কলকাতা: উত্তর কলকাতায় শাসকদলের দুই হেভিওয়েট নেতা। কিছুতেই মিটছে না তাঁদের দ্বৈরথ। একজন উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Sudip Banerjee), অন্যজন বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় (Tapas Roy)। দু’জনই তৃণমূলের প্রথম দিনের সঙ্গী, দু’জনই বর্ষীয়ান নেতা। কিন্তু গত কয়েকদিনে তাঁদের সম্পর্কের যে ছবি সামনে এসেছে তা নিঃসন্দেহে বিরোধীদের আলাদা অক্সিজেন জুগিয়েছে। অবশ্য সেসব গুরুত্ব দিতে নারাজ তাপস রায়। আরও একবার তিনি জানিয়ে দিলেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল করেন। সুদীপের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের উন্নতির কোনও প্রশ্নই নেই। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবার তাপস রায় বলেন, “কী যায় আসে সম্পর্ক ভাল হওয়া, মন্দ হওয়ায়। ভাল মন্দ নিয়ে যায় আসে না আমার। কী দরকার এসবের। আমি তো আমার মতো দল করি। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করি। আমার সঙ্গে সকলের ভাল সম্পর্ক। রাজ্যে এমন কোনও বিধায়ক নেই, সাংসদ নেই, মন্ত্রী কিংবা প্রতিষ্ঠিত তৃণমূল নেতা নেই, যাঁর সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক নেই। তাঁরাও একই কথা বলবেন। আমাকে সকলেই পছন্দ করেন, ভালবাসেন।”
তা হলে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যতিক্রম কেন? নাম না করেই বরানগরের বিধায়কের জবাব, “ব্যতীক্রমের কারণ নিশ্চয়ই ছিল বা আছে সেই জন্যই ব্যতিক্রম। আমি ভাল আছি। খুব নিষ্ঠার সঙ্গে, সততার সঙ্গে দল করি। দল যখন যা কাজ দেয়, তা সুচারুভাবে করি। কোনও ফাঁকি কোনওদিনই দিইনি, দেবও না।” তবে সুদীপের সঙ্গে তিনি যে সম্পর্কের উন্নতি চান না, স্পষ্ট বলেন সে কথাও।
কিছুটা কঠোর সুরেই তাপস রায়কে বলতে শোনা গেল, “আমি চাই না বিশেষ একজনের সঙ্গে আমার সম্পর্কের উন্নতি হোক। আমার ভাল লাগে না। এর জন্য দলের বিড়ম্বনার কোনও প্রশ্নই নেই। ২২ বছর হয়ে গেল তৃণমূল করছি। তার আগে কংগ্রেসে ছিলাম। আমাকে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিড়ম্বনায় পড়েননি, দল বিড়ম্বনায় পড়েনি, পড়বেও না।”
প্রসঙ্গত, পুজোর সময় উত্তর কলকাতার বিজেপি জেলা সভাপতির বাড়ির পুজোয় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় গিয়েছিলেন। সেই যাওয়াকে কেন্দ্র করে তাপস রায়ের সঙ্গে বাকতরজা শুরু। প্রকাশ্যে এর তীব্র নিন্দা করেন তাপস রায়। পাল্টা আক্রমণ করেন সুদীপও। তিন চার মাস ধরে সেই কথার লড়াই যেন চলেই যাচ্ছে।