Relationship With Ex: এই প্রথম মা-বাবাকে ছেড়ে বাড়ির বাইরে থাকতে এসেছে শ্রেয়াসা। একা একা মেয়ে হোস্টেলে কী ভাবে থাকবে তা নিয়ে মায়ের যত না চিন্তা তার থেকেও বেশি চিন্তা মেয়ের। এতদিন মায়ের কড়া শাসনে থাকতে হয়েছে বলে একটাও প্রেম করতে পারেনি। যদিও বা সায়নের সঙ্গে প্রেমটা শুরু করেছিল, কিন্তু সেখানেও মায়ের চোখরাঙানিতে ব্যাপারটা ‘Infatuation’-পর্যন্ত গিয়ে আটকে গিয়েছে। কিন্তু শ্রেয়াসার ইচ্ছে প্রেমটা তাকে যে ভাবেই হোক নামাতে হবে। সুতরাং এই সুযোগ। ২৪ ঘন্টা মায়ের নজরদারি নেই, ক্রেডিট কার্ড তার হাতে- কাজেই যখন খুশি পিৎজা অর্ডার করবে, শপিং করবে-এত কিছু ভেবেই তো শ্রেয়াসা কোনও থই পাচ্ছে না।
প্রেম করতে হবে এমন একটা ‘টার্গেট’ প্রথম থেকেই সেট করে রেখেছিল নিজের মনের মধ্যে। কাজেই কোনও ছেলের সঙ্গে সম্পর্কই স্বাভাবিক ভাবে নিতে পারত না সে। মনে করত ছেলেটা নিশ্চয় তাকে পছন্দ করে, আর তাই ক্লাস কেটে ক্যান্টিনে আড্ডা দিতে চাইছে। অবশেষে শ্রেয়াসারও একটা প্রেম হল। কিন্তু তা মনের মত হয়েছে কিনা বুঝে ওঠার আগেই প্রেমিকের সঙ্গে ময়দান থেকে প্রিন্সেপ ঘাট ঘুরে ফেলল। বন্ধু থেকে আত্মীয় সবার সঙ্গে প্রেমিকের আলাপও করিয়ে দিল। ঘর, সংসার, বিয়ে সব মিলিয়ে দারুণ একটা রঙিন মোহমায়া জালে নিজেকে আটকে রাখত। সাউথ সিটি থেকে ইকো পার্ক- এভাবেই বেশ দিন কেটে যাচ্ছিল। শ্রেয়াসার জীবনে প্রথম প্রেম হওয়ায় ‘Dedication’ -এ কোনও খামতি ছিল না। কিন্তু এই প্রেম যে টিকবার নয়, দু’বছরের অভিজ্ঞতায় যে মোটেই বুঝে উঠতে পারেনি। কালের নিয়মে প্রথম প্রেম ভাঙল। আর শ্রেয়াসা মনের দুঃখে ঘরের দরজায় খিল দিল। সবার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ, খাওয়া বন্ধ, দুনিয়া থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখল। বন্ধুদের উপর বিরক্তি, বাড়ির উপর রাগ- পৃথিবীর সব কিছুই যেন ঘোরতর অসহ্য ঠেকতে লাগল। যখনই কেউ তাকে বোঝাতে আসত যে- ‘যা গেছে তা যাক’, শ্রেয়াসা তা বুঝতে চাইত না। উল্টে মনে হত এই দুনিয়ায় সবাই তার খারাপ চাইছে।
এরকম হাজারো শ্রেয়াসা লুকিয়েন আছে আমাদের আশপাশে। প্রেম যাদের ‘লক্ষ্য’ আর সম্পর্ক হল বোর্ডের পরীক্ষার ‘প্রোজেক্ট পেপার’। আর তাই প্রেম একবার ভেঙে গেলেই তারা ডুব দেয় ডিপ্রেশনের সাগরে। ডিপ্রেশনে থাকাকালীন জীবনের যাবতীয় গুপ্ত ইচ্ছেপূরণ যে নিজেরাই করে ফেলে তা টেরও পায় না। প্রাক্তনের শোকে কি আপনিও কাতর? তাহলে কিছু সহজ পরামর্শ রইল আপনারই জন্য
নিজের সঙ্গে কথা বলুন- এতদিন মিথ্যে প্রেমের সঙ্গেই অনর্গল বকবক করে গিয়েছেন। এবার সময় নিজের সঙ্গে কথা বলার। মন থেকে নিজের কাছে প্রশ্ন রাখুন। এতদিন ধরে যে সম্পর্কটাকে বয়ে বেড়ালেন তা আদৌ ঠিক ছিল কি? এই দু বছরে আপনি কী কী পেয়েছেন
আবেগ নয়, যুক্তি দিয়ে ভাবুন- সব কিছু আবেগ দিয়ে চলে না। যুক্তি দিয়ে ভাবুন। কেন আপনার সঙ্গে এরকম হল। কোথায় নিজের ভুল ছিল তা নিজেই খুঁজে বের করুন। এই ব্রেক আপ থেকে আপনি যে শিক্ষা পেলেন তা কিন্তু আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলি পূর্ণ করল। ভবিষ্যতে এরকম ভুল করার আগে একবার ভাববেন।
পরিবারকে উপেক্ষা নয়- পরিবার এবং কাছের বন্ধুরা কিন্তু কখনই আপনার খারাপ চান না। হঠাৎ করে আপনার বিরুদ্ধে তাঁরা কথা বলছেন বলেই যে শত্রু হয়ে গেলেন এমন কিন্তু নয়। সবার পরামর্শ নিন। এরপর নিজের সিদ্ধান্ত নিজেকেই নিতে হবে। কারোর চাপিয়ে দেওয়া মত যেন আপনার উপর চেপে না বসে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
আরও পড়ুন: Break Up: দীর্ঘদিনের প্রেম-সফরে হঠাৎ ইতি? যে ভাবে সামলে নেবেন নিজেকে