কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের আগে জনসংযোগের আরও আরও জোর দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। দুই মাস জুড়ে ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচি চালু করছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। আর সেই কর্মসূচি নিয়েই এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে একের পর এক আক্রমণ শানালেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর দাবি, এই সম্পূর্ণ জনবিচ্ছিন্ন কর্মসূচি। বললেন, ‘মানুষের কাজ করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি যে আন্দোলন করেছে, সেই আন্দোলনের সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই। পশ্চিমবঙ্গে সরকারের একটি ঘোষিত কর্মসূচি। ইতিমধ্যেই পাঁচজন সিনিয়র আইপিএসকে ডাইরেক্টর অব সিকিউরিটিতে পোস্টিং করা হয়েছে, তাঁর (অভিষেকের) যাত্রাপথ সুমধুর করার জন্য। ১৫০ জনকে ডাইরেক্টর অব সিকিউরিটিতে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে।’
শুভেন্দু অধিকারী যে সময়ে রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন, সেই সময়ে নেপাল মাহাতোর সঙ্গে এক কথোপকথনের কথাও এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তুলে ধরেন তিনি। শুভেন্দুর দাবি, সেই সময় নেপাল মাহাত শুভেন্দুকে বলেছিলেন, ‘আপনার নেত্রীকে একটু বলুন, যেন ভাইপোকে ঘন ঘন পুরুলিয়ায় পাঠায়।’ শুভেন্দু কারণ জানতে চেয়েছিলেন। শুভেন্দুর দাবি জবাবে নেপাল মাহাত বলেছিলেন, ‘একবার গেলেই ১০ হাজার করে ভোট কমছে তৃণমূলের।’ এই গল্প শুনিয়ে শুভেন্দু বললেন, ‘ভাইপো যত পুলিশ নিয়ে রাস্তা দড়ি দিয়ে ঘিরে, গাড়ি-অ্যাম্বুলেন্স আটকে… ড্রামা করতে বেরোবে, তত তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক ক্ষয়িষ্ণু হবে। আমরা এই কর্মসূচিকে ইগনোর করছি।’
বিরোধী দলনেতার দাবি, ‘আমরা ভাইপোকে নিয়ে আমাদের মূল্যবান রাজনৈতিক সময় এতটুকুও নষ্ট করতে চাই না। আমরা আমাদের বুথ সশক্তিকরণের কাজ চালিয়ে যাব।’ একইসঙ্গে শুভেন্দুর সংযোজন, ‘কর্পোরেট স্টাইলের বাস নিয়ে যুবরাজ বেরোচ্ছেন প্রজাদর্শন করতে। সাউন্ডপ্রুফ বাস থাকবে, যাতে চোর শব্দ না শোনেন। কিন্তু গাডির স্পিড যদি স্লো হয়ে যায়, চোর শব্দ শুনতেই হবে। আমি পরামর্শ দেব, গাড়ির গতি ১০০-র উপরে রাখবেন। আর সামনে পিছনে আট-দশটা পুলিশের গাড়ির হুটার বাজিয়ে রাখবেন। নাহলে পুলিশ ছাড়া যে এলাকা দিয়ে যাবেন, সেখানেই চোর চোর শব্দ শুনবেন।’
যদিও শুভেন্দু অধিকারীর এই আক্রমণ নিয়ে পাল্টা দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। বলছেন, ‘এসব দেখে বিজেপির বুক কাঁপছে। শুভেন্দুদের মাথার গন্ডগোল হয়ে গিয়েছে। জীবনে তো ভাবতে পারেনি, ঘরবাড়ি ছেড়ে দুই মাসের জন্য রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। এগুলো তো অতীতে কেউ করেনি। এটা ভারতের গণতন্ত্রের এক বিরল অভিযান।’