মাত্র ২৫-এই চুলে পাক ধরেছে অর্পণের। অফিকে সহকর্মীদের বাঁকা কথায় আজকাল বড্ড অপদস্থ হতে হয় তাঁকে। একই হাল মৌমিতার। বয়সে তিনি অর্পণের থেকে একটু ছোটই। কিন্তু তাঁর চুলেও পাক ধরেছে। আজকাল কম বয়সে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে অনেকেরই। রাস্তাঘাটে বাঁকা কথা, ট্যাঁরা নজর এইসবের জেরে হামেশাই তাঁদের মন খারাপ হয়ে যায়।
কিন্তু কেন হয় এমন-
১। ডার্মাটোলজিস্টরা বলে থাকেন অল্প বয়স মূলত চুল পেকে যায় অপুষ্টি এবং খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম এবং সঠিক অভ্যাস না থাকার কারণে। এছাড়াও থাইরয়েড হরমোন, ভিটামিন বি১২, ভিডামিন ডি, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, আয়রন, কপার—- এইসবের ঘাটতির কারণেও সময়ের আগে চুল পেকে যেতে পারে।
২। শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ কমে গেলেও অল্প বয়সে চুল পেকে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৩। যাঁদের অ্যাসিডিটির অতিরিক্ত সমস্যা রয়েছে তাঁদের অকালে চুল পাকতে পারে।
আরও পড়ুন- ঘরোয়া পদ্ধতিতে কম্বিনেশন চুলের যত্ন নেবেন কীভাবে?
৪। এছাড়া খাওয়া-দাওয়ার অনিয়ম, অতিরিক্ত ভাজা জাতীয় এবং তৈলাক্ত খাবার, ফাস্টফুড আপনার চুলের বারোটা বাজিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
৫। অত্যধিক মানসিক চাপ বা স্ট্রেসও অকালে চুল পাকার অন্যতম কারণ।
৬। বায়ু দূষণ এবং সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিও অকালে চুল পাকার অন্যতম কারণ।
সমাধানের জন্য কী কী করবেন-
১। প্রথমেই একজন ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নিন। কেন আপনার চুল অকালে পেকে যাচ্ছে তার আসল কারণ জানুন। এর পর প্রয়োজন হলে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি করাতে পারেন। কিংবা খেতে পারেন ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট। তবে এক্ষেত্রে যাই করুন তার আগে অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। নইলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
২। চুলে ডাই লাগাতে পারেন বা কালার অর্থাৎ রঙ করতে পারেন। কারণ এর ফলে সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রে-এর হাত থেকে রক্ষা পাবে আপনার চুল।
৩। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মা-বাবার বিশেষ করে খেয়াল রাখুন। একেবারেই বেশি জাঙ্ক ফুড খেতে দেবেন না। বরং বাড়ির খাবার খাওয়ান। মুখরোচক সুস্বাদু খাবার বাড়িতেই বানিয়ে দিন। প্রোটিন, ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ান আপনার সন্তানকে। শরীরে যেন কোনও উপাদানের ঘাটতি না হয় সেদিকে নজর দিন।
৪। আজকাল ইঁদুর দৌড়ের জীবনে স্ট্রেস বা মানসিক চাপ আমাদের সর্বক্ষণের সঙ্গী। কেউ এই চাপ সামলে নিতে পারেন। কারও ক্ষেত্রে নানা সমস্যা দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ হাজার পরিশ্রমের পর মন ভাল রাখা খুবই প্রয়োজন। তাহলেই সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে।
৫। সুষম আহার, সঠিন শরীরচর্চা আর পর্যাপ্ত ঘুম—- আপনার লাইফ সাইকেলের ক্ষেত্রে এই তিনটি বিষয় নিয়ম করে মেনে চলুন। তাহলেই সমস্যার সমাধান হবে।