কলকাতা : হিজাব (Hijab) পরা ছবি দেখে বাতিল করা হয়েছে চাকরির আবেদনপত্র। রাজ্য পুলিশের (WB Police) নিয়োগ নিয়ে এমনই অভিযোগ সামনে আসে। সেই অভিযোগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বেশ কয়েকজন মহিলা চাকরি প্রার্থী। সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জানিয়েছেন, মামলার নির্দেশ অনুসারেই নিয়োগ করতে হবে রাজ্য পুলিশকে। হাইকোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, যে মামলা দায়ের হয়েছে তার নির্দেশের ভিত্তিতেই রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ হবে। অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের যে নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে তা সংশ্লিষ্ট রিট পিটিশনের নির্দেশ মেনে করতে হবে।
বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আবেদনকারীদের দাবি, তাঁদের ছবি দেখেই আবেদন পত্র বাতিল করা হয়। অথচ ছবি দেখে প্রার্থীদের মুখ স্পষ্ট শনাক্ত করা যাচ্ছে।’ এ মামলায় কোনও হলফনামা পেশ করতে হবে না বলে আদালতের তরফে জানানো হয়েছে। কোনও বিতর্কিত বিষয় জড়িত না থাকায় কোনও হলফনামায় ছাড়াই বিষয়টির নিষ্পত্তি হতে পারে বলে মনে করছেন বিচারপতি। আগামী বছরের ৬ জানুয়ারি এই মামলার শুনানি রয়েছে।
চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের বক্তব্য, হিজাব পরার কারণেই তাঁদের আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে। এমনকি আবেদনপত্র বাতিল করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আর্জি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে গেলে, সেখানেও অপমানিত হতে হয় বলে অভিযোগ। এমনকী বৃষ্টির মধ্যেই ছাতা না থাকা সত্ত্বেও অফিস চত্বরের বাইরে বের করে দেওয়া হয় মহিলা চাকরিপ্রার্থীদের।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে কনস্টেবল পদে আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে। সময় মতো আবেদন করেন প্রায় ৮ লক্ষ চাকুরিপ্রার্থী। পরীক্ষা হবে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর। তার আগে ৬ সেপ্টেম্বর থেকে নিয়োগ বোর্ডের ওয়েবসাইট থেকে সেই পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া শুরু হয়েছে। জানা গিয়েছে, মোট আবেদনকারীর প্রায় ৩৫ হাজার জনের আবেদনপত্র বাতিল করা হয়েছে বিভিন্ন ভুলের জন্য। তার মধ্যে আবেদনপত্রে হিজাব পরিহিত ছবি দেওয়ার জন্য কয়েকজন মহিলা আবেদনকারীর ফর্মও বাতিল করা হয়েছে। এই নিয়ে চরম হয়রানির শিকার হন আবেদনকারীরা। সম্প্রতি এই ঘটনার পর ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংখ্যালঘু বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। শোরগোল পড়ে যায় সোশাল মিডিয়াতেও।
কিছুদিন আগেই আগে এই অভিযোগ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে একটি ডেপুটেশনও জমা দেওয়া হয়। ডেপুটেশন জমা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী, ওয়েলফেয়ার পার্টির রাজ্য সম্পাদক সারোয়ার হোসেন, অল ইন্ডিয়া মুজলিসে ইত্তিহাদুল মুসলিমীনের রাজ্য নেতা সাবির এস গাফ্ফার, ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল পার্টির সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ মোল্লা ও সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির রাজ্য সম্পাদক হাকিকুল ইসলাম।
আরও পড়ুন : Municipal Election 2021: পুরভোটে স্থানীয় নেতাদেরই অগ্রাধিকার, পুরনো আরএসএস কর্মীদেরও জায়গা দেবে বিজেপি!