কলকাতা: মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakrabarty), দেব (DEV) অভিনীত ছবি ‘প্রজাপতি’ নিয়ে শুরুর দিন থেকেই নানা বিতর্ক। ছবির বিষয় থেকে বেশি চর্চা হচ্ছে রাজনৈতিক আকচাআকচি নিয়ে। সোমবার ছিল প্রজাপতির ২৫ দিনের সেলিব্রেশন। সেখানেও পিছু ছাড়ল না বিতর্ক। মিঠুন চক্রবর্তী একের পর এক বোমা ফাটালেন এই অনুষ্ঠানে। নন্দনে ছবির শো না পাওয়া থেকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের মন্তব্য, সব কিছু নিয়েই খোলাখুলি জবাব মিঠুনের। এই কুণাল ঘোষ মিঠুন চক্রবর্তীকে ‘ফ্লপ’ বলেছিলেন। এদিন মিঠুনের গলায় শোনা গেল সেই ফ্লপতত্ত্ব। কিছুটা খোঁচার সুরেই মিঠুন শোনালেন, “আমরা এখানে এসেছি বোধহয় পৃথিবীতে প্রথমবার একটা ফ্লপ ফিল্মকে সেলিব্রেট করতে। এত ফ্লপ হয়েছে যে এর আওয়াজ এরপর অস্কারে শুনতে পাবেন।” মিঠুন বলেন তাঁর সঙ্গে দেবের সম্পর্ক সততার, সম্মানের। একইসঙ্গে মিঠুন বলেন, “আমি এখনও বড় তারকা। এখনও যদি আমি চাই ৩৬৫ দিন কাজ করতে পারি। আমার টিআরপি ভেরি হাই। আর প্রজাপতি এত বড় টিআরপি করে দিল, মরা অবধি যাবে না। চেষ্টা করে লাভ নেই।”
নন্দনে প্রজাপতি শো পায়নি। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। যেহেতু মিঠুন বিজেপির সদস্য তাই এ ছবি নন্দনে দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ তোলে গেরুয়া শিবির। শুধু বিজেপি নয়, বহু মহল থেকেই এই অভিযোগ করা হয়। তবে এ নিয়ে মিঠুন এতদিন কোনও কথা বলেননি। এই প্রথমবার আগল খুললেন মুখের। বললেন, তাঁর কাছে শহরের সমস্ত প্রেক্ষাগৃহই নন্দন। তবে নন্দনের একটা আলাদা মান যে রয়েছে, তাও মেনে নিলেন।
নন্দনে ছবি বাছাইয়ের কমিটি প্রসঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, “আমি তো বলেছি যতক্ষণ না এই কমিটিতে কে কে আছে তাদের নাম বলবে আমি কোনও জবাব দেবো না। আমি তাদের নাম জানতে চাই। অনীকদার মতো পরিচালক, তার ছবি নেই। প্রজাপতি নেগলেক্টেড। আমি জানতে চাই কারা আছে? আমার কাছে তো সব প্রেক্ষাগৃহই নন্দন। তবে হ্যাঁ নন্দনের একটা আলাদা মাত্রা আছে। বাঙালি ঘেঁষা লোক তো। অবশ্য আমাকে নাকি আর বাঙালি বলা যায় না। যাই হোক তাদের চিন্তা।”
কিছুদিন আগেই প্রজাপতি বিতর্কে কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, মিঠুনকে প্রজাপতিতে নেওয়া দেবের ‘আত্মঘাতী’ সিদ্ধান্ত হয়েছে। কুণাল এও বলেছিলেন, “মিঠুনদার ফ্লপ অভিনয়! ওখানে যদি পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতেন ফাটাফাটি হয়ে যেত।” কুণালকে এদিন ‘গঙ্গারাম’ বলে কটাক্ষ করে মিঠুন বলেন, নাম নিয়ে কথা বলবেন না। আমি নাম নিয়ে রাজনীতি করি না। আমি এসব ফালতু সময় নষ্ট করতে চাই না। এসব গঙ্গারামদের কথা বলে সময় নষ্ট করতে চাই না। একটা কথা বলি, গঙ্গারাম ভেবেছিল দেবকে ভয় দেখানো যাবে। কারণ উনি তো এখন ওই পার্টির শেষ কথা। তবে দেব ভয় পায়নি। দেব উত্তর দিয়েছে অভিনেতা হিসাবে। পাবলিক প্রথম সপ্তাহেই ছবিটা দেখে মাউথ পাবলিসিটি করেছে। এটা কিন্তু অশনি সঙ্কেত।”
মিঠুনের বক্তব্য প্রসঙ্গে দেব বলেন, “মিঠুনদা হয়ত এখন জানতে পারল। আমার ছোটবেলা থেকেই সাহস বেশি। রাজনীতি, সৌজন্য়, ছবি তিনটে আলাদা জিনিস। সৌজন্যটা ছোটবেলা থেকে শেখা। রাজনীতি আমার কাছে এখনও মানুষের ভাল করা। সিনেমাটা মানুষের বিনোদনের জন্য। আরেকটা জিনিস মনে করি ভালবাসা দিলেই ভালবাসা পাওয়া যায়। কাউকে আক্রমণ করে তো লাভ নেই। উপরওয়ালা আছে। আজ নয়ত কাল তোমাকে ঠিক ফিরিয়ে দেবে।”