প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ: ক্রিকেট ম্যাচের ড্রেসিংরুমে কান পাতলে শোনা যায় ‘ব্যাট প্যাড আপ’। সে শব্দ হয়ত সরাসরি শোনা যাচ্ছে না বিজেপি (BJP) পরিষদীয় দলের অন্দরে। কিন্তু ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে মাঠে গেলেই যেমন ক্রিকেটারকে প্রয়োজনীয় সব কিছু মাথায় রাখতে হয়। তেমনই করতে হচ্ছে বিজেপি বিধায়কদের। মঙ্গলবার সে রকম দৃশ্যই দেখা গেল বিধানসভায় (Bidhan Sabha)।
এদিনই বিধানসভার কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন আট বিজেপি বিধায়ক। এঁরা হলেন কৃষ্ণা কল্যাণী, মনোজ টিগ্গা, নিখিল রঞ্জন দে, বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা, দীপক বর্মন, মিহির গোস্বামী, আনন্দময় বর্মন এবং অশোক কীর্তনিয়া। তাঁরা এসেছিলেন নিজেদের পোশাকে। কারও গলায় ছিল না কোনও গেরুয়া উত্তরীয়। কিন্তু ক্ষনিকের আলোড়ন, কয়েক মুহূর্তের মধ্যে স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে যাওয়ার আগে আট বিধায়কের গলাতেই দেখা গেল ট্রেডমার্ক গেরুয়া উত্তরীয়।
তা কোথায় ছিল উত্তরীয়? বিধানসভায় বিধায়কদের সামগ্রী রাখার বাক্স রয়েছে। সেখানেই ছিল গেরুয়া উত্তরীয়। কারও কারও উত্তরীয় রাখা ছিল নিজের গাড়িতে। কিন্তু এতক্ষণ কেন তা গায়ে দেখা যায়নি? এক বিধায়কের সহাস্য জবাব, “মাঠে নামার আগে ব্যাট-প্যাড এবং জার্সি, সব পরে নিতে হয়। নেট প্র্যাক্টিসে কী সব পরতে হয়?”
তবে গেরুয়া তিলক অবশ্য দেখা যায়নি। তা নিয়ে কিঞ্চিৎ ‘না খুশ’ বিজেপি পরিষদীয় দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বিষয়টি তাঁর মনোভাব, ‘বিশেষ বিশেষ দিনে আমাদের তিলকটা পরতে হবে।’
কেন বিশেষ দিন? বিজেপি বিধায়কদের মতে, মঙ্গলবার যে ভাবে দলের বিধায়করা বিধানসভার চেয়ারম্যান থেকে গণ ইস্তফা দিলেন, তা রাজ্যের পরিষদীয় রাজনীতির আন্দোলনে নবতম সংযোজন। আর এক্ষেত্রে কৃতিত্বের অধিকারী শুভেন্দু। সে কথা প্রকাশ্যেই হাসি মুখে ঘোষণা করেন দলের নাটাবাড়ির বিধায়ক মিহির গোস্বামী।
যদিও তাঁর অধিকার শুধু তাঁর নয়, তা স্পষ্ট জানিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। তিনি বলছেন, “সবাই বসে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত (পদত্যাগ করা) নেওয়া হয়েছে। এটা বিজেপি বলেই সম্ভব হয়েছে।”
আর সেই বিশেষ দিনে বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের ‘ড্রেস কোড’ থাকবে না, তা হয় নাকি? যেমন ম্যাচে নামলে ক্রিকেটার প্রস্তুত থাকেন, এ ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছে। আগামীতে তাই বিশেষ দিনে তিলক অবশ্যই অগ্রাধিকার পাবে, জানালেন বিধায়করা। আরও পড়ুন: বিধানসভার আট কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা বিজেপি বিধায়কদের