কলকাতা: তৃণমূলের পলাশীপাড়ার বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে গ্রেফতার করেছে ইডি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার সকালেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এই গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই সরব বাম-বিজেপি। পাল্টা তৃণমূলও সুর চড়িয়েছে। রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের দাবি, বিরোধী দলের নেতার নাম ইডি, সিবিআইয়ের খাতায় থাকলেও তাঁদের ডাকা হয় না। বেছে বেছে অবিজেপি সরকারের রাজ্যগুলিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি তৎপর। অন্যদিকে সিপিএম নেতা তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, এই গ্রেফতারির পাশাপাশি এই চক্রের মাথায় যে তাকে ধরতে হবে।
তৃণমূল নেতা শান্তনু সেন: “বিচারাধীন বিষয় নিয়ে নিশ্চিত করে কিছুই বলব না। তবে বলব ইডি তাঁকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু আমরা জানি ইডির কনভিকশন রেট মাত্র .৪৫ শতাংশ। আমরা দেখেছি বিগত কয়েক বছরে কীভাবে ইডি এবং সিবিআইয়ের ব্যবহার ৩৬৫ শতাংশ বেড়েছে। যার মধ্যে ৯৫ শতাংশ বেছে বেছে বিরোধী নেতা নেত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছে। বিরোধী দলগুলির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আমরা এও দেখেছি পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতিতে ডুবে থাকা বিজেপি নেতাদের স্পর্শ করে না এই কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তাই আমরা চাইব তদন্ত দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হোক, সত্যি সামনে আসুক।”
একইসঙ্গে শান্তনু সেন বলেন, “বিরোধীদের পাশ থেকে ২০টা রাজনৈতিক দল ছেড়ে চলে গিয়েছে। বিজেপি বিগত কয়েক বছরে ২০ জন রাজনৈতিক সঙ্গী হারিয়েছে। এখন তাদের সবথেকে বড় রাজনৈতিক সঙ্গী ইডি ও সিবিআই।” একইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, সারদা মামলায় এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতার এফআইআরে থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে ডাকা হচ্ছে না?
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য: “দীর্ঘদিন ধরে মানিক ভট্টাচার্যের দিকে অভিযোগের তির ছিল। এতবড় দুর্নীতি সংগঠিত হয়েছে মানিক ভট্টাচার্য কিছু জানতেন না? তাঁরা সকলে এই গোটা প্রক্রিয়াটায় ছিলেন। সংগঠিত অপরাধকে রূপ দিতে তাঁদের ভূমিকা ছিল এটা মানুষ বুঝে গেছেন। এখন আইনি পথে চলছে। তাই ইডি কখন কাকে গ্রেফতার করবে, জেরা করবে এটা তাদেরই ব্যাপার। এ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।”
সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য: “এই যে এত ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে, সেই দুর্নীতির অন্যতম নায়ক মানিক ভট্টাচার্য। তদন্তে তদন্তকারী সংস্থাকে সহযোগিতা করা সকলের নৈতিক দায়। মানিক ভট্টাচার্য গ্রেফতারি এড়াতে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন। সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল তদন্তে সহযোগিতা করতে। তাও তিনি সহযোগিতা করেননি। তারপর তো তাঁকে গ্রেফতার করা ছাড়া অন্য কোনও পথ ছিল না। মুশকিলটা হল এখনও তাঁরা সত্যিটা বলছেন না। এই যে টাকা দিয়ে নিয়োগ, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা কোথায় হয়েছে সেটা বলছেন না। তা না জানা পর্যন্ত তদন্তও শেষ হবে না। আর সে কারণে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। সে কারণে হেফাজতেও নিতে হবে।”