কলকাতা: শহরে প্রোমোটারদের (House Promoting) দাপটের অভিযোগ ওঠে প্রায়শই। বিশেষ করে দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় অহরহ প্রমোটাররাজের অভিযোগ তোলেন সাধারণ মানুষ। সোমবার দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুরে এক মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে, অ্যাসিড খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে তাঁকে। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। এদিকে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে ওই মহিলার শরীরের ভিতর অ্যাসিড পাওয়া যায়। তবে তাঁকে কেউ জোর করে তা খাইয়ে দিয়েছে নাকি তিনি নিজে খেয়েছেন তা তদন্তসাপেক্ষ বলেই জানায় পুলিশ। মৃতের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়, লক্ষ্মী সাউয়ের একটি জমির দিকে নজর ছিল এলাকার এক প্রমোটার ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের। এই রহস্যমৃত্যুতে তাঁদের যোগ রয়েছে বলেই অভিযোগ তোলেন লক্ষ্মী সাউয়ের ছেলে মেয়ে। মহিলার এমন রহস্যঘন মৃত্যুতে প্রোমোটারযোগের অভিযোগ উস্কে দিয়েছে নানা প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ, তারা এ নিয়ে থানায় জানিয়েছিলেন। জানানো হয়েছিল কাউন্সিলরকেও।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, জমি দিতে হবে বলে কলকাতার ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মী সাউকে চাপ দেওয়া হচ্ছিল। চাপ দিচ্ছিল বেশ কয়েকজন প্রোমোটার। রবিবারও তাঁদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। টাকার বদলে ওই জমি নিতে চাইছিল প্রোমোটাররা। তবে তাতে কোনওভাবেই রাজি ছিলেন না ওই মহিলা। এরপরই সোমবার এক প্রোমোটারের বাড়ির সামনে থেকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয় লক্ষ্মীকে।
লক্ষ্মীর পরিবার জানিয়েছে, যে জমির দিকে সকলের এত নজর, তা দেড় কাঠাও নয়। তাতে এক ফালি দোকান, ছোট্ট ঘর। সেই ঘরের ছাদ পাকা করতে গিয়েই বিরোধে জড়িয়ে পড়েন লক্ষ্মী। প্রমোটিংয়ের জন্য জমি নিতে চেয়েছিলেন এলাকারই এক ব্যক্তি-সহ তিনজন। পরিবারের দাবি, রবিবার এই জমি সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতেই তাঁরা লক্ষ্মীকে ডেকেছিলেন। এরপর সোমবার ভোরে বাড়ির অদূরে উদ্ধার করা হয় লক্ষ্মী সাউকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান অ্যাসিড খেয়ে মৃত্যু।
মৃতের ছেলে দাবি করেন, স্থানীয় থানা ৬ মাস ধরে বিষয়টি জানে। মেয়ের দাবি, “পুলিশের কাছে গিয়েছিলাম। পুলিশ বলছে আমরা কিছু করতে পারব না। তোমরা বুঝে নাও।” এই ঘটনায় ১২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধেও ঢালাও অভিযোগ করে পরিবার। লক্ষ্মী সাউয়ের পরিবার জানায়, কাউন্সিলর সবই জানত। কিছু করেনি।
তবে কাউন্সির রাজীব দাসের বক্তব্য, “ছ’মাস আগে এলাকার কয়েকজন আমাকে জানায় বাড়ি করতে গিয়ে আটকে গিয়েছে। আমার কাছে যখন খবর আসে শুনলাম কর্পোরেশনে নোটিস হয়েছে। কর্পোরেশনে নোটিসের পর তো আমরা নাক গলাই না। সেখানে কর্পোরেশনের নিয়ম মেনেই তো যা বাড়ি করার করবে। তবে সোমবার কী হয়েছে তা আমি জানি না।”