সিজার মণ্ডল ও সুজয় পালের রিপোর্ট
কলকাতা: এর আগে কলকাতা পুলিশ আর তারপর সিবিআই। উভয়েরই বক্তব্য এক, আরজি করের ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারই ধর্ষক ও খুনি। সোমবার শিয়ালদহ কোর্টে চার্জশিট জমা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী গোয়েন্দা সংস্থা। সেখানেই গোয়েন্দারা উল্লেখ করেন, মূল অভিযুক্ত হিসাবে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম। অভিযুক্ত সিভিকের ভলান্টিয়রের বিরুদ্ধে একাধিক ধারা যুক্ত করা হয়েছে।
সিবিআই সূত্রে খবর, ভারতীয় ন্যায় সুরক্ষা সংহিতার ৬৪ নম্বর ধারা অর্থাৎ ধর্ষণ। ভারতীয় ন্যায় সুরক্ষা সংহিতার ৬৬ নম্বর ধারা অর্থাৎ ধর্ষণের জেরে খুন। এই ধারা প্রমাণ হলে কুড়ি বছরের কারাবাস বা জেলে স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত কারাবাস কিংবা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। ভারতীয় ন্যায় সুরক্ষা সংহিতার ১০৩ (১) ধারা অর্থাৎ খুন। এই ধারা প্রমাণ হলে আমৃত্যু কারাবাস কিংবা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে।
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার যায় সিবিআই-এর হাতে। মামলার দায়ভার নেওয়ার ৫৫ দিনের মাথায় এবার শিয়ালদহ কোর্টে চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। চার্জশিটটি ২১৩ পাতার। সেখানে ২০০জন সাক্ষীর কথা উল্লেখ করেছে সিবিআই।সেই সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই মূল অভিযুক্ত হিসাবে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের কথা উঠে আসছে।
সিবিআই এফআইআর করেছিল ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ ( ধর্ষণ) এবং ১০৩ (১) খুনের ধারায়। তবে চার্জশিট দিল ৬৪ ( ধর্ষণ) , ৬৬ ( ধর্ষণ করতে গিয়ে কাউকে হত্যা বা তাকে মৃতপ্রায় (vegetative state) করলে। সেই সঙ্গে ১০৩ (১) খুনের ধারায়। চার্জশিটে উল্লেখ রয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি সেমিনার রুমে পৌঁছে তিলোত্তমাকে দেখে । তারপরেই ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাধা পেয়ে উপুর্যপরি আঘাত করে যার ফলে নির্যাতিতা ভেজটেটিভ অবস্থায় অর্থাৎ প্রায় মৃতপ্রায় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। সেই অবস্থায় ধর্ষণ করা হয়। অর্থাৎ সিবিআই গণধর্ষনের কোনও ধারা যুক্ত করল না এক্ষেত্রে।
ঘটনাস্থলে আর কারুর উপস্থিত থাকা এবং খুন ধর্ষণ কাণ্ডে সিভিক ছাড়া আর কারোর যোগ খারিজ এই চার্জশিট অনুযায়ী। কলকাতা পুলিশ প্রথমেই জানিয়ে ছিল vegetative state অর্থাৎ পেরি মর্টেম অবস্থায় ধর্ষণ, সেটাও উল্লেখ সিবিআই চার্জশিটে। অভিযুক্ত সিভিক মত্ত অবস্থায় ছিল। সে বিকৃত যৌন প্রবৃত্তি এবং মানসিক বিকৃতি আছে সেটাও উল্লেখ সিবিআই চার্জশিটে। মোট ১২৮ জনের বয়ান রেকর্ড করার কথা উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। তার মধ্যে ৫৭ জনকে সাক্ষী করছে সিবিআই।