কলকাতা : বিশ্ব ব্যাঙ্ক (World Bank) থেকে বড় অঙ্কের আর্থিক সাহায্য পেল রাজ্য। পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal Govt) জন্য প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার ঋণে অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। মূলত সামাজিক সুরক্ষা (Social Protection) সংক্রান্ত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্যই রাজ্য সরকারকে এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। বিশেষ করে রাজ্যে যখন একের পর এক সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় ভাতা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে, তখন এই বিশাল পরিমাণ টাকা কীভাবে আসবে, তা নিয়ে যথেষ্টই চাপের মধ্যে ছিল রাজ্য প্রশাসন। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব ব্যাঙ্কের এই অনুমোদন নিঃসন্দেহে রাজ্যের কোষাগারকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের পরই কার্যত কল্পতরু হতে দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিশেষ করে রাজ্যের মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছেন তিনি। চালু করেছেন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প। রাজ্যের মহিলাদের এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের আওতায় প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। আর তফসিলি জাতি ও উপজাতির মহিলাদের দেওয়া হচ্ছে ১০০০ টাকা করে। এর পাশাপাশি, ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্প তো রয়েছেই। আর শুধু মহিলারাই নন, সমাজের বিভিন্ন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে একগুচ্ছ ভাতা চালু রয়েছে রাজ্যে। আর এই ভাতাগুলির জন্য প্রয়োজন বিশাল অঙ্কের টাকা। রাজ্যের এই সামাজিক সুরক্ষামূলক প্রকল্পগুলির গুরুত্ব বিবেচনা করে বিশ্ব ব্যাঙ্কের তরফে এই ঋণ দেওয়া হচ্ছে। ১৯ জানুয়ারি, বুধবার এই ঋণে অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের ‘কমিউনিকে’ উল্লেখ করা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ‘জয় বাংলা’-র আওতায় প্রায় ৪০০ টিরও বেশি প্রকল্প চালু রয়েছে, সেগুলি বিভিন্ন সামাজিক সহায়তা, সুরক্ষা এবং চাকরির ব্যবস্থা করে। মূলত রাজ্যের কিছুটা পিছিয়ে পড়া সামাজিক গোষ্ঠী যেমন মহিলারা, বয়স্করা, তফসিলি জাতি ও উপজাতি এবং বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য এই প্রকল্পগুলি চালু রয়েছে। এর পাশাপাশি বিপর্যয়প্রবণ উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে যে কাজ করা হচ্ছে, সেই সংক্রান্ত বিষয়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে বিশ্ব ব্যাঙ্কের কমিউনিকে। একইসঙ্গে দুয়ার সরকার প্রকল্পের মাধ্যমে যেভাবে রাজ্যবাসীর নাগরিক পরিষেবা থেকে শুরু করে যাবতীয় সমস্যার সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়েছে, তারও উল্লেখ করেছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের এই ঋণ পাওয়ার ফলে রাজ্যবাসীর জন্য সামাজিক সুরক্ষা সংক্রান্ত পরিষেবা, টেলিমেডিসিন পরিষেবা, বয়স্ক ও বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য পরিষেবা এবং ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থায় আরও বেশি পরিমাণে নাগরিকদের অন্তর্ভুক্তিকরণের প্রকল্প আরও মসৃণ হবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জন্য।