কলকাতা: রেশন দুর্নীতি মামলায় তল্লাশি চালানোর প্রায় এক বছর দু’মাস পরে গ্রেফতারি নিয়ে বিচারকের প্রশ্নের মুখে ইডি। এদিনই রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্তে ২ চালকল মালিক ও এক চাটার্ড অ্যাকাউন্টটেন্টকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। এদিনই তাঁদের আদালতে তোলে ইডি। সেখানেই একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখে পড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তিনজনকে সামনে রেখেই ইডি-র আইনজীবী বলেন, এরা রেশন মামলায় অভিযুক্ত। গত ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং ডিজিটাল এভিডেন্স বাজেয়াপ্ত করা হয়। এখানেই প্রশ্ন তোলেন বিচারক। কেন এক বছর পর গ্রেফতারি, সেই প্রশ্ন তোলা হয়। যদিও ইডির আইনজীবীর দাবি, এটা সময় সাপেক্ষ তদন্ত। সে কারণেই ১০ দিনের জন্য হেফাজতে চাই।
পাল্টা যুক্তি দেন অভিযুক্তদের আইনজীবী। এক বছর আগে তল্লাশি চালানোর পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। কিন্তু, এখন গ্রেফতার কেন, গ্রেফতারির পিছনে কী কারণ? ৩০ বার ইডি-র অফিসে গেলেও এতদিন পর কেন করা হল অ্য়ারেস্ট। বারবার সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি। এরপরই পাল্টা ইডির দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন বিচারক। What prompted you to one year ago? শেষ এক বছরে আপনারা একাধিক চার্জশিট দিয়েছেন, সেখানেও তো কিছুই বলেননি। এখন গ্রেফতার কেন? প্রশ্ন বিচারকের।
পাল্টা ইডি-র আইনজীবী বলেন, সম্প্রতি রেশন দুর্নীতি মামলায় অভিযান চালানো হয়। সেই সময় যে সমস্ত নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়, তাতে দেখা গেছে চাল কল মালিক সুব্রত ঘোষের চাল কল থেকে সরকারি ধান প্রক্রিয়াকরণ এবং চাল বিক্রির টাকা তছরূপের পর তা গিয়েছে বালুর তিন সংস্থায়। অন্যদিকে ব্যবসায়ী হৃতেশ চন্দকের সংস্থা থেকে বালুর কাছে টাকা গিয়েছে। অভিযানে একটি মেরুন ডায়েরি পাওয়া গিয়েছিল সেখানে বালুকে পেমেন্ট করা হয়েছে উল্লেখ ছিল। হৃতেশ নিজেও মিল মালিক। আদালতে তুলে ধরে ইডি।
পাল্টা বিচারক বলেন, আমি দেখতে চাই এই সংক্রান্ত কী এমন নথি পেয়েছেন আপনারা। তা শুনে ইডি-র আইনজীবী বলে ওঠেন, এদের মধ্যে একজন চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট। উনি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কোম্পানির যাবতীয় অ্যাকাউন্ট উনি দেখভাল করতেন। উনি হচ্ছেন এই মামলার একজন অন্যতম প্লেয়ার। যা দেখে বিচারকের পর্যবেক্ষণ, এটা একটা ইউনিক কেস, যেখানে গ্রেফতারির এক বছর আগে নথি সংগ্রহ হয়েছে। ইডির দাবি, চাটার্ড অ্যাকান্ট্যান্ট শান্তনু ভট্টাচার্য বালুর হয়ে সমস্ত হিসেবে-নিকেশ রাখতেন। এমনকি দুর্নীতির টাকা তাঁর কাছেও গিয়েছে। ইতিমধ্যে ইডিকে উনি ২.৪ কোটি টাকা ডিমান্ড ড্রাফট করে ফেরত দিয়েছেন কারণ ওটা বালুর টাকা। ইডি-র আরও দাবি, শান্তনু সাতটি সংস্থা তৈরি করেছিল, যেখানে বালুর ১৮ কোটি টাকা ঘুরপথে লেনদেন হয়েছে।