পাননি। বিভিন্ন সরকারি অফিসে যোগাযোগ করা হয়েছিল শান্তনুর বাড়ি থেকে পাওয়া ডকুমেন্ট পাওয়ার পর। তথ্য প্রমান পাওয়ার পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুধু প্রাইমারি নিয়ে এই দুর্নীতি ছিল। কিন্তু পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাটাই দুর্নীতিগ্রস্ত।’ ইডির দাবি, শান্তনুর কথাতেই তাপস মণ্ডল ১৯ কোটি টাকা দিয়েছিল কুন্তলকে। ১৩ মার্চ পর্যন্ত ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শান্তনুকে। সেদিন ইডি বিশেষ আদালতে পেশ করা হবে তাঁকে।