আজও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে উত্তরবঙ্গে। আবহাওয়া দফতরের তরফে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃষ্টি বাড়বে দক্ষিণবঙ্গেও। উপকূলের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানা গিয়েছে। শনিবার থেকে বৃষ্টি কিছুটা কমতে পারে। গতকাল থেকে যেভাবে উত্তরের জেলাগুলিতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা গিয়েছে, তাতে উদ্বেগ বেড়েছে।
চলতি সপ্তাহে উত্তরবঙ্গের উপরের দিকে জেলাগুলিতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে পাহাড়ি এলাকাগুলিতে। অন্যদিকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বলে খবর।
শনি ও রবিবার উপকূলের জেলাগুলিতে বেশি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা। ভারী বৃষ্টি হতে পারে পূর্ব মেদিনীপুর উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়।
দক্ষিণবঙ্গে একদিকে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি অন্যদিকে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা মাঝারি বৃষ্টি। আজ থেকে বৃষ্টি কিছুটা বাড়তে পারে দক্ষিণবঙ্গে। বজ্রবিদ্য সহ হালকা মাঝারি বৃষ্টি হবে তবে তার পরিমাণ ও ব্যাপকতা কিছুটা বাড়তে পারে।
শনিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে উত্তরবঙ্গে। তবে উপরের পাঁচ জেলাতে হালকা মাঝারি বৃষ্টি চলবে। শনিবার বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে এই পাঁচ জেলাতে। রবিবার থেকে আরও কমবে বৃষ্টির পরিমাণ।
কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুর জেলাতেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা। বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টি হবে মালদা এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতেও।
নদীর জলস্তর বাড়তে পারে উত্তরে। তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা, সঙ্কোষ নদীতে জল বিপদসীমা ছাড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রবল বৃষ্টিতে নীচু এলাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। পাহাড়ি রাস্তাতেও বিপদের আশঙ্কা বাড়ছে, দৃশ্যমানতা কমছে। ধস নেমে যান চলাচল ব্যাহত হতে পারে।
১৬ জুলাই অর্থাৎ আগামী রবিবার উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হবে। হাওয়া অফিসের রিপোর্ট বলছে, মৌসুমী অক্ষরেখা রাজস্থানের বিকানির, গোয়ালিয়ার, সাতনা, গয়া হয়ে মালদহের উপর দিয়ে পূর্ব দিকে গিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
উত্তরে বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে আগেই। শুক্রবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি চলছে জলপাইগুড়িতে। শুক্রবার সকাল ৬ টায় তিস্তা ব্যারেজ থেকে প্রায় ২৬০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বৃষ্টিপাতের পরিমান-
১) জলপাইগুড়ি- ১৩২.৭০ মিলিমিটার
২) আলিপুরদুয়ার- ৫২.৪০ মিলিমিটার
৩) কোচবিহার- ৬৯.৩০ মিলিমিটার
৪) শিলিগুড়ি- ১০১.৮০ মিলিমিটার
৫) মাল- ৩৭.৯২ মিলিমিটার
৬) হাসিমারা- ১০০.০০ মিলিমিটার
৭) বানারহাট- ১৪৫.০০ মিলিমিটার
৮) মাথাভাঙা- ২১.২০ মিলিমিটার
৯) তুফানগঞ্জ- ৯৪.২০ মিলিমিটার
১০) ময়নাগুড়ি- ৯০.০০ মিলিমিটার
উত্তর ভাসছে, কিন্তু দক্ষিণ ঘামছে! অবশেষে দক্ষিণের জন্য কিছুটা সুখবর এসেছে। বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। বাংলা-ওড়িশা উপকূলে নিম্নচাপের ইঙ্গিত দিয়েছে হাওয়া অফিস। এর টানে মৌসুমী অক্ষরেখাও সরবে দক্ষিণে। তবে কি ‘ডিপ্রেশন’ কাটতে চলেছে দক্ষিণবঙ্গের? আবহাওয়াবিদরা বলছেন পরিস্থিতি একেবারে বদলে যাওয়ার আশা কম।
আবহাওয়া দফতরের প্রাথমিক অনুমান, নিম্নচাপ ওড়িশা হয়ে ঢুকতে পারে স্থলভাগে, তার পর সরে যাবে ছত্তীসগঢ়ের দিকে। ১৬ জুলাই দুই মেদিনীপুরে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
রাতে নতুন করে বৃষ্টি হয়নি। তবে ভোর থেকে ডুয়ার্সে ফের বৃষ্টি শুরু হয়েছে। যে সমস্ত এলাকায় জল ঢুকে পড়েছিল সেখানকার জলস্তর নামতে শুরু করেছে। ডুয়ার্সের বানারহাট, বিন্নাগুড়ি, গয়ারকাটা, ধূপগুড়িতে বন্যা পরিস্থিতি। তবে নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে পলি পড়ে যাওয়ায়। এখনও নদীগুলিতে জলস্ফীতি রয়েছে। জলঢাকা গিলান্ড, ডুডুয়া, ডায়না, কুমলাই ও তোর্ষা নদীতে বেড়েছে জল। অনেক মানুষ এখনও অস্থায়ী ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন।