কলকাতা: অখিল গিরি (Akhil Giri) সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের এক মঞ্চ থেকে রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে যে মন্তব্য় করেছেন, তা নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে চারিদিকে। শুধুই বঙ্গ রাজনীতিতেই নয়, দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে সেই শোরগোল। তৃণমূল কংগ্রেস ইতিমধ্যেই ওই মন্তব্য থেকে নিজেদের গা ঝেড়ে ফেলেছে। বলা হয়েছে, ওই মন্তব্য অখিলের নিজস্ব। রাজ্যের কারামন্ত্রী অবশ্য ওই মন্তব্যের পরের দিনই ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করেছিলেন। দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। যদিও তাতে সন্তুষ্ট নয় বিরোধী শিবির। অখিলের এই দুঃখপ্রকাশকে দায়সারা অনুতাপ বলেই মনে করছেন বিরোধীরা। এমন এক পরিস্থিতিতে অখিল গিরির এই মন্তব্যকে ইস্যু করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসক শিবিরকে আরও চাপে রাখার চেষ্টায় বঙ্গ বিজেপি শিবির।
অখিলের মন্তব্য ঘিরে, জেলায় জেলায় চলছে প্রতিবাদ কর্মসূচি। কোথাও পুড়ছে মন্ত্রীর কুশপুতুল। কোথাও হচ্ছে পথ অবরোধ। শিলিগুড়ি-আলিপুরদুয়ার থেকে শুরু করে দক্ষিণে ডায়মন্ড হারবার… সর্বত্রই চলছে প্রতিবাদ। আর সবক্ষেত্রেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পুরভাগে বিজেপি। অখিল গিরির এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেসের অস্বস্তি বাড়াচ্ছে পদ্ম শিবির। কোনও কোনও বিজেপি নেতা আবার পাল্টা অখিল গিরিকেই ব্যক্তি আক্রমণ করতে শুরু করে দিয়েছেন।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়টি নিয়ে চুপ করে থাকা নিয়েও খোঁচা দিতে শুরু করেছে বঙ্গ বিজেপি। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন, কেন এমন একটি ঘটনার পরও মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলছেন না। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু প্রসঙ্গে অখিল গিরির মন্তব্যকে নিয়ে আদিবাসীদের অপমান করা হয়েছে বলেও আক্রমণ শানাচ্ছে বিজেপি। দুদিন পর বেলপাহাড়ি যাওয়ার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। আদিবাসী অধ্যুষিত বেলপাহাড়িতে মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়া নিয়েও খোঁচা দিচ্ছে বিজেপি। সুকান্ত মজুমদার পরামর্শ দিচ্ছেন ‘গ্লাভস পরে’ যাওয়ার জন্য। অখিল গিরির রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে মন্তব্যের এই হাতে গরম ইস্যুকে হাতিয়ার করে আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ককে পদ্ম শিবিরের দিকে ছিনিয়ে নেওয়ার একটি প্রচ্ছন্ন প্রয়াস চালানো হচ্ছে বলেও মনে করছেন রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা।