গোয়াতে তৃণমূলের জয় নিয়ে নিশ্চিত বাবুল (ফাইল ছবি)
কলকাতা: তৃণমূলে (TMC) যোগ দিয়েই সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। কিন্তু তার পর দু সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। এখন সময় চাইলেও, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছ থেকে সময় দেওয়া হচ্ছে না। তাই সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারছেন না তিনি। এমনই অভিযোগ করে টুইট করলেন বিজেপি-ত্যাগী সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। যদিও কোনও সময় চাওয়া হয়নি। সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে তিনি যোগাযোগ করেননি। লোকসভা সূত্র উদ্ধৃত করে এমনটাই জানাচ্ছে সংবাদ সংস্থা এএনআই। সব মিলিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের পরই সংসদ পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেবেন বলে জানিয়ে ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। এ জন্য গত সপ্তাহে দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ব্যস্ত থাকায় তাঁর সময় পাননি বাবুল। তিনি দু বার চেষ্টা করেও স্পিকারের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি বলে দাবি বাবুলের। অন্যদিকে সংবাদ সংস্থা এএনআই লোকসভার একটি সূত্র উদ্ধৃত করে জানাচ্ছে, আবেদন করা হয়নি।
এই প্রেক্ষিতে নিজের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে একটি টুইটে স্পিকারকে দেওয়া তাঁর চিঠি তুলে ধরেন বাবুল। কিন্তু সেখানেও বিতর্ক। তিনি গত ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর স্পিকারের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন জানিয়ে একটি চিঠির ছবি টুইটারে পোস্ট করেন বাবুল। কিন্তু চিঠির প্রাপ্তিস্বীকারের প্রমাণ স্বরূপ স্পিকারের সই ও তারিখ লেখা থাকলেও কোনও সিল পাওয়া যায়নি। যা নিয়ে বেঁধেছে আরেক বিতর্ক।
এ নিয়ে বাবুলের সাফাই, “আমরা বলতে পারি না কেন স্ট্যাম্পটি নেই। তবে আমি আপনাকে বলতে চাই যে মাননীয় স্পিকারের উচ্চ পদে থাকা কাউকে স্ট্যাম্প লাগানোর জন্য অনুরোধ করাও সৌজন্যপূর্ণ নয়। যখন কেউ সেখানে স্বাক্ষর তারিখ, সময়, স্থান এবং পিএল নম্বর উল্লেখ করে চিঠিটি পাচ্ছেন।”
বাবুল আরেক টুইটে জানিয়েছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে সময় চেয়েছেন সাক্ষাতের। তা পেলেই তিনি ইস্তফা দেবেন সাংসদ পদ থেকে। কিন্তু বেশ কয়েকদিন হয়ে গেলেও বাবুল সুপ্রিয় ইস্তফা দেননি সাংসদ পদ থেকে। এই বিলম্বের কারণ হিসাবে টুইটারে বাবুল তুলে দিয়েছেন লোকসভার স্পিকারকে পাঠানো চিঠি, যা তিনি সাক্ষাতের সময় চেয়ে পাঠিয়েছেন। লিখেছেন, ‘মাননীয় স্পিকারের উচ্চ কার্যালয়ে আমি সাক্ষাতের সময় চেয়ে আমার চিঠি পাঠাই। স্যরের কার্যালয় থেকে সেই চিঠির একটি প্রাপ্তিস্বীকারও করা হয়েছে। আবারও একই অনুরোধ জানাচ্ছি। সাংসদ সৌগত রায়ও এই মর্মে একটি চিঠি দিয়েছেন।’
লোকসভার স্পিকারকে পাঠানো চিঠিটি টুইটারে তুলে দিয়ে বাবুল জানিয়েছেন, স্পিকারের তরফে সময় মেলেনি বলেই এখনও সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেননি। যদিও এ নিয়ে লোকসভার স্পিকারের অফিস থেকে সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। প্রসঙ্গত, গত ৩১ জুলাই বিজেপি ছেড়ে রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেওয়ার কথা ঘোষণা করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। জানিয়েছিলেন, ভবিষ্যতে অন্য কোনও দলে যোগ দেবেন না তিনি। কিন্তু তার পর ১৯ সেপ্টেম্বর শিবির বদল করে তৃণমূলে যোগদান করেন বাবুল। তাঁর এই পদক্ষেপে কার্যত অবাকই হয়েছিল বিজেপি শিবির। যদিও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা কমে যাওয়ার অব্যবহিত পর বাবুলের তৃণমূলে যোগদানকে ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। একটা সূত্রের খবর, কেউ কেউ হয়ত জানতেন যে বিজেপি ছাড়ছেন বাবুল।