আপনার কোভিড-পরবর্তী চুল পড়ার সমস্যা বা গর্ভাবস্থার পরে ব্রণের সমস্যার জন্য এমন কিছু খুঁজছেন যা এগুলির হাত থেকে আপনাকে বাঁচাতে পারবে? ত্বক এবং চুলের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোন শর্টকাট নেই। তবে দীর্ঘমেয়াদী উপকারিতা পাওয়ার জন্য আমাদের পুষ্টির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া উচিত।
১) ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য:
নিয়াসিনামাইড হল ভিটামিন বি ৩ (নিয়াসিন)-এর একটি রূপ যা ব্রণ প্রতিরোধ করে। এছাড়াও এটি ত্বকে তৈরি হওয়া তেলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ব্রেকআউট প্রতিরোধ করে। নিয়াসিন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে মাশরুম, খেজুর, কুমড়োর বীজ, মিষ্টি আলু, বাদাম, পালং শাক, টমেটো, গাজর, অ্যাভোকাডো এবং ব্রকলি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কিডনি বিন একটি আঁশযুক্ত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। এগুলি দস্তা সমৃদ্ধ এবং এদের নিরাময়ের ক্ষমতা রয়েছে যা ব্রণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
২) উজ্জ্বল ত্বকের জন্য:
আপনি যদি আপনার ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে চান তাহলে কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার খান। কোলাজেন ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে যা স্যাগিং রোধ করে। এটি আপনার ত্বককে ফর্সা এবং উজ্জ্বল রাখতেও বিশেষভাবে সাহায্য করে। হলুদ, স্পিরুলিনা, ডালিম, তরমুজ, মাছ, মুরগি, ডিমের সাদা অংশ, সাইট্রাস ফল, লাল এবং হলুদ মরিচ, মটরশুটি এবং অ্যাভোকাডো সাধারণত কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবারের উৎস। হর্সটেল এবং গাইনোস্টেম্মার মতো কিছু ভেষজ কোলাজেনও খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও, অশ্বগন্ধা এবং বালা আপনার শরীরে কোলাজেন উত্পাদনকে উদ্দীপিত করে।
৩) বলিরেখা এবং ট্যানিং প্রতিরোধেের জন্য:
হায়ালুরোনিক অ্যাসিড আমাদের ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে, স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করে এবং গভীর বলিরেখা তৈরিতে বাধা দেয়। হায়ালুরোনিক অ্যাসিড উত্পাদনকে উদ্দীপিত করার জন্য ভিটামিন সি অপরিহার্য। কমলালেবু, আঙ্গুর এবং লেবুকে আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন। শাকসবজি যেমন ট্যাপিওকা, মিষ্টি আলু শরীরে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড উৎপাদনের জন্যও দারুণ কাজ করে। ট্যানিংয় রোধ করার জন্য পেঁপে ভাল ফল দেয়। পেঁপেতে প্যাপাইন নামক এনজাইম থাকে যা ত্বকের বিভিন্ন নিরাময়ে সাহায্য করে এবং ট্যানের বিরুদ্ধে লড়াই করে। পেঁপে ব্রণ, ডার্ক সার্কেল, শুষ্কতা এড়াতে এবং একইসঙ্গে ঝলমলে ত্বক পেতে অনেক সাহায্য করে।
৪) চুল পড়া রোধ করার জন্য:
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এবং জেনেটিক কারণের পাশাপাশি চুল পড়ার একাধিক কারণ রয়েছে। সঠিক পুষ্টির অভাব তার মধ্যে একটি অন্যতম প্রধান কারণ। প্রোটিন হল চুলের বিল্ডিং ব্লক। আপনার দৈনিক খাওয়ারের মধ্যে সব সময় পর্যাপ্ত প্রোটিন থাকা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিদিনের ডায়েটে ডিম অবশ্যই যোগ করুন। ডিমের কুসুমের হলুদ অংশ এড়িয়ে যাবেন না। যখনই ডিম খাবেন, তা সিদ্ধ করেই খাবেন।
৫) চুল পাকা বন্ধ করতে:
স্ট্রেস হল চুল পেকে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমাতে ভিটামিন বি ৫ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড নামেও পরিচিত এই ভিটামিন ত্বকে জলের পরিমাণ ধরে রাখে এবং আর্দ্রতা বন্ধ করে দেয়। ভিটামিন বি ৫ মূলত পশুর পণ্য থেকে পাওয়া যায়। গরুর মাংস, সালমন, মুরগির মাংস এবং হাঁস এই ভিটামিনের ভাল উৎস। এছাড়াও ব্রকলি, মিষ্টি আলু এবং হোল গ্রেনের মধ্যেও এই ভিটামিন পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: বর্ষায় ত্বকের যত্নে মেনে চলুন সঠিক ডায়েট! কী কী খাবেন আর খাবেন না, জেনে নিন