মিষ্টির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বড়ই মধুর। মিষ্টি খেতে কার না আর ভাল লাগে! কিন্তু মিষ্টির সঙ্গে সখ্যতা বাড়লেই সম্পর্ক তেতোর দিকে এগোয়। হতে পারে বিষাক্তও। চিনি যে শরীরের জন্য মোটেই ভাল নয় তা সকেই জানেন। ডায়াবিটিস ছাড়াও একাধিক রোগকে আমন্ত্রণ জানানোর ক্ষমতা রয়েছে চিনির মধ্যে। এছাড়াও চিনি কিন্তু সরাসরি মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলতে পারে। হ
ঠাৎ আসা ক্লান্তি, মাথাব্যথা, কিংবা পেশির ব্যথা- এসবরেই নেপথ্যে রয়েছে চিনি। আর তাই চিনির এই বাড় বাড়ন্ত শক্ত হাতে রুখে দেওয়া ভীষণ জরুরি। কিন্তু কীভাবে মিষ্টির লোভ সংবরণ করবেন, তার দাওয়াই কিন্তু রয়েছে আমাদের রান্নাঘরেই। হেঁশেলে মজুত এই সব মশলাই চিনিকে শায়েস্তা করতে কাফি।
মিষ্টি বা চিনি যেমন শরীরে মেদ জমায় তেমনই কিন্তু ক্যানসারের মত মারণ ব্যাধিও ডেকে আনে। প্রয়োজনের তুলনায় চিনি বেশি খাওয়া হলেই আসবে নানা রকম জটিল সমস্যা। প্রথমদিকে শরীর যা টেরও পায় না। মিষ্টি, চকোলেট, আলু, ফাস্টফুড, চিপস, অ্যালকোহল, কোল্ড ড্রিংক সব কিছুর মধ্যেই থাকে চিনি। ফলে অজান্তেই কিন্তু চিনি বেশি খাওয়া হয়। তবে একেবারেই যে চিনি বন্ধ করে দেবেন তা নয়।
শরীরের প্রয়োজনমতো চিনি অবশ্যই খাবেন। কিন্তু বিকল্প হিসাবে স্টেভিয়া, গুড়, জাগেরি পাউডার এ সব ব্যবহার করতে পারলে ভাল। সেই সঙ্গে লাইফস্টালেও বদল আনতে হবে। লোভ সংবরণ কিন্তু ভীষণ ভাবে জরুরি। একহাঁড়ি রসগোল্লা দেখে লোভ লাগতেই পারে, কিন্তু তার মধ্যে কতটা পরিমাণ আপনি খাবেন তা নিতান্তই আপনার সিদ্ধান্ত।
যাঁদের রক্তে শর্করার পরিমাণ অতিরিক্ত তাঁদেরকে নিয়ম করে ইনসুলিন নিতে হয় রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখার জন্য। কিন্তু নিয়মিত ইনসুলিন নেওয়া শরীরের পক্ষে একেবারেই ভাল নয়। এতে ভিতর থেকে বিভিন্ন অঙ্গ কমজোরি হয়ে পড়ে। লেপটিন, ডোপামিন ঠিক মত কাজ করে না। তাই একটা মাস যদি কঠোর ভাবে চিনি ডায়েট থেকে বাদ দিতে পারেন তাহলে মস্তিষ্কও চিনির আসক্তি থেকে দূরে থাকবে। ডোপামিন ঠিক মত কাজ করবে। ডোপামিন ঠিক মতো কাজ করলে তবেই ঠিক ভাবে লোভ সংবরণ করা যাবে।
তাই মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করলে সেই সময় কোনও একটি ফল খান। খেতে পারেন ডার্ক চকোলেট। এতে কিন্তু মিষ্টির লোভ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। বাড়িতে কোনও মিষ্টি বানালে তাতে গুড় বা মধু ব্যবহার করুন। কিন্তু সেই পরিমাণ যাতে কোনও ভাবে বেশি না হয় সে দিকেও নজর দিন। এছাড়াও রান্নায় যে সব মশলার ব্যবহার বাড়াবেন
গোলমরিচ– গোলমরিচের মধ্যে অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি বৈসিষ্ট্য রয়েছে। সেই সঙ্গে খুব ভাল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। নিয়মিত গোলমরিচ-আদা দেওয়া চা খেলে মিষ্টির প্রতি লোভ কমে। এছাড়াও তপরকারিতে ব্যবহার করুন গোলমরিচ।
ধনে– ধনে কিন্তু ইনসুলিন ক্ষরণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম। ঝনে গুঁড়ো আর জিরে গুঁড়ো মিশিয়ে রান্নায় ব্যবহার করুন।
এলাচ– মিষ্টির প্রতি লোভ কমাতে খুব ভাল কাজ করে এলাচ। দুধের তৈরি কোনও খাবারে এক টুকরো এলাচ ফেলে দিলে ভাল কাজ হয়।
হলুদ– হলুদের প্রচুর গুণ। নিয়মিত হলুদ চা ক্ংবা হলুদ দুধ খেতে পারলে ডায়াবিটিস থাকে নিয়ন্ত্রণে। সেই সঙ্গে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।
জায়ফল– রান্নায় জায়ফল দিলে যেমন সুন্দর গন্ধ পাওয়া যায় তেমনই চিনির লোভ সংবরণে দারুণ ভাবে সাহায্য করে।
দারুচিনি– নিয়মিত দারচিনির গুঁড়ো জলে ভিজিয়ে খেতে পারলে সুগার থাকে নিয়ন্ত্রণে। সেই সঙ্গে ডিটক্সিফিকেশনেও সাহায্য করে। আর তাই দারচিনি কিন্তু রান্নায় ব্যবহার করতে ভুলবেন না।
আরও পড়ুন: Recipe: স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্টের সন্ধানে রয়েছেন? চিয়ার বীজ দূর করবে আপনার সমস্যা