Didir Doot: শতাব্দী, কুণাল থেকে দেবাংশু- যে সব অভিযোগের বন্যায় ‘ভেসে গেলেন’ দিদির দূতরা

Didir Doot Complain: তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক, সভাধিপতি, জেলা প্রেসিডেন্ট, জেলা চেয়ারম্যান, দলীয় মুখপাত্ররা গ্রামে গ্রামে যাচ্ছেন দিদির দূত হিসাবে।

Didir Doot: শতাব্দী, কুণাল থেকে দেবাংশু- যে সব অভিযোগের বন্যায় 'ভেসে গেলেন' দিদির দূতরা
দিদির দূত নিয়ে অভিযোগ।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 16, 2023 | 8:00 AM

কলকাতা: ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামে গ্রামে যাচ্ছে ‘দিদির দূত‘ (Didir Doot)। সাংসদ, বিধায়ক, রাজ্য স্তরের নেতারা গ্রামে গ্রামে যাচ্ছেন। মানুষের সঙ্গে কথা বলে মানুষের নানা সমস্যার কথা শুনছেন। অধিকাংশ জায়গায় গিয়েই বিক্ষোভ কিংবা প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে ‘দিদির দূত’দের। কুণাল ঘোষ, শতাব্দী রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, দেবাংশু ভট্টাচার্য, অসিত মাল, রথীন ঘোষ, বীরবাহা হাঁসদা, আবু তাহের খান, অর্জুন সিং যে যেখানেই গিয়েছেন, কাউকে পড়তে হয়েছে প্রশ্নের মুখে। কেউ আবার বিক্ষোভেরও মুখে পড়েছেন। গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ শুনতে হচ্ছে তাঁদের। কোথাও আবাস যোজনা নিয়ে অভিযোগ, কোথাও পানীয় জল না পাওয়ার কথা, কোথাও আবার শুনতে হচ্ছে বেহাল রাস্তার কথা। শুধু তাই নয়, শনিবার বীরভূম জেলার বোলপুরের সাংসদকে শুনতে হয়েছে, বিধায়ক এলাকায় আসেন না। গাড়ির কাচ তুলে এলাকা দিয়ে বেরিয়ে যান বলেও অভিযোগ তোলেন গ্রামেরই এক বাসিন্দা। কুণাল ঘোষকে দলের অন্দরের কোন্দল নিয়ে বলা হয়েছে। ১১ জানুয়ারি থেকে গ্রামে গ্রামে যাচ্ছে ‘দিদির দূত’। সপ্তাহ ঘুরতে চলল। দেখে নেওয়া যাক কোন নেতাকে কোন অভিযোগের মুখে পড়তে হল।

কুণাল ঘোষ

গত বুধবার ১১ জানুয়ারি থেকে দিদির দূত কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এদিনই পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় গোবিন্দনগর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় গিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। দলের রাজ্য নেতৃত্বকে সামনে পেয়ে এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন পাঁশকুড়া পশ্চিমের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক প্রয়াত ওমর আলির শেখ মুসলেম আলি। কুণালকে শুনতে হয়েছে, “একটু অন্তর্দ্বন্দ্বটা বন্ধ করুন। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বন্ধ করতে হবে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই যত সমস্যা।” দলে পুরনো কর্মীরা গুরুত্ব পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। পুরনোদের দলে এনে তাঁদের প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়ার কথাও কুণালকে বলেন। ধনঞ্জয়পুরে গিয়ে শুনতে হয় রাস্তা সারাইয়ের ব্যবস্থা হোক। ভিড়ের মধ্যে একজন বলে ওঠেন, রাস্তা না মেরামত হলে এবার ভোট নয়।

জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক

১২ জানুয়ারি ‘দিদির দূত’ হিসাবে তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গিয়েছিলেন নদিয়ার ঘেঁটুগাছি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায়। তাঁকে দেখে এলাকার তৃণমূল নেতার একাংশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন গ্রামবাসী। আবাসের তালিকা নিয়েও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন গ্রামবাসীরা। যদিও তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভের বিষয়টি অস্বীকার করেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তবে অভিযোগ যে এসেছিল তা কার্যত মেনে নেন তিনি। তিনি বলেন, ঘেঁটুগাছি গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধানকে কেন্দ্র করেই এই বিক্ষোভ ছিল।

দেবাংশু ভট্টাচার্য

১৩ জানুয়ারি দিদির দূত হিসাবে দেবাংশু ভট্টাচার্য গিয়েছিলেন বীরভূমের দুবরাজপুরের বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের দিহিপাড়া গ্রামে। সেখানে দেবাংশুকে আবাস যোজনা নিয়ে অভিযোগ শুনতে হয়। দেবাংশু গ্রামে ঢুকতেই ছুটে আসেন এলাকার লোকজন। কেউ ভাঙা বাড়ি দেখান, কেউ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন রাস্তার বেহাল দশা। নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন গ্রামবাসী। কেউ বলেন, একটা জলের কল নেই। কেউ বলেন, রাস্তার উপর নর্দমার জল এসে জমে যায়। এক মহিলাকে স্পষ্ট বলতে শোনা যায়, এসে দেখে চলে গেলে হবে না। সমাধান চাই। রীতিমতো সোচ্চার হয়ে ওঠেন গ্রামবাসী। নির্ধারিত কর্মসূচি বাতিল করে গ্রাম ছাড়েন দেবাংশু।

শতাব্দী রায়

১৩ জানুয়ারি বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় গিয়েছিলেন রামপুরহাটে। সেখানে কেউ অভিযোগ করেন বিধবা ভাতা পান না, কেউ বলেন, তাঁদের ঘর নেই। কেউ জল, কেউ রাস্তার সমস্যা তুলে ধরেন। রাশি রাশি অভিযোগে বিরক্ত হয়ে মেজাজ হারান শতাব্দী রায়। সাংসদ বলে বসেন, “তোমরা সামনে বসে একই কথা ১৪ বার বলে যাচ্ছ।” যদিও পরে মেজাজ হারানোর কথা অস্বীকার করে শতাব্দী বলেন, মজা করছিলেন।

অসিত মাল

১৪ জানুয়ারি বোলপুরের সাংসদ অসিত মাল গিয়েছিলেন ময়ূরেশ্বরে। সেখানে গিয়ে এলাকার বিধায়ক অভিজিৎ রায় সম্পর্কে গুচ্ছের অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেউ বলেন, “২০ বছর ধরে দল করছি। সিপিএম ছেড়ে দলে এসেছিলাম। কোনও জিনিস পাই না। একটা কথা বলে না, একটু সম্মান দেয় না।” কাউকে বলতে শোনা যায়, “বিধায়ক তো এলাকায়ই আসেন না। ভোটের আগে চিনতেন। ভোটের পর ফোন করলে ফোনও ধরেন না।” এ ধরনের বক্তব্য বিড়ম্বনা বাড়ায় অসিত মালের।

বীরবাহা হাঁসদা

১৩ জানুয়ারি ঝাড়গ্রামের নলবনা গ্রামে গিয়েছিলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। তাঁকে দেখে গ্রামের মহিলারা খোঁচার সুরে বলেন, “ভোটের সময় এলে ভোটের জন্য বাড়ি আসে নেতারা। তারপর মন্ত্রী হয়ে টাকা গোনায় ব্যস্ত হয়ে যান।” তাঁকে ঘিরে গ্রামের মহিলারা বলেন, এলাকায় পানীয় জল নেই, গ্রামে ঢোকার রাস্তা নেই। যদিও বীরবাহা জানান, এ পঞ্চায়েত বিজেপির। বিজেপি কী করছিল প্রশ্ন তোলেন তিনি।