প্রতিহিংসা পরায়ণ হয় কাকের দল। সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এল এমনই অবাক করা তথ্য। সাম্প্রতিকতম একটি গবেষণা বলছে যদি কেউ কাকের প্রতি কোনও অন্যায় করেন, তাহলে তাঁকে মনে রাখে কাক। পরে সেই অন্যায়ের প্রতিশোধ নেয় সেই কাক।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানী প্রফেসর জন মার্জলফের নেতৃত্বাধীন একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে কাক ১৭ বছর পর্যন্ত তাদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ধরে রাখতে পারে এমনকি প্রতিশোধ নিতে পারে। ২০০৬ সালে শুরু হওয়া এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল যদি কাকের কেউ ক্ষতি করে তাহলে তাদের কাক মনে রাখতে পারে কি না তা খুঁজে বার করা।
গবেষণাটি করার সময় অধ্যাপক মার্জলফ একটি রাক্ষসের মুখোশ পরে জালের সাহায্যে সাতটি কাককে বন্দি করেন। তাঁদের শনাক্ত করার জন্য ডানায় চিহ্ন করে ছেড়ে দেন। এরপরে যখনই মার্জলফ ওই বিশেষ মুখোশটি পরে ক্যাম্পাসে যেতেন তখন কাকগুলি তাঁকে আক্রমণ করত। এমনকি যে কাকেরা বন্দি হয়নি তাঁরাও বাকি কাকেদের সঙ্গে যোগ দিত।
এক টানা সাত বছর ধরে এই কাকগুলি তাঁকে আক্রমণ করত। যা কাকের অসাধারণ স্মৃতি এবং নিজেদের আনুগত্যের প্রমাণ দেয়। ২০১৩ সালের পরেও, আক্রমণ চলতে থাকে কিন্তু তা আর ঘন ঘন নয়। গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলত এই আক্রমণ। ১৭ বছর পরে অবশেষে মুখোশ পরে বেড়োলেও আর আক্রমণ করত না কাক। অর্থাৎ টানা ১৭ বছর কাক তাদের শত্রুকে মনে রাখতে সক্ষম।
প্রফেসর মার্জলফের এই গবেষণার দাবি কাকের কেবল মনে রাখার ক্ষমতা আছে তাই নয়, বরং কাকের মানুষের মতো মস্তিষ্কের গড়নে কিছু রয়েছে। এটি অ্যামিগডালা নামে পরিচিত, যা স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মতোই, কোনও ঘটনা মনে রাখতে সাহায্য করে। মার্জলফের এই গবেষণা থেকেই বোঝা যায় কাকের স্মৃতিশক্তি কেবল দীর্ঘস্থায়ী নয় তাঁদের সামাজিক আচরণ বেশ জটিল।