AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Calcutta High Court: ‘পিঠ বাঁচানোর স্কিম ছিল’, ভাতার উপর হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিতেই বললেন ফিরদৌস শামিম

Calcutta High Court: ফিরদৌস শামিম বলেন, "দুর্নীতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেটা করা যায় না। কারণ, এই টাকা জনগণের করের টাকা। আসলে এই টাকা দিয়ে ওদের মুখ বন্ধ করতে চাইছে। কারণ, সিবিআইয়ের উপর একটা নির্দেশ ছিল। যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, প্যানেলের মেয়াদ শেষে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, চাইলে সিবিআই তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে।"

Calcutta High Court: 'পিঠ বাঁচানোর স্কিম ছিল', ভাতার উপর হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিতেই বললেন ফিরদৌস শামিম
ফিরদৌস শামিমImage Credit: TV9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Jun 20, 2025 | 12:30 PM
Share

কলকাতা: চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের পরই রাজ্যকে কটাক্ষ করলেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। তিনি বলেন, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের ভাতা দিতে চেয়েছিল রাজ্য। দুর্নীতিতে জড়িত আরও অনেকের নাম যাতে প্রকাশ্যে না আসে, সেজন্য রাজ্য ঘুরপথে ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তিনি মন্তব্য করেন।

আদালতের এদিনের নির্দেশের পর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “রাজ্যের সিদ্ধান্তটা ছিল শিক্ষাকর্মীদের জন্য। সাদা খাতা জমা দিয়ে যাঁরা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডির চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের কেন টাকা দেওয়া হবে? ফলে আজ উভয়পক্ষের সওয়াল শুনে রাজ্যের এই সিদ্ধান্তে হাইকোর্ট অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে। ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকার হলফনামা দেবে। তার জবাবে আমরা ২ সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দেব। তারপর মামলাটি আবার শুনানি হবে।”

রাজ্যকে আক্রমণ করে তাঁর বক্তব্য, দুর্নীতির পাশে দাঁড়াতেই এই ভাতা ঘোষণা করা হয়েছিল। তাঁর কথায়, “পর্বত প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে। এই যে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে, তার সঙ্গে অনেকেই জড়িত রয়েছেন। তার মধ্যে সরকারি আধিকারিক যেমন রয়েছেন, মন্ত্রিসভার সদস্যও রয়েছেন। যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার নির্দেশ ছিল। রাজ্য সরকার এখনও পর্যন্ত কোনও টাকা আদায়ের কোনও পদক্ষেপ করেনি। কীভাবে টাকা আদায় করতে হবে, বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ সেকথা জানিয়েছিলেন। তখন জেলাশাসকের উপর নির্দেশ ছিল, ল্যান্ড রেভিনিউ হিসেবে সেই টাকাগুলো আদায় করতে হবে। এখনও পর্যন্ত সেই নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি।”

হাইকোর্টের নির্দেশের কারণ ব্যাখ্যা করে ফিরদৌস শামিম বলেন, “দুর্নীতিগ্রস্তদের টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যেটা করা যায় না। কারণ, এই টাকা জনগণের করের টাকা। আসলে এই টাকা দিয়ে ওদের মুখ বন্ধ করতে চাইছে। কারণ, সিবিআইয়ের উপর একটা নির্দেশ ছিল। যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, প্যানেলের মেয়াদ শেষে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, চাইলে সিবিআই তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। এদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, আরও অনেকের নাম বেরিয়ে আসতে পারে। তাই মুখ বন্ধ করার জন্য ঘুরপথে টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এটা পিঠ বাঁচানোর স্কিম ছিল।” যাঁরা বঞ্চিত, রাস্তায় বসে রয়েছেন, তাঁরা কেন ভাতা পাবেন না, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর রাজ্য এখন আর ভাতা দিতে পারবে না বলে তিনি জানান।

প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের SSC প্যানেলের প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি যায়। পরে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আবেদন মেনে ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত চাকরি করার অনুমতি দেয় শীর্ষ আদালত। তবে গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীরা স্কুলে যোগ দিতে পারবেন না। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর রাজ্য সিদ্ধান্ত নেয়, চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়া হবে। চাকরিহারা গ্রুপ সি কর্মীদের মাসে ২৫ হাজার টাকা ও গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাজ্যের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে মামলা হয়। সেই মামলায় এর আগে বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন তুলেছিলেন, যদি বাড়িতে বসে চাকরিহারারা ভাতা পান, তাহলে বেকাররা কেন ভাতা পাবেন না? এরপর এদিন রাজ্যের সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল হাইকোর্ট।