কলকাতা: চার পুরনিগমের নির্বাচনে বিপুল জয় তৃণমূলের। স্বভাবতই আত্মবিশ্বাস আরও পোক্ত হয়েছে দলের অন্দরে। তাই আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ১০৮টি পুরসভার ভোটে (Municipality Election) কোনওরকম কাঁটা রাখতে চাইছে না তৃণমূল (Trinamool)। পুরনিগমের ফল প্রকাশের বিকেলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্যে তারই স্পষ্ট ইঙ্গিত।। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্দলদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য নির্দলদের ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন তিনি। এই সময়ের মধ্যে প্রার্থী পদ প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূলের নব মনোনীত জাতীয় কর্মসমিতির এই নেতা। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি পুরসভার যে নির্বাচনগুলো সেই নির্বাচনে আমরা দলের তরফ থেকে জেলার মাধ্যমে যে তালিকা পাঠিয়েছিলাম এবং যাঁরা সর্বভারতীয় তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে আমাদের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে লড়াই করছেন, তাঁরা ছাড়া যাঁরা নির্দল হিসাবে বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়েছেন। তাঁদের আমরা অনুরোধ করেছি নাম প্রত্যাহার করার জন্য। আমরা ৪৮ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। আবার বলছি, আজকে থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে দলের প্রার্থীর সমর্থনে তাঁরা আবেদন জানাবেন। যদি তাঁরা আবেদন না জানান, সেই সমস্ত দলীয় চিহ্নিত কর্মী বা নেতা যাঁরা নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়েছেন বা তাঁদের আত্মীয়রা দাঁড়িয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা ৪৮ ঘণ্টা পর আমরা নেব।”
এ ক্ষেত্রে কো অর্ডিনেটরদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “যে জেলায় যাঁরা কো অর্ডিনেটর আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুরনির্বাচনে যাঁদের কো অর্ডিনেটর ঘোষণা করেছেন, সেই সংশ্লিষ্ট জেলায় যাঁরা দায়িত্বপ্রাপ্ত তাঁদের অনুরোধ করব ৪৮ ঘণ্টা পর কেউ যদি প্রার্থী হিসাবে নাম প্রত্যাহার না করেন তা হলে দলবিরোধী কাজের জন্য যে শাস্তি দেওয়ার কথা আমরা আলোচনা করে নিয়েছি সেইমতো দল থেকে যেন বহিষ্কার করা হয়।”
১০৮টি পুরসভার মধ্যে ১০৭টি পুরসভার প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরই অস্বস্তিতে পড়তে হয় তৃণমূলকে। অভিযোগ ওঠে, দলের ওয়েবসাইটে যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, আর জেলায় জেলায় যে তালিকা পাঠানো হয়েছে, তাতে বিস্তর ফারাক রয়েছে। প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। পথে নেমে বিক্ষোভ দেখান দলীয় কর্মী, সমর্থকরা। শুধু তাই নয়, মদন মিত্রের মতো দলের ‘হেভিওয়েট’ নেতাও প্রকাশ্যে সরব হন এই প্রার্থী তালিকা নিয়ে। নানান বিস্ফোরক অভিযোগ করেন দলীয় নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে।
তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বও প্রথম থেকেই কঠোর অবস্থান নিয়েছে এ ক্ষেত্রে। ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, “দল সতর্ক করার পরেও যারা নির্দল হয়ে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে দল। দলের সিদ্ধান্ত খুবই কড়া হবে। তবে যাঁরা নির্দল হিসাবে দাঁড়াচ্ছেন, তাঁরা নিজেদের ওজন বুঝে যাবেন। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের ছবি সরে গেলে কী হয়?” এরপরই সোমবার নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়ে দিয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা করে দিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।