রাঁচি: কংগ্রেস সাংসদ ধীরজ সাহুর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩৫৪ কোটি টাকা। এখনও তল্লাশি অব্যাহত। এর মধ্যে সোমবার কলকাতায় এক মদ প্রস্তুত সংস্থার ডিরেক্টর উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের দুটি বাড়িতে একযোগে তল্লাশি চালিয়েছে আয়কর দফতর। তার আগে হুগলির পোলাবাতেও এক মদ প্রস্তুত সংস্থায় তল্লাশি চলেছে। যদিও কেন তল্লাশি, এই তল্লাশিতে কী উদ্ধার হয়েছে তা স্পষ্ট করেননি আয়কর-কর্তারা। তবে ঝাড়খণ্ডে উদ্ধার হওয়া কালো টাকার সঙ্গে বাংলার যোগসূত্র থাকার জল্পনা জোরাল হচ্ছে। কংগ্রেস সাংসদের কালো টাকার সঙ্গে বাংলার এই সকল মদ প্রস্তুতকারক সংস্থা ও সংস্থার আধিকারিকদের যোগসূত্র থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঝাড়খণ্ডে উদ্ধার হওয়া কালো টাকার সঙ্গে বাংলার যোগ
ঝাড়খণ্ডে উদ্ধার হওয়া কালো টাকার সঙ্গে বাংলার কীভাবে যোগ থাকতে পারে, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু, ধীরজ সাহুর বাড়ি থেকে কালো টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি বাংলায় দুই মদ প্রস্তুতকারক সংস্থার আধিকারিকদের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালায় আয়কর দফতর। সোমবার কলকাতার এক মদ প্রস্তুতকারক সংস্থার আধিকারিক উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ের সার্দান অ্যাভিনিউ ও কল্যাণীর বাড়িতে একযোগে তল্লাশি চালান আয়কর আধিকারিকেরা। হঠাৎ করে আয়কর দফতরের এই তল্লাশি অভিযান নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
এছাড়া হুগলির পোলবায় মদ প্রস্তুতকারক সংস্থাটিতে তল্লাশি অভিযান চালানোর পরই আয়কর আধিকারিকেরা বলেছিলেন, একটা বড় কোনও চক্রান্ত চলছে। সেই তল্লাশি অভিযানের কয়েকদিন পরই ধীরজ সাহুর বাড়িতে হানা দেন আয়কর আধিকারিকেরা। যা বিশেষ তাৎপর্যমূলক।
আয়কর গোয়েন্দাদের তরফে আরও জানা গিয়েছে, ধীরজ সাহুর মূল কোম্পানির ঠিকানা হচ্ছে কলকাতা। কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় সাহু পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে কোম্পানিগুলি রয়েছে। এই কোম্পানিগুলির মাধ্যমেই কালো টাকা সাদা করা হত বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। স্বাভাবিকভাবেই কংগ্রেস সাংসদের বাড়ি থেকে বিপুল টাকা উদ্ধারের ঘটনার সঙ্গে নাম জড়িয়ে গিয়েছে বাংলার।
এদিকে, গত ৬ ডিসেম্বর ধীরজ সাহুর ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার বাড়িতে একযোগে হানা দেয় আয়কর দফতর। তারপর টানা ৫ দিন ধরে তাঁর বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালানোর পর বেরিয়ে এসেছে ৩৫৪ কোটি টাকা। এখনও তল্লাশি অভিযান শেষ হয়নি। মঙ্গলবার, ৭ দিনের মাথাতেও তল্লাশি অভিযান জারি রয়েছে। ফলে যা উদ্ধার হয়েছে তা কেবল হিমশৈলের চূড়া মাত্র। আরও অনেক রয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সবমিলিয়ে, গোটা পূর্ব ভারত জুড়েই কালো টাকার পাহাড় জমা রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। পাশাপাশি এই কালো টাকা দুর্নীতির সঙ্গে বাংলার কোনও প্রভাবশালী নেতা জড়িত কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। কেননা প্রভাবশালী ব্যবসায়ী না থাকলে এত বড় দুর্নীতি হওয়া সম্ভব ছিল না। তাহলে কি শিক্ষা দুর্নীতি, চাকরি দুর্নীতি, রেশন দুর্নীতির পর বাংলার আরও নতুন কোনও দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসবে? এমন আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।