বয়স (Age) বাড়তে শুরু করলেই আমাদের মুখে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসতে শুরু করে। প্রথমত ত্বকে আসে বলিরেখা (Wrinkles)। দ্বিতীয়ত ত্বক ঝুলে যায়। বিশেষ করে কপাল ও চোখের পাশে এই ধরনের পরিবর্তন সহজেই নজরে আসে। তবে চিন্তা নেই। এই ধরনের সৌন্দর্যহানির সঙ্গে সহজেই লড়া যায়। কিছু উপায় অবলম্বন করলেই মুখ হয়ে ওঠে আগের মতো তারুণ্যের দীপ্তিতে ভরপুর।
এইচএ ট্রিটমেন্ট
চোখ ও কপালের বলিরেখা বা ত্বকের ঝুলে যাওয়া ঠিক করা যায় হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ফিলারের মাধ্যমে। এই ফিলার ১০ থেকে ১২ মাস অবধি স্থায়ী হয়। এরপর ধীরে ধীরে শরীরের সঙ্গে মিশে যায়। সেই সময় ফের এইচএ ট্রিটমেন্ট করিয়ে নিলেই চলে।
সিওজি ট্রিটমেন্ট
মূলত ৩০ বছর বয়সের পর থেকেই ত্বক ঝুলে যাওয়ার সমস্যা শুরু হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা বাড়তে থাকে। ত্বকের এহেন ঝুলে যাওয়া আটকানো যায় সিওজি থ্রেড-এর মাধ্যমে। পিএলএ নামক উপাদান দ্বারা তৈরি হয় সিওজি থ্রেড বা সুতো যা দেড় থেকে দুই বছরের মধ্যে শরীরের সঙ্গে মিশে যায়।
‘লোক্যাল অ্যানাস্থেশিয়া’র সাহায্যে সিওজি থ্রেড প্রবেশ করানো হয় মুখমণ্ডলের ত্বকের নীচে। এই চিকিৎসার ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করতে পারেন ট্রিটমেন্ট নেওয়া ব্যক্তি। তবে খুব বেশি ত্বক ঝুলে গেলে বা বেশি বয়সের ব্যক্তির ক্ষেত্রে ফেস লিফট এবং নেক লিফট পদ্ধতির সাহায্য নেওয়া হয়। ফেস লিফট পদ্ধতির সাহায্য নিলে, একজন ব্যক্তিকে তার আগের রূপের তুলনায় ১৫-২০ বছর কমবয়সি মনে হতে পারে। তবে সার্জারি করালে স্বাভাবিক হতে ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ সময় লাগে। তবে ফলাফল অনেক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
বটক্স থেরাপি
কিছু নির্দিষ্ট পেশির ঝুলে যাওয়ার কারণে মুখের ত্বকে বলিরেখা পড়ে। মুখের কিছু নির্দিষ্ট অংশে ‘বটুলিনিয়াম টক্সিন’ ইঞ্জেকশন নিয়ে এই ধরনের সমস্যা সহজেই এড়ানো। ফলে মুখে ফিরে আসে তরতাজা ও তরুণ ভাব। এমনকী এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ফেস লিফট সার্জারিকে পিছিয়ে দেওয়া যায় এই পদ্ধতির সাহায্যে। একবার বটক্স থেরাপি করালে তা ৬ থেকে ৮ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ফের তখন বটক্স থেরাপি করাতে হয়।
পিআরপি টেকনিক
বয়স কম দেখাতে সর্বাধুনিক পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে ‘ন্যানো ফ্যাট ইঞ্জেকশন এবং পিআরপি। পিআরপি রেজুভেনেশনের সঙ্গে মাইক্রোনিডলিং করালে তা ত্বকের প্রাকৃতিক কোলাজেনের মাত্রা বাড়ায় যা ত্বককে টানটান রাখে।
চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তির পক্ষে দারুণ উপযোগী এই পদ্ধতি। আমাদের চামড়ার নীচে থাকা ফ্যাটে ও রক্তে প্রচুর পরিমাণে উপকারী ‘রেজুভিনেটিভ উপাদান’। ন্যানো ফ্যাট পদ্ধতিতে আমাদের দেহের সামান্য অংশের ফ্যাট সরানো হয় সরু ও সূক্ষ্ম সুচ দ্বারা। এরপর ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ত্বকের নির্দিষ্ট অংশে তা প্রবেশ করানো হয়। ফলে কমে ত্বকের ঝুলে যাওয়া, কুঁচকে যাওয়া ও চোখের নীচে ডার্ক সার্কেলের সমস্যা।
পিআরপি ট্রিটমেন্ট
আমাদের রক্ত থেকে পাওয়া যায় প্লেটলেট রিচ প্লাজমা (পিআরপি)। রক্ত থেকে প্লেটলেট পূর্ণ প্লাজমা বের কপের ত্বকের ঝুলে পড়া বা কুঁচকে যাওয়া অংশে প্রবেশ করাতে পারলে পুনরায় ত্বকের হৃত লাবণ্য ফিরে পাওয়া যায়।
আপটজ থ্রেড
মুখে এই ধরনের থ্রেড প্রয়োগ করে একাধারে যেমন মুখের ত্বক টানটান করে তোলা যায়, তেমনই ত্বকের কোলাজেনের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। মুখে, গলায়, ঘাড়ে, বুকে— শরীরের বহু অংশে থ্রেড ব্যবহার করা যায়।
ফ্র্যাকশিওনেটেড সিও২
এই বিশেষ ধরনের লেজার ত্বকের কুঁচকে যাওয়া অংশকে ধ্বংস করে। একইসঙ্গে রোদের কারণে হওয়া ত্বকের বৈকল্যও সারায়। কোলাজেনের বৃদ্ধিতে উৎসাহ দেয়। ফলে মুখমণ্ডলের ত্বক হয়ে ওঠে দীপ্তিময়। ১ কিংবা ২ বছর পরে পুনরায় এই পদ্ধতির সাহায্য নিতে হয়।
তথ্য সহায়তা: ডাঃ পরাগ তেলাঙ্গ। প্লাস্টিক এবং রিকন্সট্রাকটিভ সার্জেন
আরও পড়ুন: Haircare Tips: গরমে স্বাস্থ্যকর চুলের বৃদ্ধির জন্য এই ৩টি উপায় হল সেরা! ট্রাই করলে সুফল পাবেনই