কলকাতা: আর গড়িমসি নয়, উপনির্বাচন করতে হলে এখনই করা হোক। কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে হওয়া বৈঠকে বুধবার এমনটাই জানিয়েছেন এ রাজ্যের কমিশন কর্তারা। ৭টি রাজ্য-সহ এ রাজ্যের ডেপুটি সিওদের সঙ্গে এ দিন বৈঠক করে কমিশন। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকেই আগামী সময় পুজোর ছুটির কথা উল্লেখ করে এখনই নির্বাচনের পক্ষে সায় দেন কমিশন কর্তারা।
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, বুধবারের বৈঠকে মূল তিনটি বিষয় জানতে চাওয়া হয় কমিশনের পক্ষ থেকে। প্রথমত, রাজ্যে কোভিড পরিস্থিতি কেমন? দ্বিতীয়ত, পুজোর ছুটি কবে থেকে কতদিন পর্যন্ত? তৃতীয়ত, রাজ্যে বন্যার পরিস্থিতি এখন কেমন?
যারা ভোটের কাজে যুক্ত, সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে কি না সে প্রসঙ্গও উঠে আসে বৈঠকে। রাজ্যের কমিশন কর্তারা জানিয়েছেন, তাঁরা ভোট করতে প্রস্তুত। এই মুহুর্তে ভোট হলে সমস্যা নেই। কারণ অক্টোবরে ১০ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত ছুটি থাকছে দফতরে। ফলে এখনই ভোটের দিন ঘোষণা হলে ২৪ দিনের মাথায় ভোট করতে সমস্যা হবে না।
বৈঠকে অন্যান্য রাজ্যের পক্ষ থেকে দশেরা, দীপাবলি প্রভৃতি উৎসবের কথাও উঠে আসে। উঠে আসে আইন শৃঙ্খলার প্রসঙ্গও। অসমের বন্যার জেরে তারা আপতত ভোট করতে রাজি নয় বলেও জানানো হয়।
বুধবারের এই হেভিওয়েট বৈঠকে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও হাজির ছিলেন। সেই বৈঠকে বসার আগে জেলা প্রশাসনের থেকে করোনা এবং টিকাকরণ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠানো হয়। আজ পর্যন্ত কতজন করোনাতে আক্রান্ত রয়েছেন এবং ভ্যাকসিন কতজনকে দেওয়া হয়েছে, সেই সম্পর্কিত রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসকদের থেকে নেন স্বাস্থ্যসচিব।
মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কোচবিহার, নদিয়া ও কলকাতা, এই জায়গা থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট নিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব। কারণ এই জেলাগুলিতেই উপনির্বাচন হওয়ারর কথা। সূত্র জানাচ্ছে, রিপোর্টে দেখা গিয়েছে বেশিরভাগ অংশই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কার্যত নেই।
উল্লেখ্য, দ্রুত উপনির্বাচনের দাবিতে গত সপ্তাহেই ফের একবার নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল নেতারা। কারণ, আগামী ৬ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে আগামী ৬ নভেম্বর পর্যন্ত সময় রয়েছে ভোটে জিতে আসার জন্য। অন্যথায় মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার ছাড়তে হবে তাঁকে। এই পরিস্থিতিতে দ্রুত উপনির্বাচন চেয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির পক্ষ থেকে যদিও স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তারা উপনির্বাচন চায় না। রাজ্যের করোনা পরিস্থিতিকেই এর অন্যতম কারণ হিসেবে ব্য়াখ্যা করেছে পদ্মশিবির। নির্বাচন না চাওয়া নিয়ে রীতিমতো ৮ টি পয়েন্ট-সহ চিঠিও সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং নির্বাচন কমিশনকে দিয়েছিল বঙ্গ বিজেপি। তবে আজকের বৈঠকের পর উপনির্বাচনের সম্ভাবনা যে আরও উজ্জ্বল হল, তা বলাই যায়। আরও পড়ুন: কয়লা মামলা: একা দিল্লি গেলে ‘ঝুঁকি’ রয়েছে, ইডি-র তলব এড়ালেন অভিষেক জায়া