কলকাতা : রাজ্যের বিভিন্ন জঙ্গলে চলছে ‘পুষ্পা’-রাজ। সাফ হয়ে যাচ্ছে দামি গাছ (Wood Smuggling)। প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সক্রিয় চোরাচালানকারীরা। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি কিংবা সুন্দরবন, গাছ কেটে পাচারের সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু, কেন তা আটকাতে পারছে না বনদফতর। তার খোঁজ করতে গিয়েই বেরিয়ে এল বনদফতরের অসহায় অবস্থার ছবি। চোরাচালানকারীদের মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত কর্মী নেই দফতরের। ফাঁকা পদের সংখ্যা চোখে পড়ার মতো।
টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধিরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার কাঠ পাচারের ছবি তুলে ধরেছেন। দেখা যাচ্ছে, কোথাও নদীতে ভাসিয়ে কাঠ পাচার হয়। সেই কাঠ তুলে নদীর ধারে গড়ে ওঠা চেরাই কলগুলিতে চেরাই হচ্ছে। তারপর পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। কোথাও আবার দিনের আলোয় গাছ চিহ্নিত করা হচ্ছে। অন্ধকার নামলেই ওই গাছ কাটা হচ্ছে। সুন্দরবনে আবার ভেড়ি তৈরি করতে, কিংবা নদীর তট দখল করতে ধ্বংস করা হচ্ছে ম্যানগ্রোভ।
দিনে রাতে অবাধে চলছে চোরাচালান। প্রশ্ন উঠছে, বনদফতরের নজরদারি কোথায়? পরিবেশকর্মীরা বলছেন, সর্ষের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে ভূত। সত্যিই কি তাই? তার খোঁজ করতে গিয়ে বেরিয়ে এল বনদফতরের অসহায় অবস্থার ছবি। যেন ‘ঢাল নেই, তরোয়াল নেই, নিধিরাম সর্দার’।
বনদফতরের পরিসংখ্যান বলছে, জলপাইগুড়ি ডিভিশনে ১৪টি রেঞ্জ অফিস ও ৩৩টি বিট অফিস রয়েছে। ১৯ বিট অফিসারের পদ শূন্য। ফরেস্ট গার্ডের ৬২ পদে লোক নেই। গরুমারা ডিভিশনের অবস্থাও তথৈবচ। সেখানে ১৩টি রেঞ্জ অফিস ও ২২টি বিট অফিস রয়েছে। ১৮ বিট অফিসারের পদ শূন্য। ফরেস্ট গার্ডের ৬১টি পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এতগুলি পদে কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় চোরাচালানকারীদের মোকাবিলা করা সবসময় সম্ভব নয় বলে বনদফতরের যুক্তি। তাদের বক্তব্য, কাঠ পাচারের খবর কানে গেলেও তাদের ডেরায় পৌঁছতে পৌঁছতেই সাফ হয়ে যাচ্ছে চোরাপাচারের সব চিহ্ন।
তারপরও প্রশ্ন উঠছে, চোরাচালানের বিষয়টি জানা সত্ত্বেও কেন আরও উদ্যোগী হচ্ছে না বনদফতর। এভাবে চললে কি বাঁচানো যাবে সবুজ বনানীকে? কীভাবেই বা বন্ধ করা যাবে চোরাচালান? উত্তর নেই বনদফতরের কাছেও।
আরও পড়ুন : Moynaguri Minor Harassment: ‘CBI না আসা পর্যন্ত সরবে না দেহ’, ধনুকভাঙা পণ নির্যাতিতার বাবার, আর্জি কোর্টেও