সৌরভ দত্ত, কলকাতা: বাংলার দৈনিক সংক্রমণের গ্রাফ নেমে এসেছে দেড় হাজারে। ফলে সংক্রমণের হার যে কমছে তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। কিন্তু এর মধ্যেও চিন্তায় রেখেছে ‘সাইলেন্ট স্প্রেডাররা’। অর্থাৎ, যারা করোনা আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও উপসর্গহীন। তারাই আরও একবার সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের জন্য দায়ী হতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই কারণে উপসর্গহীনদের হার বুঝতে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে সমীক্ষার তোড়জোড়। কোভিড গ্লোবাল অ্যাডভাইজারি বোর্ডের পরামর্শ মেনেই এই সমীক্ষা করানো হবে।
পশ্চিমবঙ্গে এই মুহূর্তে করোনার যে প্রজাতি জাল বিস্তার করেছে, তা ঠিক কতটা ছোঁয়াচে, এই সংক্রমণের ক্ষমতাই বা কতটা, সেটা বুঝতেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে রাজ্যের পক্ষ থেকে। মূলত ৪ টি ভাগে প্রতি মাসে মোট ৪০০ জন ব্যক্তির উপর সমীক্ষা চালানো হবে। প্রথম ভাগে রয়েছেন রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালের বহির্বিভাগে দেখাতে আসা রোগীরা। দ্বিতীয় স্তরে রয়েছেন সন্তানসম্ভবা মায়েরা। তৃতীয় স্তরে সরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের জন্য আসা রোগীরা। চতুর্থ পর্যায়ে গোষ্ঠী স্তরে এই সমীক্ষার পরিকল্পনা করা হয়েছে। কোন স্তরে কতজনের মধ্যে সমীক্ষা হবে, কোথায় কোথায় সমীক্ষা হবে সে বিষয়ে এখন প্রোটোকল তৈরির কাজ চলছে। সকলের ক্ষেত্রেই আরটিপিসিআর টেস্ট করা হবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সমীক্ষার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।
এই সমীক্ষার তাৎপর্য যে অনেকাংশে গুরুত্বপূর্ণ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যান্য সেরো সার্ভের থেকেও এই সমীক্ষাও অনেকটাই আলাদা। সেরো সার্ভে সাধারণত করা হয় কোনও শহর বা রাজ্যের ঠিক কত শতাংশ মানুষ কোভিডে আক্রান্ত বা কতজনের শরীরে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি তৈরি হয়েছে তা জানতে। কিন্তু, এ ক্ষেত্রে রাজ্যে উপসর্গহীনদের হারটা ঠিক কেমন, তা জানতে এই সমীক্ষা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এই সমীক্ষার ফলের উপর নির্ভর করে আগামিদিনে সংক্রমণ মোকাবিলার রূপরেখা তৈরি করতে চাইছে নবান্ন।
আরও পড়ুন: এই কোড না থাকলে ভ্যাকসিন নেবেন না, টিকা সঙ্কটের মাঝেই সতর্কবার্তা ফিরহাদের
উল্লেখ্য, গত বছর রাজ্যে কোভিড সংক্রমণ ঠেকানোর রোডম্যাপ বানাতে গ্লোবাল অ্যাডভাইজারি বোর্ড গঠন করে রাজ্য সরকার। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই কমিটি গঠন করা হয়। ডা. অভিজিৎ চৌধুরী, ডা. সুকুমার রায়ের মতো বিশিষ্ট চিকিৎসকও এই বোর্ডে রয়েছেন। তাঁদের পরামর্শ মেনেই এ বার এই সমীক্ষা চালানো হবে গোটা রাজ্যজুড়ে।
আরও পড়ুন: ‘ভারতের ভ্যাকসিনকে মান্যতা দেওয়া হোক, নয়তো…’, ইউরোপীয় ইউনিয়নকে হুমকি কেন্দ্রের