কলকাতা: রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরি (Akhil Giri) সম্প্রতি রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, তা নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। একের পর এক আক্রমণ ধেয়ে আসছে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠছে, মুখ্যমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে। অখিল গিরির সঙ্গে সেদিন ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজাও (Sashi Panja)। তিনি স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দেন, “আমি দফতরের মন্ত্রী বলে নয়, দলের তরফ থেকে দ্যর্থহীন ভাষায় বলে দেওয়া হয়েছে, নিশ্চয়ই এটি দলের বক্তব্য নয়, এই বক্তব্য দল অনুমোদন করে না। এই বক্তব্যগুলি তাঁর নিজস্ব।”
কিন্তু শশী পাঁজা তো সেই সময় ওই একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। যখন দেশের মহিলা রাষ্ট্রপতির বাহ্যিক রূপ নিয়ে এমন মন্তব্য করছেন অখিল গিরি, সেই সময় কি কোনও তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ করেননি রাজ্য সরকারের নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী? এই বিষয়টিও এবার স্পষ্ট করলেন শশী পাঁজা। জানালেন, “আমরা সেখানে প্রতিবাদ জানাই এবং তাঁকে বক্তব্য শেষ করার জন্য বলি।” রবিবার কলেজ স্কোয়ারে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ৪৯ বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিকদের শ্রদ্ধা জানাতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে এসেই এই মন্তব্য করলেন শশী পাঁজা।
সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “দল নিশ্চয়ই একটি বক্তব্য তৈরি করে না। এটি তাঁর বক্তব্য। তাঁর আক্রোশ প্রকাশ করেছেন। যেহেতু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বরাবর তাঁকে ব্যক্তি আক্রমণ করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন, সেই আক্রোশ-ক্ষোভ তিনি তাঁর বক্তব্যে রেখেছেন। মন্ত্রী বলে নয়, কোনও পুরুষ কোনও মহিলার বিষয়ে এই ধরনের মন্তব্য রাখতে পারেন না।” শশী পাঁজার সামনে অখিল গিরির এই ধরনের মন্তব্য নিয়ে বিজেপি শিবির যে খোঁচা দিতে শুরু করেছে, সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের কাউকে কি উৎসাহিত করা হয়েছে এই কথাগুলি বলতে? আমরা উপস্থিত না থাকলেও যে উনি এই কথা বলতেন না… তা হয় নাকি! এই যে বলা হচ্ছে, এর আগেও নাকি বলেছেন। তখন কি আমরা উপস্থিত ছিলাম?”
সাম্প্রতিক কালে রাজ্য-রাজনীতিতে বিজেপি-তৃণমূল কিংবা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে যে ‘কুকথা’র আক্রমণ, প্রতিআক্রমণ চলছে, সেই বিষয়টিও মোটেই সমর্থন করছেন না শশী পাঁজা। বললেন, “রাজনৈতিক শালীনতা থাকা উচিত। আমরা ভিন্ন রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারি। কিন্তু কোথায় গিয়ে থামতে হবে, তা সকলের জানা উচিত।”