কলকাতা: ২০১০ সালে প্রাথমিক নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল। সেই পরীক্ষা বাতিল হয়ে যায়। ফের ২০১৪ সালে পরীক্ষায় বসেন চাকরিপ্রার্থীরা (Primary Recruitment)। কিন্তু এরপর আইনি জটিলতা শুরু হয়। সেই জটিলতায় ১২ বছর ধরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার সেই চাকরিপ্রার্থীরা। সম্প্রতি হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, তাঁদের নিয়োগ দিতে হবে। কিন্তু তারপরও সিঁদুরে মেঘ দেখছেন প্রার্থীরা। নানা আশঙ্কায় ভুগছেন তাঁরা। রবিবার গান্ধী মূর্তির সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তাঁদেরই দুই প্রতিনিধি। জানান, সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত যদি তাঁদের নিয়োগ তালিকা প্রকাশিত না হয়, তাহলে বালিগঞ্জে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ বা ডিস্ট্রিক্ট প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিলের (DPSC) সামনে ধরনায় বসবেন।
চাকরিপ্রার্থী দেবাশিস বিশ্বাস জানান, ২০০৯ সালের চাকরিপ্রার্থী তাঁরা। সে বছরই পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। ২০১০ সালের ৪ জুলাই পরীক্ষা হয়। সেই পরীক্ষা বাতিল হয়ে যায়। তারপর ফের আদালতের নির্দেশে ২০১৪ সালের ২৩ মার্চ পরীক্ষা হয়। ১৮ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপরই বাধে গোল।
দেবাশিস জানান, ইন্টারভিউ শেষ হলেও কোর্টের জটিলতায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। দেবাশিসের কথায়, “কয়েকজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দাবি করেন, তাঁদের অতিরিক্ত ২০ নম্বর দিতে হবে এবং চাকরির ক্ষেত্রে তাঁদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। কিন্তু আমাদের বিজ্ঞপ্তিটা মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য ছিল। তখন টেট বা ডিএলএড অন্য কিছু ছিল না। এখন পশ্চিমবঙ্গের সব জেলায় নিয়োগ হলেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্ষেত্রে জটিলতা থেকেই গিয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকারের দাবির জন্য মামলা পর্যন্ত হয়। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে মামলা চলছে। গত ১০ নভেম্বর শুনানি হয়। আমাদের নিয়োগের রায়ও দেওয়া হয়।”
আদালত নির্দেশ দেয়, দু’ সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগ দিতে হবে এই চাকরিপ্রার্থীদের। কিন্তু আদালতের নির্দেশ পেতেই চাকরিপ্রার্থীরা বালিগঞ্জে ডিপিএসসির অফিসের সামনে ধরনায় বসেন। দু’ সপ্তাহের অপেক্ষা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই দাবি করেন তাঁরা। কিন্তু কেন এত তাড়াহুড়ো? চাকরিপ্রার্থীদের আশঙ্কা, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা এর মধ্যে যদি সুপ্রিম কোর্টে চলে যান, তাহলে আবারও আইনি জটিলতায় তাঁদের নিয়োগ পিছিয়ে পড়বে। তাই আর অপেক্ষা করতে চাইছেন তা তাঁরা। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, ইতিমধ্যেই ডিপিএসসির চেয়ারম্যান আশ্বাস দিয়েছেন সব হয়ে গিয়েছে। তবে বিকাশ ভবন থেকে সবুজ সঙ্কেত না এলে তাঁরা প্যানেল প্রকাশ করতে পারছেন না।