কলকাতা: সদ্য বঙ্গ সফর সেরে দিল্লি ফিরেছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। ১৪ এপ্রিল বীরভূমের সিউড়িতে জনসভা করেন তিনি। সেখানে অমিত শাহকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “২০২৪-এর লোকসভা ভোটে বাংলায় বিজেপিকে ৩৫-এর বেশি আসন দিন। মোদীকে আবারও প্রধানমন্ত্রী করুন। আর তেমন হলে, আমি আশ্বাস দিচ্ছি ২০২৫ সাল পর্যন্ত যেতে হবে না। ২০২৫ সালের আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ফুস হয়ে যাবে।” স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয় রাজ্য রাজনীতিতে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার নবান্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গণতান্ত্রিকভাবে আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি। এ কথা বলার পর তাঁর এই পদে থাকার কোনও অধিকার নেই।” মমতা এদিন প্রশ্ন করেন, “একটা নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে তিনি ভেঙে দেবেন। কোন আইনে তিনি ভাঙতে পারেন?”
সোমবার নবান্নে বৈঠক ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সাংবাদিকদেরও মুখোমুখি হন তিনি। বলেন, ১৪ এপ্রিল অমিত শাহের বক্তব্য নিয়ে আরও আগেই তাঁর বলা উচিত ছিল। মমতা বলেন, “গত ১৪ এপ্রিল ভারতবর্ষের মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলায় বিজেপির মিটিং করতে এসেছিলেন। সেটা তিনি করতেই পারেন। এটা তাঁর স্বাধীনতা। তাঁর পার্টির মিটিংয়ে তিনি কী বলবেন, সেটাও তাঁর বিষয়। তিনি কখনওই বলতে পারেন না ৩৫টা আসন পাব আর পেলেই আর অপেক্ষা করতে হবে না। বাংলায় সরকার আর থাকবে না। সরকার চলে যাবে।”
মমতা এই বক্তব্যের মধ্যে চক্রান্তের ইঙ্গিত পাচ্ছেন বলেও এদিন বলেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণতন্ত্র রক্ষার পরিবর্তে, ফেডারেল স্ট্রাকচার রক্ষা করার পরিবর্তে বলছেন একটা নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে ভেঙে দেবেন। কোন আইনে তিনি ভাঙতে পারেন? তার মানে কি নিজেরা আইন তৈরি করবেন?”
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই বলেন, যে সমস্ত রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় নেই, সমস্ত রাজ্যকে নানাভাবে হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে। এজেন্সিকে ঠেলে দিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “সবার বিরুদ্ধে সিবিআই লাগিয়ে দিয়েছে। সকলের বিরুদ্ধে ইডি লাগিয়ে দিয়েছে। সবার বিরুদ্ধে কোনও না কোনও এজেন্সি। একটা চকোলেট বোমা ফাটলেও NIA পাঠিয়ে দেয়। NIA-এর কাজ কী? দেশকে সুরক্ষিত করা। কোনও ডিল করা এনআইএর কাজ নয়। আমরাও অনেক কিছু জানি। দিনে দিনে আরও তথ্য আসবে। আমরা গণতন্ত্র মানি, সৌজন্য মানি।” এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভয় পেয়ে গিয়েছেন সরকার পড়ে যেতে পারে। যেভাবে বিধায়করা চলে যাচ্ছেন, নেতারা যাচ্ছেন, সেই চিন্তাতেই পদত্যাগ চেয়েছেন।“