কলকাতা: ২০২২ সালে রাজ্য রাজনীতিতে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হল রাজ্যের পুরভোট। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির (BJP) যে উল্কাগতির উত্থান ঘটেছিল, এক বছর হওয়ার আগেই তা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে রাজ্যের পুরভোটে (Municipal Election 2022)। রাজ্যের ১০৪টি পুরসভার নির্বাচনে কোথাও মাথা গোঁজার জায়গাই সেই অর্থে পায়নি বিজেপি। রাজ্যের বিধানসভা ভোটের নিরিখে প্রধান বিরোধী দল বিজেপি যেন কর্পূরের মতো উবে গেল পুরভোটে। কোথাও দাঁত ফোটানোর সুযোগটুকু পেল না। ৬৩ শতাংশেরও বেশি ভোটে সহজ জয় পায় তৃণমূল (TMC)। ফল প্রকাশের দিন দেখা যায়, ১০৮টি পুরসভার মধ্যে মাত্র ছ’টি তৃণমূলের নাগালের বাইরে থাকল। দার্জিলিং, তাহেরপুর, এগরা, বেলডাঙা, ঝালদা ও চাঁপদানি – এই ছয়টি বাদে বাকি সর্বত্র সবুজ সুনামি।
সেই তুলনায় মন্দের ভাল ফল করেছে বামেরা। নদিয়ার তাহেরপুর পুরসভা নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছিলেন লাল পতাকার ধারক-বাহকরা। ১৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮টিতেই জয়ী বাম। বাকি পাঁচটিতে তৃণমূল। পুরভোটের ফল ঘোষণার দিন যখন গোটা রাজ্যে সবুজ আবির উড়ছে, তখন লাল আবিরে মাখামাখি তাহেরপুর। পুরভোটের এই ফলাফলের উপর ভর করে আগামীর পঞ্চায়েতে বামেদের কতটা হাল ফিরবে বলা মুশকিল, তবে ভোট শতাংশের নিরিখে হাল তো কিছুটা ফিরেছে অবশ্যই। বিধানসভায় শূন্য হয়ে যাওয়া বাম শিবির ভোট শতাংশের নিরিখে পুরভোটে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে। প্রায় ১৪ শতাংশ ভোট পেয়েছিল বামেরা। সেখানে বিজেপি পেয়েছিল ১৩ শতাংশ।
ভোট শতাংশের হিসেবে থেকেই বোঝা যাচ্ছে, পুরভোটে কতটা ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। একটি পুরসভাও নিজেদের দখলে রাখতে পারেনি তারা। ভোটের ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পর বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অবশ্য সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছিলেন, ‘যেভাবে এই নির্বাচন হয়েছে, তাকে কি নির্বাচন বলা যায়?’ অর্থাৎ, নির্বাচন যে অবাধ হয়নি, সেই তত্ত্বকেই খাঁড়া করার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু তারপরও যেগুলি বিজেপির শক্ত ঘাঁটি, সেগুলিতে? এই যেমন কাঁথি পুরসভার কথাই ধরা যাক। সেখানে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে শান্তিকুঞ্জ, অধিকারী পরিবারের বাসস্থান। সেই ১৫ নম্বর ওয়ার্ডেও তৃণমূলের কাছে হেরে গিয়েছিল বিজেপির প্রার্থী।