Winter health: সিজন চেঞ্জে সুস্থ থাকতে হেঁশেলে মজুত রাখুন এই ৭ মশলা, প্রয়োজন হবে না ওষুধের!
Spices: ভারতীয় মশলার প্রচুর গুণ। নিয়মিত রান্নায় ব্যবহার করলে যেমন শরীর ভাল থাকে তেমনই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতেও জুড়ি মেলা ভার এই সব মশলার
শীতের রুক্ষ প্রতৃতির মধ্যে লুকিয়ে থাকে অদ্ভুত একটা বিষন্নতা। গাছের পাতা হলুদ হয়ে ঝরতে শুরু করে, দিনের আলো তাড়াতাড়ি ফুরিয়ে আসে, লম্বা রাত। প্রকৃতি যত শুষ্ক হতে শুরু করে ততই যেন হারিয়ে যায় ত্বকের আর্দ্রতা। এই মরশুমেই থাকে যাবতীয় নিমন্ত্রণ। তবুও কোথাও যেন থাকে মন খারাপের সুর। শীত মানেই নতুন গুড় আর বাজার জুড়ে হরেক সবজি। ফলে খাওয়া-দাওয়ার পর্ব থাকে জমজমাটি। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয় শরীর-মনেও। তাই এই সময় শরীরের দিকে খেয়াল রাখা বিশেষ প্রয়োজন। কারণ শীতেই জাঁকিয়ে বসে রোগ-জীবানুরাও।
ভারতীয় রান্নায় যে সব মশলা ব্যবহার করা হয়, তা কিন্তু শরীরের জন্য খুব উপকারী। মশলা শুধু আমাদের খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, শরীরের নানা উপকারেও লাগে। হজমে সাহায্য করে, শরীরে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। আর তাই এই ৭ মশলা কিন্তু মনে করে রাখুন রান্নাঘরের তাকে।
হলুদ, গোলমরিচ, লবঙ্গ এই যাবতীয় মশলা কিন্তু প্রাচীন আর্য়ুবেদেও ব্যবহার করা হত। তখন এত গুঁড়ো মশলার চল ছিল না। ফলে এই গোটা মশলা রোস্ট করেই তাঁরা ব্যবহার করতেন। নিয়ম করে প্রতি রান্নায় ঘি, হলুদ, নুন, এলাচ, জায়ফল, জয়িত্রী এসব ব্যবহার করা হত। এছাড়াও এই সব উপাদান থেকে তৈরি হত ওষুধও। খাবারে জায়ফল জয়িত্রী মেশালে যেমন স্বাদ বাড়ে তেমনই কিন্তু অনেক উপকারেও আসে।
কেক থেকে বিরিয়ানি- যদি দেওয়া যায় এক চিমটে জায়ফল গুঁড়ো তাহলে তার স্বাদ বেড়ে যায় অনেকখানি। শীতকালে সর্দি, কাশি, কফ, ত্বকের সমস্যা, ঘুম কম হওয়া এসব লেগেই থাকে। এছাড়াও এই সময় পরিশ্রম বেশি হয়। পায়ে বেশি চটান ধরে। তাই খাবারের দিকে কিন্তু নজর দিতেই হবে। তেল-মশলা দিয়ে কফিয়ে রান্না করা খাবার কম খান, বরং রান্নায় ব্যবহার করুন এই কয়েকটি মশলা।
গোলমরিচ- গোলমরিচ হজমে ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। এছাড়াও শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় কাজে দেয় গোলমরিচ। গোলমরিচ দিয়ে ম্যারিনেট করলে যেমন রকান্নায় স্বাদ বাড়ে তেমনই সিদ্ধ করা খাবারের উপর ময়দা আর গোলমরিচের গুঁড়ো ছড়িয়ে দিলেও খেতে ভাল লাগে। খিদে নিয়ন্ত্রণেও ভূমিকা রয়েছে গোলমরিচের।
এলাচ- হজমের সমস্যা, পেটের সমস্যা, গ্যাস ইত্যাদিতে ভাল কাজ করে এলাচ। এছাড়াও যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্যেও কিন্তু ভাল এলাচ। এলাচ গুঁড়ো করে এয়ার টাইট কন্টেনারে রেখে দিন। বাড়িতে যদি কোনও মিষ্টি বানান কিংবা যদি প্রতিদিন ওটস খান তাহলে ব্যবহার করতে পারেন এই এলাচ গুঁড়ো। এছাড়াও আমন্ড মিল্ক, চা-এর সঙ্গেও মিশিয়ে নিতে পারেন এলাচ গুঁড়ো। এছাড়াও তিন থেকে চারটে এলাচ দানা চিবিয়ে খেলেও মিটবে শ্বাসের সমস্যা।
দারচিনি গুঁড়ো- ডায়াবিটিস থেকে রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ সব কিছুর জন্যই ভাল দারচিনি গুঁড়ো। পুডিং কিংবা ওটসের সঙ্গে এক চামচ দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। টেস্ট যেমন বাড়বে তেমনই স্বাস্থ্যের জন্যেও ভাল। এছাড়াও রোজ সকালে দারচিনির জল খেতে পারলেও ভাল উপকার পাবেন। যাঁদের জয়েন্ট পেইন হয় তাঁরাও কিন্তু ব্যবহার করতে পারেন দারচিনির তেল।
লবঙ্গ- হজমের সমস্যা থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা- সব কিছুর সমাধান রয়েছে এই লবঙ্গের মধ্যে। সকালে ব্রাশ করার পর যদি লবঙ্গ জলে কুলি করতে পারেন তাহলে সারাদিন বজায় থাকবে ফ্রেশনেস। এছাড়াও খালিপেটে এলাচ, গোলমরিচ, আদা আর লবঙ্গ দিয়ে ফুটিয়ে জল খান। মাঝে মধ্যে নানা সবজি আর তেজপাতা, গোলমরিচ, লবঙ্গ, দারচিনি দিয়ে ভাত ভেজে খান। তাহলেও কিন্তু শরীরের উপকারে আসবে। যে কোনও তরকারিতে যোগ করতে পারেন লবঙ্গ।
জিরে- গোটা হোক কিংবা পাউডার। রান্নায় যদি পড়ে জিরে তাহলে তার স্বাদই বদলে য়ায়। এছাড়াও কিন্তু জিরের অনেক উপকারিতা আছে। সকালে জিরে ভেজানো জল যদি নিয়মিত খান তাহলে কিন্তু কমবে ওজন। এছাড়াও যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্যেও ভাল এই জিরের জল। যাঁরা নিয়মিত স্তন্যপান করান তাঁরাও খেতে পারেন এই জিরে জল।
আদা- আদার উপকারিতা অনেক। রান্নায় দিলে যেমন স্বাদ বাড়ে তেমনই নিয়মিত আদার জল খেলে কমবে ওজন। যাঁরা হজমের সমস্যায় ভোগেন তাঁরা দিনের মধ্যে দুবার যদি নআদা দিয়ে গ্রিন টি খান তাহলে উপকার পাবেন। এছাড়াও রোজ সকালে আদা, গোলমরিচ দিয়ে লিকার চা খেলে ঠান্ডা লাগার সমস্যা থাকবে না।
জায়ফল- জায়ফলের গন্ধ যেমন সুন্দর তেমনই শরীরের জন্যেও খুব ভাল। এছাড়াও মন ভঊাল রাখে, নার্ভকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে জায়ফল। যাঁদের পিরিয়ডসের সমস্যা রয়েছে, পেশির ব্যথা রয়েছে তাঁরা প্রতিদিন এই জায়ফল খেতে পারলে কিন্তু ভাল। শীতে কেক, পিঠে-পুলি প্রায়শই বানানো হয় বাড়িতে। কয়েক চিমটে জায়ফল গুঢ়ো দিয়ে দেখুন, স্বাদ বাড়বেই।