কলকাতা: রেফার রোগে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্যভবন (Swastha Bhawan)। এবার নতুন ‘রেফার নীতি’ তৈরির পথে হাঁটতে চলেছে তারা। এই নীতি ঠিক করার ক্ষেত্রে ডিএমই’র নেতৃত্বে কমিটিও তৈরি করা হবে। নীতি নির্ধারণের পাশাপাশি রেফারের যাবতীয় বিষয়ে নজরদারি করবে এই কমিটি। গত মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসএসসকেএমের অনুষ্ঠানে রেফার নিয়ে সরব হয়েছিলেন। সোমবার এসএসকেএম থেকেই মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, রেফার নীতি তৈরি হচ্ছে গ্রামবাংলার মানুষের দিকে তাকিয়ে। গ্রামীণ হাসপাতাল হোক বা ব্লক কিংবা জেলা হাসপাতাল, বিভিন্ন সময় রোগীকে স্থানান্তরিত করে দেওয়ার প্রবণতা প্রবলভাবে লক্ষ্য করা যায়। অভিযোগ ওঠে, প্রাথমিক পরিষেবাটুকু না দিয়ে অন্য জায়গায় পাঠিয়ে দেয় হাসপাতালগুলি। রেফার রোগে প্রাণ যাওয়ার অভিযোগও ওঠে। হাসপাতালের পরিকাঠামো, পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকা যেমন এই রেফারের কারণ বলে অভিযোগ ওঠে। একইভাবে অভিযোগ ওঠে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের গাফিলতির বিষয়েও।
নতুন রেফার নীতি এ ক্ষেত্রে রোগী বা তাঁদের পরিবারের কাছে নিঃসন্দেহে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই রেফারের সমস্যা যে হাসপাতালগুলির রয়েছে, তা মুখ্যমন্ত্রীও বলেছেন। মাস দেড়েক আগেই নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক করেছিলেন তিনি। সেখানে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন, রেফার করার জন্য কোনও গর্ভবতী মহিলা যদি মারা যান, যে চিকিৎসক রেফার করেছেন, তাঁকে দায়িত্ব নিতে হবে।
গত ৮ ডিসেম্বরও এসএসকেএম হাসপাতালে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “জাস্ট রেফার করে দিলাম। বললাম যাও চলে যাও। কিন্তু বোঝা উচিত নয় যে এতে জীবনটা সঙ্কটে পড়ে যাব। আমাদের কাজ জীবন বাঁচানো না আমাদের কাজ জীবনটা মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া?” একইসঙ্গে ট্রমা কেয়ারের পরিষেবা নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছিল, রোগী আগে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করতে হবে, তারপর বাকি সমস্ত প্রক্রিয়া।
তবে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরও গত একমাসে একাধিক হাসপাতালে রেফারের অভিযোগ উঠেছে। শুধু জেলা থেকে কলকাতা রেফারই নয়, শহরের ভিতরেও এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে রোগীকে ঠেলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটে আকছাড়। নতুন রেফার নীতি সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেই আশাবাদী বিভিন্ন মহল। তবে নীতি প্রয়োগ করলেও তার বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় রয়েছে অনেকের মনেই। খাতায় কলমে নীতি যেন না থেকে যায়, সেদিকেও কড়া নজরের প্রয়োজন আছে বলেই মত বিভিন্ন মহলের।