গ্রীষ্মপ্রধান দেশে শীতকাল পরম আরাধ্য ঋতু। তবে শীতের মজার সঙ্গে সাজাও আছে। যেমন- শুষ্ক ত্বক, ঠোঁট ও পা ফাটা, সর্দি-কাশি ইত্যাদি। লোশন, পেট্রোলিয়াম জেলি, গ্লিসারিন ইত্যাদির মাধ্যমে ত্বকের যত্ন, আর হাল ফ্যাশনের বিভিন্ন শীতবস্ত্র পরে ঠান্ডার প্রকোপ থেকে বাঁচা গেলেও অবহেলিত থেকে যায় নখ।হিমেল মৌসুমে ত্বকের রুক্ষতা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে যোগ হয় ত্বক ফাটার সমস্যা, নানা চর্মরোগ। এই সমস্যা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় পা ও ঠোঁটে। নখ মেয়েদের সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে তোলে ।আর খারাপ বা অসুস্থ নখের অবহেলা আপনার পক্ষে মারাত্মক হতে পারে। শীতে নখের প্রতি একটু বাড়তি যত্ন নিতে হয়।
শীতের বাতাসে আর্দ্রতার অভাব শুষ্ক, ভঙ্গুর নখের প্রধান কারণ। গ্রীষ্মকালে উষ্ণ বাতাস শীতের ঠান্ডা বাতাসের চেয়ে বেশি আর্দ্রতা ধারণ করে। মুখে মাখার ময়েশ্চারাইজ়ারটার একটুখানি বরাদ্দ হয় হাতের জন্য, আর পছন্দমতো রঙের একটা নেলপলিশ পরেই নখের প্রতি কর্তব্য সেরে ফেলি আমরা অনেকেই। কিন্তু তাতে নখের আপাত সৌন্দর্য বৃদ্ধি হলেও আখেরে ক্ষতির মাত্রা অনেক বেশিই হয়। শীতের দিনেও নিয়মিত নখ পরিষ্কার রাখা, নখ কাটা বা ফাইল করে রাখার মতো কিছু প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি পালন করলেই আপনার নখ থাকবে সুস্থ ও সুন্দর, বাড়বেও তাড়াতাড়ি।
ময়শ্চারাইজ করুন
অন্য সবকিছুর মতো, আমাদের নখ শীতের মৌসুমে আর্দ্রতা হারায়। আর্দ্রতার অভাবের ফলে নখ শুষ্ক এবং ভঙ্গুর হতে পারে। তাই ঠান্ডা আবহাওয়া থেকে আর্দ্রতা হ্রাস রোধ করতে আপনার হাত, আঙ্গুল এবং নখগুলিকে ময়শ্চারাইজড করার চেষ্টা করুন। তাপমাত্রা কমতে শুরু করলে নখকে ময়েশ্চারাইজড না করলে নখে চিড় ধরা, খোসা উঠে যাওয়া ও ভেঙে যেতে পারে। এব্যাপারে ডাক্তারের সঙ্গে আলোচনা করে আপনার নখের জন্য উপযুক্ত ময়েশ্চারাইজার কোনটি, তা জেনে নিতে পারেন। নারকেল বা বাদাম তেল কিউটিকলগুলিতে প্রয়োগ করতে পারেন এবং তাদের পুষ্টির জন্য আলতো করে ম্যাসাজ করতে পারেন।
মাস্ক ব্যবহার করুন
মুখ এবং চুলের মাস্ক তো রয়েছে। নখেরও মাস্ক রয়েছে।আর এটি আপনার ‘অবশ্যই’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে বেশি সময় লাগবে না৷ আপনার নখ পুষ্ট করার জন্য যে কোনও ধরনের নেইল মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। নখে মধু এবং ডিমের মাস্ক বা এমনকি বেকিং সোডা দিয়ে লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন।
চুলের চিকিত্সার মতো আপনার নখেরও যত্ন করুন
চুল এবং নখ উভয়ই কেরাটিন প্রোটিন দ্বারা গঠিত। তাই দুটোরই যত্ন নেওয়ার জন্য একই নিয়ম প্রযোজ্য। বিশেষজ্ঞের মতে, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াকরণের ফলে চুল ও নখ উভয়ই জলশূন্য ও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ঘন ঘন নেল পলিশ করা ও মুছে ফেলা, জেল এবং অ্যাক্রিলিক্সের রং, রাসায়নিক এবং তাপ প্রয়োগ নখের জন্য ক্ষতিকারক। হাইড্রেশন যেমন চুলের সমস্যা যেমন ফ্রিজ এবং স্প্লিট এন্ড মেরামত করতে সাহায্য করে, তেমনি এটি শুষ্ক এবং ভঙ্গুর নখের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে।
বার বার হাত ধোওয়া এড়িয়ে যান
সারাদিনে বিভিন্ন কারণে অনেকবার হাত ধোয়া হয়। শীতের দিনে বারবার হাত ধোয়ার কারণে নখ প্রাকৃতিক আর্দ্রতা হারায়, হয়ে যায় ভঙ্গুর। তাই ঘরের কাজ করার সময় হাতমোজা পরে নিতে পারেন, যাতে নখ না ভেজে। রাতে ঘুমানোর সময় হাতে উলের হাতমোজা পরে নিতে পারেন। এতে নখ ও হাতে আর্দ্রতা বজায় থাকবে। হাতমোজা না থাকলে হাত ধুয়ে, মুছে ভেজা নখে যে কোনও গায়ের মাখা তেল হাতে মাখতে পারেন।
নখ কাটা
নখ সবসময় যথাসম্ভব ছোট রাখা উচিত। কারণ বড় নখ ভাঙার সম্ভাবনা বেশি। নখ সবসময় একদিক থেকে কাটা উচিত, এতে নখ ভাঙার আশঙ্কা কমে। হাত ধোয়া কিংবা স্নানের ঠিক পরপরই নখ ‘ফাইল’ করা উচিত নয়। কারণ, এসময় নখ নরম থাকে, তাই ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কাও বেশি থাকে।
আরও পড়ুন: Skin Care For Spring: শীত পেরিয়ে বসন্তের আগমনের পালা! বদলে ফেলুন ত্বকের যত্নের রুটিন