তিরুঅনন্তপুরম: শ্বশুর (Father-In-Law) কোনও সম্পত্তি বা বাড়িতে আইনিভাবে জামাই (Son-In-Law) কখনই অধিকার নিতে পারে, বা তা অধিগ্রহণও করা যায় না। একটি পারিবারিক বিবাদ সম্পর্কিত মামলার শুনানি করতে গিয়ে সোমবার এমনটাই জানিয়ে দিয়েছে কেরল হাইকোর্ট (Kerala High Court)। বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে যদি জামাই অর্থ সাহায্যও করে থাকে, তাও এতে জামাইয়ের কোনও আইনি অধিকার থাকবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছে কেরলের হাইকোর্ট। কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি এন অনিল কুমার আবেদনকারী, অর্থাৎ জামাইয়ের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
আবেদন খারি করার বিচারপতি বলেন, “এ ক্ষেত্রে বাদী পক্ষ (শ্বশুর) সম্পত্তিতে অধিকার করে রয়েছেন। তাই আবেদনকারী (জামাই) কোনও ভাবে এই যুক্তিতে সম্পত্তি দাবি করতে পারেন না যে তাঁকে ওই পরিবার দত্তক নিয়েছে। বাদী পক্ষের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হলেই তা আইনিভাবে জামাইকে ওই সম্পত্তির অধিকার দেয় না। ওই বাড়ি নির্মাণের জন্য যদি আবেদনকারী নিজের অর্থ ব্যয় করে থাকেন, তাও আইনসঙ্গতভাবে শ্বশুরে সম্পত্তিতে জামাইয়ের কোনও অধিকার থাকে না।”
ঘটনার সূত্রপাত বেশ কয়েক বছর আগে। হাইকোর্টে মামলাকারী ব্যক্তির শ্বশুর নিজের সম্পত্তিতে (যা কিনা দলিল দ্বারা পাওয়া একটি উপহার বলে তিনি আদালতে দাবি করেছেন) জামাইয়ের প্রবেশাধিকারের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হন। জামাইয়ের প্রবেশে তাঁর শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে বলে আদালতে দাবি করেছিলেন তিনি। এই অবস্থায় নিজের স্বামীর জন্য পালটা সুরক্ষাকবচ চেয়ে আদালতে গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তির মেয়ে ও তাঁর স্ত্রী। সব মামলা-মোকদ্দমা প্রায় মিটেই গিয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে জামাইয়ের ব্যবহার অসহ্যকর হয়ে ওঠে বলে দাবি শ্বশুরের। এর পরই জামাইয়ের প্রবেশে চিরতরে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে নিম্ন আদালতে যান শ্বশুর। যেখানে রায় দেওয়া হয়, শ্বশুরের ওই সম্পত্তির উপর জামাইয়ের কোনও অধিকার নেই।
কিন্তু জামাইয়ের পালটা দাবি, মামলাকারী ব্যক্তির মেয়েকে বিয়ে করার ফলে তিনি এখন ওই পরিবার দ্বারা দত্তক নেওয়া সদস্য। সেই যুক্তিতে তিনি ওই বাড়িতে থাকার আবেদন জানান। নিম্ন দায়রা আদালত সেই আবেদন খারিজ করে জানায়, এ ক্ষেত্রে শ্বশুরের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। জামাইয়ের কোনও অধিকার ওই সম্পত্তির উপর নেই। দায়রা আদালতের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে হাজির হন জামাই। কিন্তু কেরল হাইকোর্টও সেই আবেদন খারিজ করে দিল। জামাইয়ের আবেদন খারিজ করে আদালত জানায়, “এ ক্ষেত্রে আবেদনকারী বাদী পক্ষের জামাই। বাদী পক্ষের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে বলে পরিবার তাঁকে দত্তক নিয়েছে এ হেন যুক্তি লজ্জাজনক।”
আরও পড়ুন: Post Poll Violence Case: ‘এতটা সিরিয়াস ইস্যুতে এত ক্যাজুয়াল অ্যাটিটিউড’, চরম ভৎর্সনার মুখে সিট