Hardeep Singh on Petrol Price: ‘এটাই সর্বনিম্ন দাম পেট্রোলের’, পুরীর বক্তব্যে উত্তাল সংসদ

Hardeep Singh on Petrol Price: পেট্রোল-ডিজেলের দামবৃদ্ধি নিয়ে এদিন উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদ। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর বক্তব্যে অসন্তুষ্ট হয়ে কক্ষও ত্যাগ করেন একাধিক বিরোধী দল।

Hardeep Singh on Petrol Price: 'এটাই সর্বনিম্ন দাম পেট্রোলের', পুরীর বক্তব্যে উত্তাল সংসদ
ছবি সৌজন্যে: সংসদ টিভি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 15, 2022 | 7:26 PM

নয়া দিল্লি: বর্তমানে পেট্রোল, ডিজেলের দাম (Petrol Diesel Price) আকাশছোঁয়া। আর জ্বালানির দাম বেশি থাকায় স্বাভাবিকভাবেই দৈনন্দিন জীবনে তার প্রভাব পড়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দামও রয়েছে আকাশছোঁয়া। এদিকে এবার দেশে পেট্রোল ও ডিজেলের উচ্চ দাম নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুললেন এক বিরোধী সাংসদ। তাঁর প্রশ্নের জবাব কক্ষে বক্তব্যও রাখেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী। তবে তাঁর বিবৃতি ঘিরেও হট্টগোল বাধে লোকসভায়। কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান কংগ্রেস, তৃণমূল সহ একাধিক বিরোধী দলের সাংসদ।

এদিন নিম্নকক্ষে কেরলের কংগ্রেস সাংসদ কে মুরলীধরন পেট্রোল ও ডিজেলের দামবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “ভারতে মে মাসে ১ লিটার পেট্রোলের দাম ছিল ৭১.৪১। বর্তমানে ১ লিটার পেট্রোলের দাম ১০০ টাকার বেশি। যেখানে আমেরিকায় প্রতি ব্যারেলের দাম ৭৭.৯৯ মার্কিন ডলার। পেট্রোলজাত পণ্যের দাম কেন ভারতে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নেই এবং দাম কমছে না কেন?”এই প্রশ্নের উত্তরে হরদীপ বলেন, ‘২০১০ এবং ২০১৪ সালে পেট্রল এবং ডিজেলের দাম নিয়ন্ত্রণমুক্ত করা হয়েছিল। গত ৮ বছরে দেশে যে পেট্রল, ডিজেলের দাম বেড়েছে তা ১৯৭৪ সালের থেকে হওয়া দামবৃদ্ধির তুলনায় অনেক কম। সেই সময়কার পেট্রলের দাম মনে আছে কারণ সেই সময় আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে দু-চাকায় করে যেতাম। তাতে পেট্রোল ভরাতে হত। যেহেতু জ্বালানির দাম নিয়ন্ত্রণমুক্ত তাই বাঙ্কের পেট্রোলের দাম পণ্য প্রস্তুতির খরচ, পরিবহণের খরচ, ইনসিওরেন্স এবং এক্সচেঞ্জ রেটের মাধ্যমে, রিফাইনারের মার্জিন, ডিলারের মার্জিন, কেন্দ্রীয় সরকারের শুল্ক ও রাজ্য সরকারের ভ্যাটের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।’

তিনি এদিন আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে উচ্চ হারে অপরিশোধিত তেলের দামের প্রভাব থেকে ভারতীয় গ্রাহকদের রেহাই দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর থেকে ২০২২ সালে দুইবার আবগারি শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র। এর ফলে প্রতি লিটার পেট্রোল ও ডিজেলের দাম কমেছে যথাক্রমে ১৩ টাকা ও ১৬ টাকা। এবং এর পুরো লাভটাই পেয়েছিলেন উপভোক্তারা। আমার বলতেও ভাল লাগছে যে কেন্দ্রের এই ঘোষণার পর পরই বাকি অনেক রাজ্যই পেট্রল ও ডিজেলে ভ্যাট কমিয়েছিল। শুধু বিজেপি শাসিতই নয় এবং অবিজেপি শাসিত অনেক রাজ্যই ভ্যাট কমিয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেই সময় একাধিক বিজেপি শাসিত ও আরও অন্যান্য রাজ্য ১৭ টাকা ভ্যাট নিচ্ছে। যেখানে অন্য অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি ৩২ টাকা ভ্যাট নিচ্ছে। ফলে বিভিন্ন রাজ্যে পেট্রোলের দাম বিভিন্ন। তাই যখন সাংসদ বলছেন কিছু জায়গায় পেট্রোলের দাম ১০০ টাকা প্রতি লিটার তখন কিছু বিজেপি শাসিত রাজ্যে এই পেট্রোলের দাম ১০ টাকা কম।’

তিনি বিভিন্ন পূর্ব পরিস্থিতির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম যখন ৪০ শতাংশ ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল তখন ২০০১ সাল থেকে ২০০২ সালের মধ্যে ভারতে পেট্রোলের দাম বেড়েছিল ২ টাকা। কারণ আমরা আবগারি শুল্ক কমিয়েছি। আমরা রাজ্যগুলিকেও ভ্যাট কমানোর জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু কেউ করেছে, কেউ করেনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যখন ভারতে অপরিশোধিত তেলের গড় দাম ১০২ শতাংশ বেড়েছে ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সেখানে খুচরো পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বেড়েছে ১৮.৯৫ শতাংশ থেকে ২৬.৫ শতাংশ।’ তিনি এদিন আরও বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে বিপুল হারে জ্বালানির দাম বাড়লেও পাবলিক সেক্টর তৈল বিপণন সংস্থাগুলি (Public Sector Oil Marketing Companies) ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল থেকে তেলের দাম বাড়ায়নি। তিনি বলেন, ‘২০২১-২২ অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে কর প্রদানের আগে ভারতীয় জ্বালানি তেল উৎপাদনকারী আইওসিএল, বিপিসিএল, এইচপিসিএলের লাভের পরিমাণ ছিল ২৮,৩৬০ কোটি টাকা। এর তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে ২৭,২৭৬ টাকার ক্ষতি হয়েছে জ্বালানি উৎপাদনকারী সংস্থাগুলির।’ তিনি শেষে এও বলেছেন, ‘আমরা যখন গভীর সঙ্কটজনক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি এবং রাজ্যগুলিও ভ্যাট কমাচ্ছে সে ক্ষেত্রে আজকের দামটাই পেট্রোলের সর্বনিম্ন বলে ধরে নিতে হবে।’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়নি একাধিক বিরোধী দল। কংগ্রেস, ডিএমকে, তৃণমূল ও একাধিক এনসিপি সাংসদ বিক্ষোভ দেখিয়ে কক্ষ ছেড়ে চলে যান।