কলকাতা: বাংলার রাজনীতির দুই মহারথী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীর চলতি সপ্তাহেই টুইট-যুদ্ধের সাক্ষী থেকেছে রাজ্যবাসী। আর সেই ঘটনার পরপরই এবার নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার জীবনকৃষ্ণ সাহার মুখে কথার ফুলঝুরি। এদিন তাঁকে আলিপুরে সিবিআই আদালতে নিয়ে আসা হয়েছিল। সেই সময় আদালত চত্বরে সংবাদমাধ্যমের সামনে জীবন বললেন, এর আগে আপনারা তো দেখেছেন টিভিতে। খবরের কাগজে মুড়ে টাকা নেওয়া… সেটাই তো ধরতে পারছে না। সেটা আগে তদন্ত করতে বলুন।’ যদিও কারও নাম তিনি সরাসরি উল্লেখ করেননি। প্রশ্ন করা হয়েছিল, কাকে ইঙ্গিত করছেন? জীবনের উত্তর, ‘কার কথা বলছি আপনারা ভালই জানেন।’
নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার তৃণমূল বিধায়কের কাছে আরও জানতে চাওয়া হয়, নারদার ছবিতে অনেককেই তো দেখা গিয়েছে। বিধায়ক কার কথা বলছেন? যদিও সেই সময়ও সরাসরি কারও নাম বললেন না। শুধু বললেন, ‘যাঁর ফোন সিবিআই দফতরে আসে বার বার। যাঁর ফোনে গ্রেফতার হয়।’ কার কথা তিনি বলতে চাইছেন, সেটি স্পষ্টভাবে কিছু বলতে চাননি জীবন। তবে এভাবে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলে কি জীবনবাবু দলের প্রতি আনুগত্য বোঝাতে চাইছেন? গ্রেফতারি পরবর্তী কঠিন সময়েও তিনি যে দলের সঙ্গেই রয়েছেন, সেটাই কি বোঝাতে চাইছেন? এমন গুঞ্জন ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে।
উল্লেখ্য দিন দুয়েক আগেই টুইট-যুদ্ধের সময় অভিষেক নারদার স্টিং অপারেশনের ছবি-ভিডিয়ো শেয়ার করে খোঁচা দিয়েছেন শুভেন্দুকে। আর তারপরই নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্য। এই নিয়ে বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ তো তৃণমূলের সবাই করছে। কম্পানির মালিক বলছেন। আর মালিক যা বলবেন, অধস্তনরা তো সেটাই বলবেন।’ তবে কি এই কথা বলে তৃণমূলের কাছে প্রাসঙ্গিক হওয়ার চেষ্টা করছেন জীবন? বিজেপি মুখপাত্র অবশ্য কটাক্ষের সুরে বলছেন, ‘দলটাই মানুষের কাছে প্রাসঙ্গিক নয়, আর দলের কাছে কে প্রাসঙ্গিক থাকবে!’
তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল জীবনকৃষ্ণের এই বক্তব্য নিয়ে। তিনি বলছেন, ‘জীবনকৃষ্ণ সাহা কী বলছেন, তা জানি না। তবে শুভেন্দু যে জড়িয়ে, তা আমরা বার বার অভিযোগ করেছি। শুভেন্দু তো নিজেকে বাঁচাতেই বিজেপির কাছে গিয়েছেন, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।’