তামিলনাড়ু: ধর্মীয় যাজক জর্জ পুনিয়ার মন্তব্যে আঘাত হয়েছে ধর্মীয় ভাবাবেগে, জানাল মাদ্রাজ হাইকোর্ট (Madras High Court)। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় সাতটি এফআইআর হয়। হাইকোর্টে সে সব এফআইআর বাতিলের আর্জি জানিয়েছিলেন জর্জ পুনিয়ার আইনজীবী। এদিন ৪টি এফআইআর বাতিল করে বিচারপতি জি আর স্বামীনাথনের মাদুরাই বেঞ্চ জানায়, পুনিয়ার বক্তব্যে যথেষ্ট বিদ্বেষমূলক উপাদান রয়েছে।
২০২১ সালে ১৮ জুলাই প্রয়াত সমাজকর্মী স্ট্যান স্বামীর উদ্দেশ্যে একটি শ্রর্দ্ধার্ঘ অনুষ্ঠানের আয়োজিত হয়। অতিথি হিসাবে ছিলেন যাজক জর্জ পুনিয়া। এ দিন বক্তৃতা দেওয়ার সময়, হিন্দুত্বের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাজ্যের ডিএমকে সরকারের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দেন জর্জ পুনিয়া। তিনি ‘ভারত মাতা’ ও ‘ভূমা দেবীকে’ নিয়ে করুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। তারপরই আইপিসি-র একাধিক ধারায় এবং মহামারী আইনে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্রবার মাদ্রাজ হাইকোর্ট জানায়, যে কোনও সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভাবাবেগ এবং বিশ্বাসে আঘাত আনা যায় না। জর্জ পুনিয়ার মন্তব্য বিদ্বেষপূর্ণ বলে অভিহিত করে আদালতের পর্যবেক্ষণ, সব হিন্দু তাঁর এই মন্তব্যে প্রতিবাদ জানাবে এমনটা নয়, কিন্তু সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত আনলে সেই মন্তব্যকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫এ ধারায় অপরাধ বলে গণ্য করা হবে।
বিচারপতি আর স্বামীনাথন জানান, ‘ভারত মাতা’ শব্দের সঙ্গে একটা বড় অংশের হিন্দু সম্প্রদায়ের গভীর আবেগ জড়িত রয়েছে। দেশের পতাকা এবং সিংহের সঙ্গে দেবী হিসেবে পুজো করেন তাঁরা। এমনকী, সাহিত্যিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘আনন্দমঠ’ উপন্যাস থেকে ‘বন্দে মাতারম’ কবিতা উল্লেখ করে ‘ভারত মাতার’ গুরুত্ব বোঝান বিচারপতি।
উল্লেখ্য, পুনিয়ার বক্তব্যের ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর গত ২৪ জুলাই ক্ষমা চেয়ে নিয়ে দাবি করেন তাঁর ভিডিয়ো বিকৃত করা হয়েছে। তাঁর দাবি, ওই ভিডিয়ো বিকৃত করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মের উপর মন্তব্যগুলো দেখানো হয়েছে। তবে, এ ধরনের মন্তব্য আর কোনওদিন করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেন জর্জ পুনিয়া।
আরও পড়ুন- মুখ্যমন্ত্রী বাদে বাড়ির সবাই করোনা আক্রান্ত, স্বাস্থ্যমন্ত্রীও একান্তবাসে