কলকাতা: বাইক নিয়ে রেষারেষির মধ্যেই খাস কলকাতায় চলেছে গুলি। শনিবার মধ্যরাতের ঘটনায় এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে ধড়পাকড়। চারজনকে গ্রেফতার করা হলেও এখনও অধরা মহম্মদ ফইউদ্দিন ওরফে সোনা। তিনিই এই গুলি-কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত। তাঁর নামেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এই সোনা আসলে শহরের কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের মধ্যে অন্যতম।
সেই ১৯৮৬ সালে অপরাধ জগতে হাতেখড়ি হয় ফইউদ্দিন ওরফে সোনার। ওয়েলেসলি সেকেন্ড লেনের কুখ্যাত গ্যাংস্টার আখতার মেহমুদের হাত ধরে অন্ধকার জগতে পা দেয় সোনা। ওই একই সময়ে রশিদ আলম ওরফে গব্বরও ওই দলেই যোগ দেয়। পরে গব্বর এবং সোনা মিলে গ্যাং তৈরি করে।
এক সময় কলকাতার অপরাধ দুনিয়া নাকি চলত গব্বরের দাপট আর সোনার বুদ্ধি নিয়ে। এই দু’জন গোটা মধ্য কলকাতা, দক্ষিণ এবং পূর্ব কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দাপিয়ে বেড়াত। খাদিম কর্তা পার্থ রায় বর্মনের অপহরণ মামলাতেও ‘ওয়ান্টেড’ হিসেবে নাম ছিল সোনার। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এই সোনাই খাদিম কর্তার গতিবিধি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করেছিল।
১৯৯৭ এবং ১৯৯৮ সালে পর পর দু’বার গ্রেফতার হয় সোনা। বাদশা এবং সাদিক খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল তাকে। জানা যায়, এরপর নাকি সোনা গব্বরের দল ছেড়ে তিলজলার চুন্নু মিঞার সঙ্গে যোগ দেয়।
তোলাবাজি, রিয়েল এস্টেট ব্যবসার পাশাপাশি ড্রাগ কারবারেও নাম রয়েছে সোনার। পরে মধ্য কলকাতা থেকে তিলজলার সাপগাছি লেনে নিজের ডেরা সরিয়ে নেয় সোনা। সাম্প্রতিককালে সে নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে। কিন্তু পুলিশের অনুমান, মাদকের ব্যবসা এবং রিয়েল এস্টেটের তোলাবাজি এখনও চালাচ্ছে সোনা। মাঝে সে বেআইনি কল সেন্টার ব্যবসা থেকেও মোটা তোলা আদায় করেছে বলে খবর।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, সোনার আদি বাড়ি বিহারের দ্বারভাঙায়, শ্বশুরবাড়ি সাসারামে। বছর ২৫ আগেই সোনার সম্পত্তি ছিল কোটি টাকার বেশি। কলকাতার অপরাধ জগতে তাকে ‘কনভেন্টে পড়া গ্যাংস্টার’ বলে চেনে অনেকেই। ইদানিংকালে শাসক দলের পাড়া স্তরের মিটিং মিছিলেও দেখা গিয়েছে তাকে।