কলকাতা: বাজারদর বেড়েছে, কিন্তু ভোট (Bengal Panchayat Election) কর্মীদের পারিশ্রমিকে আসেনি বদল। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার থেকে শুরু করে সমস্ত ভোটকর্মীর জন্য দৈনিক যা ভাতা বরাদ্দ ছিল, ৫ বছরে তাতে কোনও বদল নেই। কমিশন সূত্রের খবর, ভোটের সার্বিক খরচের বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু সরকারি কর্মীরা, যাঁরা ভোটের দিনগুলি উদয় অস্ত খাটেন এবং সমস্তরকম ঝুঁকি নিয়ে ভোটকেন্দ্রে থাকেন, তাঁদের ভাতায় কোনও বদল আসেনি এবারও। আগামী ৮ জুলাই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে চলেছে সেখানে। মোট ২২টি জেলায় ভোটে ৩৩১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত, মোট পঞ্চায়েত সমিতি ৩৪১, জেলা পরিষদে আসন সংখ্যা ৯২৮। তিনস্তর মিলিয়ে মোট আসন ৭৩, ৮৮৭।
এই বিপুল আসনে কাজ করবেন প্রায় ৪ লক্ষ ভোটকর্মী। সরকারি কর্মীরা ভোট কর্মী হিসাবে কাজ করবেন, কমিশনের এমন নির্দেশিকাই রয়েছে। বিজ্ঞপ্তি বলছে, পুরকর্মী, সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদেরও ভোট কর্মী হিসাবে নিযুক্ত করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে এই ভোটকর্মীরা কাজ করেন। কত ভাতা পান তাঁরা?
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোটে প্রিসাইডিং অফিসাররা ৩৫০ টাকা ভাতা পেয়েছেন। পোলিং অফিসাররা পেয়েছেন ২৫০ টাকা করে। এরসঙ্গে খাবারের খরচ এছাড়া খাবারের খরচ, মোবাইল ফোন রিচার্জের খরচও পান। এবারও তাই পাবেন। অথচ রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, আগের ভোটের তুলনায় এবার অনেকটাই বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। আগেরবার প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। এবার ৫০০ কোটির বেশি খরচ হতে পারে। যদিও সাফাইকর্মীদের জন্য এবার পারিশ্রমিক হিসাবে ২০০ টাকা ও খাবারের খরচ হিসাবে ১৭০ টাকা ধার্য হয়েছে। থাকবেন আশা কর্মীরাও। বয়স্ক ও অসুস্থ ভোটারদের সহযোগিতার জন্য থাকবেন তাঁরা। কাজের দিন পিছু ২৫০ টাকা করে পাবেন, সঙ্গে খাবারের খরচ ১৭০ টাকা।
প্রশিক্ষণ বা ভোটের দিন খাবারের যে ভাতার পরিমাণ, তাতেও বদল আসছে না বলেই খবর। ভোট করাতে গিয়ে কোনও ভোটকর্মী আহত হলে কমিশন ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ দেয়। অসুস্থ হয়ে মারা গেলে বা হিংসার বলি হলে কমিশন এককালীন টাকা দেয়। প্রথম ক্ষেত্রে ১০ লক্ষ টাকা, হিংসায় প্রাণ গেলে ২০ লক্ষ টাকা পায় পরিবার। আহতদের ক্ষেত্রে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার খরচ। তবে ভোটকর্মীদের স্বাস্থ্যবীমা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
এই অবস্থায় ডিএর দাবিতে আন্দোলনকারী সংগ্রামী যৌথমঞ্চের তরফে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তায় ভোট করানোর দাবির পাশাপাশি ভোটের ভাতাও বাড়ানোর দাবি করা হয়েছে। এই একই দাবি করেছেন, বাস, মিনিবাস, ছোট গাড়ির সংগঠনও। ভোটে ডিউটি করাতে হলে ভাড়ার টাকা বাড়াতে হবে, বাড়াতে হবে খাবারের খরচও। এই কমিশনকে লিখিতও দিয়েছে তারা।