চুল (Hair) নিয়ে যতই চুলচেরা বিশ্লেষণ হোক না কেন শরীর আর মন যদি ঠিক না থাকে তাহলে কিন্তু তার প্রভাব পড়ে আমাদের চুলেও(Hair Care Tips)। আমাদের শরীরে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল চুল। সেই সঙ্গে মনস্তাত্ত্বিকভাবেও কিন্তু চুল আমাদের জীবনের সঙ্গে জড়িত। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে চুলে যেমন পাক ধরে তেমনই ডিপ্রেশন বা কোনও মানসিক সমস্যায় ভুগলে তার প্রভাবও কিন্তু পড়ে চুলে (Hair Fall Reason)। আবার খাওয়া দাওয়া ঠিকমতো না হলে, শরীর ঠিক মতো পুষ্টি না পেলে বা শারীরিক কোনও সমস্যা হলে সেই প্রভাব দেখা যায় চুলে। এছাড়াও আমাদের শরীরে শোভা বর্ধন করে চুল। চুলের দৈর্ঘ্য এবং কাটিং অনুযায়ী কিন্তু ব্যক্তিত্বেরও রকমফের হয়। মানুষ চেনা যায় এই চুল দেখেই। এমনকী অনেকের মনের অবস্থা ও রুচির পরিচয় বহন করে চুল।
ফলে চুলকে যত্নে রাখা খুবই প্রয়োজন। বেশিরভাগই এখন চুল ঝরে যাওয়ার সমস্যায় ভুগছেন। আর এর পেছনে কিন্তু একাধিক কারণ থাকে। পুষ্টির অভাব, কোনও শারীরিক সমস্যা থাকলেও কিন্তু চুল ঝরে যেতে বাধ্য। এছাড়াও দূষণ তো রয়েইছে। চুলের স্বাস্থ্যরক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল কেরাটিন, ক্যালশিয়াম. জিঙ্ক, আয়রন। যা চুলের প্রতিটি কোশে পুষ্টির ঘাটতি মেটায়। তবে চুল ভাল রাখতে আমাদের রেজকার ডায়েটে নজর দেওয়া উচিত। নিয়মিত ভাবে শরীর যাতে প্রোটিন, ভিটীমিন, খনিজ পায় সে দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। এভাবে নিয়ম মেনে চলতে পারলে চুলে পাক পরে ধরে। চুলের গোড়াও থাকে শক্ত।
প্রোটিন- স্বাস্থ্যকর প্রোটিন চাইলে নিয়মিত ভাবে প্রোটিনও খুব প্রয়োজন। প্রোটিনের অভাব হলেও কিন্তু চুল ভেঙে যায়। নিয়মিত ভাবে মুরগির মাংস, ডিম, দুধ, বিভিন্ন বাদাম, শাক-সবজি অবশ্যই রাখবেন ডায়েটে। দুধ, পনিরও নিয়মিত ভাবে খান। এসব কিন্তু শরীরের প্রয়োজনীয় উৎস।
আয়রন- চুলের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল আয়রন। চুলের গড়ায় রক্ত সরবরাহ করতে এবং চুল মজবুত করতে কিন্তু ভূমিকা রয়েছে আয়রনের। আর রক্তে আয়রনের মাত্রা কমে গেলে কিন্তু তখনও চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা হয়। তাই বিভিন্ন প্রাণীজ প্রোটিন, মাংস, মাছ, মুসুর ডাল, পালং শাক, অন্যান্য সবজি, ব্রকোলি, স্যালাড, বাঁধাকপি এসব রাখুন রোজকার খাবারে। এতে শরীরে আয়রনের চাহিদা পূরণ হবে।
ভিটামিন সি- ভিটামিন সি শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। সেই সঙ্গে চুলের গোড়াও রাখে মজবুত। আর তাই বিভিন্ন বেরিজ, ব্রকোলি, পেয়ারা, কিউই, কমলালেবু, পেঁপে, স্ট্রবেরি, মিষ্টি আলু এসব অবশ্যই রাখবেন রোজকার মেনুতে। এতে চুলের গোড়াও শক্ত হয়।
ভিটামিন এ- শরীরে সিবাম তৈরি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ভিটামিন A-এর। Sebum হল একটি মসৃণ পদার্থ যা আমাদের চুলের সেবেসিয়াস গ্রন্থি থেকে উৎপন্ন হয় এবং প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের কাজ করে। আর তাই গাজর, কুমড়ো, মিষ্টি আলু, বিভিন্ন রঙের ক্যাপসিকাম রাখুন রোজকার ডায়েটে।
এসবের পাশাপাশি কিন্তু চুলে নিয়মিত ভাবে তেল, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত চুলে তেল দিলে চুলের রুক্ষ্মভাব যেমন চলে যায় সেই সঙ্গে চুল পায় প্রয়োজনীয় পুষ্টিও। সেই সঙ্গে চুল সহজে ভেঙে যায় না।
আরও পড়ুন: Healthy Breakfast: মন ভাল করা সকাল চাইলে প্রাতরাশ সাজান স্বাস্থ্যকর মেনুতে…